২৭ বছর পর এমন ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে এসেছে পঙ্গপাল, কী বলছে বিশেষজ্ঞের দল?

শ্রেয়া চ্যাটার্জি- পঙ্গপাল নামটি শুনলেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহজ পাঠের গল্পটির কথা মনে পড়ে। যা প্রত্যেকেরই পড়া। এই পঙ্গপালের দলকে শেষ করতে না পারলে বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে। রবি ঠাকুরের সেই…

Avatar

শ্রেয়া চ্যাটার্জি- পঙ্গপাল নামটি শুনলেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহজ পাঠের গল্পটির কথা মনে পড়ে। যা প্রত্যেকেরই পড়া। এই পঙ্গপালের দলকে শেষ করতে না পারলে বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে। রবি ঠাকুরের সেই লেখাটি এই সময়ের জন্য বিশেষ উপযোগী। একে করোনা ভাইরাস তারপরে আমফান, তারপরে উত্তরাখণ্ডে বিধ্বংসী দাবানল সব মিলিয়ে ভারতের আনাচে-কানাচে নানান রকম দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে হানা দিয়েছে পঙ্গপালের দল। গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে দাপিয়ে বেড়ানোর পর মহারাষ্ট্রের ভিতরে ঢুকেছে। গঙ্গাফড়িং এর একটি প্রজাতি হলো পঙ্গপাল। প্রতি বছরের জুলাই থেকে অক্টোবরে ঠিক ফসল ফলানোর সময় এরা হানা দেয়। তবে প্রতি বছরই এরা দলের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যকই থাকে। কিন্তু এই বছর প্রকৃতির পরিবর্তনের জন্য এই পরিযায়ী পতঙ্গের দল সাংঘাতিক ভাবে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতি করে চলেছে।

২৭ বছর আগে ১৯৯৩ সালে এমন সাংঘাতিক পরিমাণে পঙ্গপালের আক্রমণ হয়েছিল। একমাত্র তাদের উপরে কীটনাশক প্রয়োগ করে তাদেরকে তাড়ানো ছাড়া কোন উপায় থাকেনা। পঙ্গপাল হল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পরিযায়ী পতঙ্গের মধ্যে একটা। সাধারণ গঙ্গাফড়িং এর থেকে এদের স্বভাব এবং চরিত্র খানিকটা আলাদা। বিভিন্ন জায়গা বিশেষে এরা স্বভাবকে পরিবর্তন করতে পারে। দুটি বড় বড় পা, দুটি বড় বড় ডানা নিয়ে এরা মাইলের পর মাইল দল কে দল উড়ে গিয়ে ফসলের ক্ষতি করে। এখনো পর্যন্ত খবরে জানা যাচ্ছে, রাজস্থানে গত তিন মাসে ৫ লক্ষ হেক্টর জমির তারা ক্ষতি করে চলেছে। যার ফলে একশোরও বেশি চাষী ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাস থেকেই পঙ্গপালের আক্রমণ সেই গেছিল গুজরাটের ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে।

একটি সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, ৮০ লক্ষ পঙ্গপাল, যা এক দিনে ৩৫ হাজার মানুষের খাবার খেয়ে নিতে পারে। এর ফলে চাষীরা যথেষ্ট ক্ষতির মুখ দেখবেন বলে এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা দলে দলে আসে, ফসল নষ্ট করে এবং খুব তাড়াতাড়ি আবার নতুনভাবে জন্মগ্রহণ করে, আর বর্ষাকালে এই প্রক্রিয়াটি অনেক তাড়াতাড়ি হয়। একজন নারী পঙ্গপাল ৯৫ – ১৫৮ টি ডিম পাড়ে। এবং ৬ থেকে ১১ দিনের মাথায় ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। প্রত্যেক বর্গমিটারে প্রায় ১০০০টি ডিম দেখা যায়।একেই করোনা ভাইরাসের জন্য দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ধুঁকছে। তারপরে এমন পঙ্গপালের আক্রমণ একেবারে রাতের দুঃস্বপ্নের আকার ধারণ করেছে। এবছর পরিবেশ নানাভাবে খেলা দেখাচ্ছে। যার জন্য অর্থনৈতিক ভাবে মানুষ একেবারে পঙ্গু হয়ে পড়ছে। যাই হচ্ছে, তা এত অতিরিক্ত মাত্রায় হচ্ছে যা মানুষের পক্ষে সামাল দেওয়া যথেষ্ট কষ্টকর হয়ে পড়ছে। পঙ্গপালকে তাড়ানোর জন্য নানান রকম ভাবে যানবাহনের সাহায্যে স্প্রে করা হচ্ছে, তাছাড়া দমকল কর্মীরাও মাঠে নেমে পড়েছেন এই পঙ্গপালকে তাড়াতে।

About Author