শ্রেয়া চ্যাটার্জি – করোনা ভাইরাসের আবহে স্কুল কলেজে কবে খুলবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। সেজন্যই এখন অনলাইন এর মাধ্যমেই ক্লাস নেওয়াকেই সুবিধাজনক বলে ভেবে নেওয়া হয়েছে। বিদেশে অনলাইন ক্লাসের রম রামা অনেকদিন আগেই শুরু হয়েছিল কিন্তু ভারতে এমন অনলাইন ক্লাস আগের বছর অব্দি কেউই ভাবতে পারেননি। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে প্রত্যেকে এই অবস্থাকে মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রত্যেকের বাড়িতে এখন একটি-দুটি করে অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিংবা উচ্চবিত্ত ছেলেমেয়েদের হাতে থাকে ল্যাপটপ, স্বভাবতই তাদের অনলাইন ক্লাস করতে কোন সমস্যা হচ্ছে না এমনটাই আশা করা যায়, কিন্তু সমস্যায় পড়েছেন নিম্নবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েরা।
যাদের একমাত্র ভরসা ছিল স্কুলে গিয়ে শিক্ষক শিক্ষিকার সান্নিধ্যে এসে পড়াশোনা করা। শিক্ষক শিক্ষিকা এখন কার্যত বাড়িতে, তারাও স্কুলে আসতে পারছেন না, আর ছাত্র ছাত্রীদের ও বাড়িতে বসে পড়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। নিম্নবিত্ত পরিবারে কি সবার বাড়িতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন বা ল্যাপটপ আছে? উত্তরটা সম্ভবত নাই হবে। তবে তারা কি করে পড়াশোনা করবে? কিন্তু সন্তানকে পড়াশোনা না করে অশিক্ষিত করে রাখবেন, এমনটা কি কোন বাবা-মা তার চোখের সামনে দেখতে পারেন? সন্তান এর পড়াশোনার জন্য অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনতে হবে, তাই শেষ সম্বলটুকুও বেচে দিলেন হিমাচল প্রদেশে অবস্থিত জ্বালামুখী এলাকার গুমার গ্রামের এক দরিদ্র বাবা।
কুলদীপ কুমারের দুই সন্তান তারা যথাক্রমে চতুর্থ এবং দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। স্কুল বন্ধ হওয়ার জন্য তিনি অনেক দিন ধরেই চেষ্টা করছিলেন একটি স্মার্টফোন কেনার টাকা, পয়সা জোগাড় করার, তিনি অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্তু না শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই নিজের শেষ সম্বল গরুটিকে বিক্রি করে দিলেন। পেশায় তিনি একজন গোয়ালা। ওই গরুর দুধ বিক্রি করে তিনি রোজগার করেন আর দিন মজুরিও খাটেন। স্মার্ট ফোন কেনার এত টাকা তিনি কোথায় পাবেন? তাই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে উঠেছেন স্থানীয় প্রশাসন। তারা জানিয়েছেন, তারা পরিবারটির পাশে আছেন এবং তারা যাতে দ্রুত আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেন সেদিকেও তারা নজর রাখবেন।