২০২০ সালের মার্চে করোনার জন্য বন্ধ হয়েছিল স্কুলের গেট।২০ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর অবশেষে আগামী কাল থেকে খুলছে রাজ্যের স্কুল। এখনও করোনাভাইরাসের চোখ রাঙানি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি রাজ্যে। তবে ভ্যাকসিন আসাতে অনেকটাই কম সংক্রমণ মাত্রা। তাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো,আবার ফিরতে চলেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পুরনো প্রতিচ্ছবি! সশরীরে স্কুলে যেতে পারবেন সকল ছাত্র-ছাত্রীরা। পড়ুয়া জীবনে অনলাইনের পরিবর্তে ফিরবে, ক্লাসরুম, ব্ল্যাকবোর্ড। তবে স্কুল কলেজ খোলার আগে সব চেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে স্কুলের পরিচ্ছন্নতায়। অবশ্য এর আগেই শিক্ষা দফতর স্পষ্ট করেছে বেশ কিছু করোনার নতুন নিয়মবিধি। সব স্কুলেই চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কোথাও চলছে স্যানিটাইজেশনের কাজ তো কোথাও আবার চলছে শেষ মুহূর্তের মেরামতি। আগের মতো পরিস্থিতি এখন আর নেই। তাই এই করোনা আবহে স্কুল খোলার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হয়েছে প্রতিটি স্কুলকে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেই নতুন গাইডলাইন।
১.স্কুলে ঢোকার আগে পড়ুয়া ও সকল অভিভাবকদের এই নির্দেশ মাথায় রাখতে হবে যে পড়ুয়া, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী নির্বিশেষে সকলের মাস্ক পড়তে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং অন্যান্য কোভিড সংক্রান্ত স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা বাধ্যতামূলক। ক্লাস শুরুর আধঘণ্টা আগে স্কুলে আসতে হবে সকল ছাত্র ছাত্রীদের।
২.নবম ও একাদশ শ্রেণির ক্লাস হবে সকাল ১০ থেকে দুপুর ৩.৩০। আর দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর ক্লাস সকাল ১১ থেকে বিকেল ৪.৩০ পর্যন্ত। আর সকল ছাত্র ছাত্রীর প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসও শুরু হবে ১৬ নভেম্বর থেকেই। স্কুলের করিডর, গেটে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে গোল দাগ কেটে দিতে হবে! স্কুলে আপাতত এই মুহূর্তে অভিভাবকরা প্রবেশ করতে পারবেন না স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও পড়ুয়ারা আঙুলে আংটি, বালা, হার-সহ কোনও গয়না পরতে পারবেন না।
৩. স্কুলে বসার ক্ষেত্রেও পড়ুয়াদের নির্দিষ্ট বিধি মানতে হবে। এক বেঞ্চে দু’জনের বেশি পড়ুয়া বসতে পারবে না। একটি বেঞ্চে দু’জন পড়ুয়া বসলে, তার পরের বেঞ্চে একজন পড়ুয়া বসতে পারবে। এখন আর স্কুলে,দেওয়া হবে না রান্না করা মিড ডে মিল।সেক্ষেত্রে, আগের মতোই সকলের বাড়িতে মিড ডে মিলের সরঞ্জাম দিয়ে দেওয়া হবে। আপাতত স্কুলে কোনও খেলাধুলো বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত যাবে না। স্কুলে রাস্তার কোনো খাবার খাওয়া যাবেনা।
৪. একজন পড়ুয়া অন্য পড়ুয়াকে জল বা বই কিছু দেওয়া-নেওয়া করতে পারবেনা। প্রতিটি পড়ুয়াদের হাতে স্যানিটাইজার স্প্রে করে তবেই ক্লাসে ঢোকানো হবে। থার্মাল গান দিয়ে পড়ুয়াদের শরীরের তাপমাত্র নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। স্কুলের গেটেই শরীরের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা থাকার ব্যবস্থা কর্যে হবে।স্কুলের প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে একজন করে শিক্ষক বা শিক্ষিকা থাকবে। স্কুলের প্রতিটি ঘরে কোভিড সংক্রান্ত স্বাস্থ্য বিধি টাঙিয়ে রাখতে হবে।
৫.স্কুল কর্তৃপক্ষদের উদ্দেশ্যে যে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে গাইডলাইনে যেমন ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সমস্ত স্কুল পরিষ্কারের কাজ শুরু করে দিতে হবে। ১ নভেম্বর থেকে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে হবে শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীদের। প্রয়োজনে পড়ুয়া, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদেরশিক্ষাকর্মীদের স্টাফ স্পেশাল ট্রেনের পাস দেওয়া হবে। আর এই পাস ইস্যু করতে পারবেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান।
৬. এই মুহূর্তে ছাত্র ছাত্রীদের স্বার্থে হস্টেল খোলা যেতে পারে। তবে, সেখানেও কঠোর ভাবে মানতে হবে কোভিড বিধি। প্রতিটি স্কুলের হস্টেলে আইসোলেশন রুম রাখতে হবে। স্কুল শুরুতে সমস্ত ছাত্রছাত্রী একসঙ্গে প্রার্থণা করতে পারবে না। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি ক্লাসে আলাদা আলাদা করে ছাত্রছাত্রীদের প্রার্থণার ব্যবস্থা করতে হবে।
৭.প্রতিটি স্কুল খোলার আগে ভাল করে স্যানিটাইজ করতে হবে। স্কুলের গেটে অভিভাবক থেকে পড়ুয়াদের ভিড় করা চলবে না। স্কুলের বাইরে ৪-৫ ফুট দূরত্বে দাঁড়ানোর জন্য বৃত্ত এঁকে দিতে হবে। স্কুলে ঢোকার সময় সক্কলে ওই বৃত্তগুলিতে দাঁড়াবে। ক্লাস শুরুর আগে প্রত্যেক ছাত্র ছাত্রীকে ১০ মিনিট করোনা সচেতনতার পাঠ দেওয়া হবে।