Categories: নিউজ

দুর্গা পুজোর ভোগ প্রসাদ এর সম্পূর্ণ বিবরণ!

Advertisement

Advertisement

উপোস করে অঞ্জলি দিয়ে প্রসাদ খেতে আমাদের প্রত্যেকেরই ভাল লাগে। সাধারণত অষ্টমীর দিনে বেশিরভাগ মা-বোনেরা ভাইরা, দাদারা দুর্গাপুজো অঞ্জলি দেন। তবে অনেকে আছেন যারা দুর্গাপুজোয় পাঁচটি দিন ই অঞ্জলি দেন। আর অঞ্জলি দেওয়ার পরেই আমাদের প্রত্যেকের একটাই লক্ষ্য থাকে গরম-গরম প্রসাদ খাওয়ার।

মাকে উদ্দেশ্য করে ভোগ প্রসাদ এর আয়োজন। মা বাপের বাড়িতে আসছেন তার যত্নে যেন কোনো ত্রুটি না থাকে তাই তার সামনে সাজিয়ে দেওয়া হয় নানা ধরনের ভোগ।কখনো ভাতের ভোগ, কখনো লুচির ভোগ, কখনো ফলের প্রসাদ।

কোথাও দেবীকে ইলিশের ভোগ নিবেদন করা হয়। কোথাও আবার ক্ষীর সন্দেশ। অষ্টমীতে খাওয়ানো হয় ঘিয়ের লুচি। কখনো আবার পোলাও। পোলাও এর সঙ্গে থাকে আলুর দম, পনির, ধোঁকা। আর ভাতের প্রসাদের সঙ্গে থাকে পাঁচমিশালী তরকারি, পায়েস, সুক্ত। আর লুচির সঙ্গে দেওয়া হয় সুজি,পাঁচ রকম ভাজা যা সন্ধ্যেবেলা পরিবেশন করা হয়। আমরা খাবারের সাথে যে সাধারণ লবণ ব্যবহার করি তার মায়ের ভোগে দেওয়া হয় না, নুন দিতে হলে সৈন্ধব লবণ ব্যবহৃত হয়।

যেদিন কি খিচুড়ি প্রসাদ হিসাবে দেওয়া হয় সেদিন খিচুড়ির সাথে পরিবেশন করা হয় পাঁচ রকম ভাজা, চাটনি পাপড়, মিষ্টি । তবে খিচুড়িতে ডাল ব্যবহৃত হলেও, খিচুড়ি ডাল মসুর ডাল যেহেতু আঁশ পদ হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই, ওই ডালটি বাদ দিয়ে আর যে কোন রকম ডাল ই ব্যবহৃত হয় মায়ের ভোগে।

কলকাতার বিখ্যাত শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গা বৈষ্ণবী হিসেবে পূজিতা হন। শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজোয় অন্নভোগ থাকেনা। গোটা, শুকনো ফল মিষ্টি দেওয়া হয়। খাজা গজা মতিচুর নানা ধরনের মিষ্টি দেবীকে সাজিয়ে দেওয়া হয়।

সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের পুজোতে অষ্টমী এবং নবমী তিথিতে একটি বিশেষ পুজো হয়। একে বলা হয় মাংস ভক্ত বলি। মাটিতে মাসকলাই মাখিয়ে দেবতাদের উদ্দেশ্যে নিবেদন করা হয়। আজও আছে মোট তিনবার অন্নভোগ দেওয়া হয়। প্রথমে সকালে লুচি ভোগ, তারপর সাদা ভোগ ও খিচুড়ি ভোগ। ভোগে থাকে পোলাও, সাদা ভাত, খিচুড়ি চচ্চড়ি, মাছ, চাটনি, পায়েস ইত্যাদি। সন্ধিপুজোয় ল্যাটা মাছ পুড়িয়ে তা ভোগে দেওয়া হয়। দশমীর দিন দেওয়া হয় পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ, কচু শাক।

এমনই সমস্ত বনেদি বাড়ি গুলিতে মাকে ভোগ প্রসাদ দেওয়া হয় । তবে একেকটি বাড়ির একেক রকম নিয়ম থাকে। সাধারণত বনেদি বাড়ির পুজো তে মাকে কাঁসার থালায় প্রসাদ দেওয়া হয়। তবে যে সমস্ত বনেদি বাড়ি গুলিতেই রুপোর থালা বাসন আর বাসনপত্র আছে তাতেও মাকে দেওয়া হয়।

তাছাড়া মঠ-মন্দিরে উপযোগ হয়। কলকাতার কালীঘাট মন্দিরের শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ পূজা কবে শুরু হয়েছিল তা জানা যায় না তবে এই পূজার বিশেষত্ব হলো এখানে দুর্গাপ্রতিমা আনা হয় না, মন্দিরের গর্ভগৃহে স্থাপিত দেবী কালীর মূর্তি চামুণ্ডা রূপে পূজা করা হয়।মহা নবমী তে বলিদান করা হয়। এই দিনে বলিদান মন্দিরের পুরোহিত ছাড়া কাউকে দেখতে দেওয়া হয় না মন্দিরের সব দরজা বন্ধ করে বলি দেওয়া হয় দুর্গাপূজার সময় কালীঘাট মন্দিরের ভোগের ব্যবস্থা করা হয়। নবমীর রাতে পান্তা ভাত দেওয়ার রীতি আছে।

Written By – শ্রেয়া চ্যাটার্জি

Recent Posts