জ্যোতিষ

বিপদ থেকে রক্ষা করবেন শনিদেব, জেনে নিন অজানা তথ্য

Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – নবগ্রহের একটি অন্যতম গ্রহ হল শনি। শনি গ্রহকে গ্রহরাজও বলা হয়। হিন্দুধর্ম মতে, একজন দেবতা হলেন শনি। তিনি হলেন উগ্রদেবতা। শনি জন্মানোর পর সূর্য দেবতা তার মাতা কে অপমান করেছিল, তাই তিনি সূর্যের উপরেই গ্রহণ লাগিয়ে দিয়েছিলেন।

জ্যোতিষীদের মতে, শনির কুদৃষ্টি অশুভ ফল নিয়ে আসে। শনি হলেন সূর্য ও ছায়াদেবীর পুত্র। পুরানে জানা গিয়েছে, একদিন শনির স্ত্রী ধামিনী সুন্দর বেশভূষা নিয়ে তার কাছে এসে কামতৃপ্তি প্রার্থনা করলেন এবং শনি সেদিকে খেয়াল না করায়, শেষে তিনি স্বামীকে অভিশাপ দেন, “আমার দিকে ফিরে চাইলে না! এরপর যার দিকে ফিরে চাইবে, সেই ভস্ম হয়ে যাবে।” তবে শনি যে সব সময় খারাপ করে তা নয়, সে ভালোর ভালো করে, খারাপের খারাপ করে। ভারতের মহারাষ্ট্রে শনি শিঙ্গাপুর নামের একটি গ্রামের অবস্থান। এই গ্রামের জেলার নাম নাভাসা। শনি শিঙ্গাপুর গ্রামাটির গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণ হচ্ছে এখানে হিন্দু ধর্মের অন্যতম দেবতা শনির একটি মন্দির আছে।

প্রায় ৩০০বছর আগে গ্রামটিতে একবার প্রচন্ড বৃষ্টি হয়। বন্যার পর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পানশালা নদীর তীরে বিশাল আকৃতির কালো রঙের একটি পাথর দেখা যায়। হঠাৎ করে এত বিশাল পাথর দেখে গ্রামের মানুষের কৌতূহল জাগে। অনেকে নদী থেকে স্বাভাবিকভাবে ভেসে ওঠা পাথর ভাবতে লাগলো। এসব ভাবতে না ভাবতেই এক রাখাল তার লাঠি দিয়ে পাথরটা স্পর্শ করাতেই পাথর থেকে অঝোর ধারায় রক্ত বইতে শুরু করল। তারপরে আস্তে আস্তে রাত হল, গোটা গ্রামবাসী যখন ঘুমিয়ে পড়লো তখন সকলকে ঘুমের মধ্যে স্বপ্নাদেশ দিলেন শনি দেবতা।

তিনি জানালেন, সকলের সঙ্গে তিনি আছেন। তিনি জানালেন, এটি কোন সাধারণ মূর্তি নয়। এটি তারই প্রতিমূর্তি। তাকে যদি গ্রামের লোক উপাসনা করেন, তাহলে তাদের সবাইকে তিনি মুক্তি ও নিরাপত্তা দান করবেন। তাছাড়া শনি দেবতা আর একটি কথা বলেছিলেন, গ্রামের কেউ ঘরে কোনরকম দরজা বানাতে পারবে না। তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব শনি দেবতাই নেবেন। ধীরে ধীরে এখানে মন্দির তৈরি হল এবং মন্দিরটি জনপ্রিয়তা অর্জন করল। বর্তমানে এটি ভারতের এমনকি সারা বিশ্বের সর্ববৃহৎ শনি দেবতার মন্দির হিসেবে পরিচিত। ভারতের বিভিন্ন স্থানে শনি দেবতার আরও মন্দির রয়েছে।

শনি মন্দিরের উপরে কোন ছাদ নেই। খোলা আকাশের নীচে বেদী নির্মাণ করে শনি দেবতার পবিত্র পাথরটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। শুধুমাত্র ঘরবাড়ি নয় অফিস, দোকান স্কুলসহ ব্যাংকে সমস্ত জায়গায় কোন দরজা নেই। তারা টাকা-পয়সা, গয়নাগাটি সমস্ত কিছুই উন্মুক্ত রাখেন। তাদের বিশ্বাস শনি দেবতা তাদের পাশে আছেন। কথিত আছে, একবার এক লোক নিজের পরিবার ও সম্পদের নিরাপত্তা বৃদ্ধির অজুহাত তুলে তার ঘরের দরজায় কাঠের কপাট লাগিয়েছিল, পরেরদিন সকালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়।

Related Articles

Back to top button