দীপাবলির ঠিক আগের দিন কেন্দ্র দেশবাসীকে পেট্রোপণ্যের শুল্ক কমিয়ে এক বড় উপহার দিয়েছে। কেন্দ্রের দেখানো পথে হেঁটেছে একাধিক রাজ্য। পেট্রোপণ্যের ওপর নিজেদের ভ্যাট কমিয়েছে। কিন্তু এই রাজ্যে এখনো পেট্রোল ডিজেলের দাম কমানো হয়নি। রাজ্য সরকারের বর্তমান যা অবস্থান, আর তাতে জ্বালানির উপর শুল্ক যে কমানো হতে পারে, এমনটাও কোনও ইঙ্গিত আপাতত পাওয়া যাচ্ছে না। আর এরই মধ্যে পেট্রোল, ডিজেলের উপর কর কমানোর আবেদন জানালেন কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী লিখেছেন, কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলি সাধারণ মানুষের দুর্দশার কথা ভেবে ইতিমধ্যেই পেট্রোপণ্যের উপর রাজ্যের শুল্ক কমিয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি দিন দিন বেড়ে চলেছে। বাজারে যাতে সাধারণ নাগরিকরা কিছু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারেন, সেই কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেও একাধিকবার বিভিন্ন জায়গায় পেট্রোপণ্যের লাগাতার মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সরব হয়েছেন।
এই দিন এই প্রসঙ্গ টেনে অধীর বাবু মুখ্যমন্ত্রীকে লিখেছেন, “আপনি নিজেও বার বার বিভিন্ন মাধ্যমে পেট্রোল ডিজেলের চড়া দামের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও কংক্রিট সিদ্ধান্ত আপনি নেননি, যাতে পেট্রোপণ্যের দামের উপর কিছুটা লাগাম পড়ানো যায়।” কেন কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলির মতো পশ্চিমবঙ্গেও পেট্রোল ডিজেলের শুল্ক কমানো হচ্ছে না? এদিন চিঠিতে সেই প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস দলনেতা।রাজ্যবাসী সব কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস নেতা।
মুখ্যমন্ত্রীকে বেশ কড়া ভাষায় অধীর চৌধুরী লিখেছেন, আমি আপনাকে অনুরোধ করছি যে, “আপনি দয়া করে এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নিন এবং রাজ্যের শুল্কের উপর কাটছাঁট করুন। এতে পশ্চিমবঙ্গেও পেট্রোলিয়াম জাত পণ্যের উপর দাম আরও কিছুটা কমবে। এর ফলে পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সামগ্রিকভাবে কিছুটা লাগাম পড়বে।” না হলে, শুধুমাত্র নিছক লোক দেখানো এবং ফাঁপা স্লোগান দিলে চলবে না। বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলেও মনে করছেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এ বিষয়ে নিজস্ব ‘সাফাই’ দিয়েছেন। রাজ্য সরকার দাবি জানিয়েছেন, তারা কেন্দ্রের তুলনায় কম শুল্ক পায়, তাই কেন্দ্রের উচিত আগে কর পরিকাঠামো ঠিক করা। কিছুদিন আগে রাজ্য সরকার এক টাকা ছাড়া দিয়েছিল জ্বালানি তেলের উপর। দিন কয়েক আগেই মুখ্যমন্ত্রী সেই কথা আবারও স্মরণ করিয়ে বলেছিলেন, ‘এক টাকা করে দিই প্রতি লিটারে কনসেশন।’ আর তার পর কেন্দ্রকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, বাংলার মতো জনমুখী প্রকল্পের সুবিধা আর কোথাও নেই।”