দিনের পর দিন করোনা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হচ্ছে আমাদের দেশে। প্রায় প্রতিদিন সাড়ে ৩ লাখের দৈনিক সংক্রমণ গ্রাফ উদ্বেগে ফেলছে সকলকে। গোটা দেশের পাশাপাশি বেলাগাম করোনা সংক্রমণ বাংলাতেও। এখন প্রায় প্রতিদিন দৈনিক সংক্রমণ ১৩ হাজারের পাশাপাশি পৌঁছে গেছে। সংক্রমণের পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুহার। করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে ভাইরাসের মিউট্যান্ট স্ট্রেন বেশি পরিমাণে ক্ষতিকারক হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে বেহাল অবস্থা বাংলায়। রাজ্যের একাধিক জায়গায় করোনা রোগীদের মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর সামনে আসছে। কোথাও হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে অক্সিজেনের অভাবেই মৃত্যু হচ্ছে ও আবার কোথাও ডেথ সার্টিফিকেটের অভাবে দীর্ঘক্ষন বাড়িতেই পড়ে থাকতে হচ্ছে মৃতদেহকে। রোগী নিয়ে বা মৃতদেহ নিয়ে পরিবার-পরিজন দৌড়াদৌড়ি করলেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
এই অবস্থায় রাজ্য সরকার তাদের ডেট সার্টিফিকেট নিয়ে একটি সংশোধিত নির্দেশিকা জারি করেছে। তারা জানিয়েছে, “এবার থেকে করোনা রোগীর বাড়িতে মৃত্যু হলে যে চিকিৎসকের অধীনে সরাসরি অথবা ভার্চুয়ালি তার চিকিৎসা চলছিল তাকে ডেথ সার্টিফিকেট দিতে হবে। প্রাইভেট ডাক্তার সার্টিফিকেট দিতে পারে। আবার কোন হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সময় মাঝরাস্তায় মৃত্যু হলে সে ক্ষেত্রে যে হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিল সেখানে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।”
ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্য সরকার করোনা রোগী মৃতদেহ সৎকার করার নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। নতুন নিয়ম মতে এবার থেকে করোনায় মৃত রোগীর শেষকৃত্য করার ক্ষেত্রে কলকাতায় পুরসভা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও গ্রামীণ এলাকায় বিএমএইচ এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে। আসলে কিছুদিন ধরে বারংবার খবরের শিরোনামে আসছিল যে করোনায় মৃত্যুর পর বাড়িতেই ঘন্টার পর ঘন্টা পড়ে রয়েছে মৃতদেহ। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে রাজ্য সরকার তড়িঘড়ি তাদের নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতে বর্তমানে করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যান সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারতজুড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৭৮৬ জন। আক্রান্তের পাশাপাশি লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুহার। গতকাল ভারত রেকর্ড মৃত্যুর সংখ্যা দেখেছে। ২৪ ঘন্টায় দেশজুড়ে মৃত্যু হয়েছে ২৬২৪ জনের।