শ্রেয়া চ্যাটার্জি : ২০১৬ সালে মহারাষ্ট্রের খবরের পাতায় পাতায় প্রথম খবর হিসেবে যেটি চোখে পড়েছিল মাত্র ২১ বছরে সবচেয়ে কনিষ্ঠতম আইএএস অফিসার হয়েছেন। তার বাবা পেশায় অটোরিকশা চালক। ভারতে তার র্যাংক হয়েছিল ৩৬১। তার নাম আনসার শাইখ। তিনি তাঁর পরিবারের প্রথম গ্রাজুয়েট। যারা বলেন বড় হওয়ার পর সাথে পরিবারের অনেকটা ভূমিকা থাকে, তাদেরই ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়েছে আনসার শাইখ। তার বাবার রিকশা চালান, থাকেন খরার সম্বলিত মারাথ্বাদার জালনা জেলার শেলগাও গ্রামে। তা পিতা তিনবার বিয়ে করেছেন, এবং নেশাগ্রস্ত। আনসার এর মা যে তার পিতার দ্বিতীয় বউ এবং তাকে চাষবাসের সাহায্য করেন।
আনসার ছোটবেলা থেকে বড় হন নানান রকম খারাপ পরিবেশে, মারধর, অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া, মেয়েদের গায়ে হাত তোলা এইসব দেখে তার ছোটবেলাটা কাটে। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তার বোনের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। তার ভাই পড়াশোনা ছেড়ে দেয় ক্লাস সিক্স পর্যন্ত পড়াশুনা করে এবং কাজ করতে শুরু করে কাকার গ্যারেজে। যারা বলবেন বড় হওয়ার যাওয়ার পেছনে পরিবেশ অনেকখানি দায়ী, তারা হয়তো এই পরিবেশটাকে খুব একটা সুস্থ পরিবেশ বলবেন না বড় হওয়ার জন্য।
আনসার যখন ছোট ছিল তখন আশপাশ থেকে তারা আত্মীয়-পরিজন এরা তার বাড়িতে এসে তার মা-বাবাকে বলতেন যে, তাকে এত পড়াশোনা করার দরকার কি! তিনি তখন মাত্র ক্লাস ফোরে পড়েন। আত্মীয়দের কথা শুনে হোক বা বাড়িতে অভাব-অনটনের জন্য হোক যে কারণেই হোক মা-বাবাও চাইতেন না আনসার আর পড়াশোনা করুক। সেজন্য সে তার শিক্ষককে জানিয়েছিল, যে তারা চায় আনসারের পড়াশোনাটা এখানেই শেষ হয়ে যাক। কিন্তু তার যে গৃহশিক্ষক কিন্তু তার মা-বাবাকে একটাই কথা বলেছিলেন যে, তাদের সন্তান যথেষ্ট উজ্জ্বল ছাত্র তার পিছনে খরচ করলে তাদের কখনো আফসোস করতে হবে না। জীবনের শেষ পর্যন্ত সে তাদের দেখবে।
তারপরে তার মা-বাবা ভাবেন যে তাকে পড়াশোনা করাবেন। তিনি তার বুদ্ধিমত্তার প্রথম প্রমাণ দিলেন তিনি যখন দ্বাদশ শ্রেণীতে বোর্ড পরীক্ষায় ৯১ পার্সেন্ট নম্বর পেলেন। তিনি বললেন যে, তিনি ছোটবেলা থেকে খুব মাংস খেতে ভালোবাসতেন। কিন্তু যে বাড়িতে দুবেলা-দুমুঠো খাবার জোটে না তাদের কাছে মাংস খাওয়াটা বিলাসিতা। তবে তিনি যতদিন বিদ্যালয় পড়েছেন, ততদিন তিনি মিড ডে মিল খেয়েছেন। তবে তিনি যখন পড়াশোনা করেছিলেন তার ভাই তার সারা মাসের উপার্জনের ৬০০০ টাকা আনসার কে দিয়েছিল তার পড়াশোনার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য। ২০১২ সালে তিনি যখন ফরগুষণ কলেজে প্রথম প্রবেশ করেন তখন তার সহায় মাত্র এক জোড়া চটি আর দুটো জোড়া জামা। এই জামা গুলি তিনি একদিন অন্তর একদিন করে পড়তেন। এছাড়া কলেজে পড়াকালীন তাকে একটি সমস্যায় পড়তে হয় তিনি ইংরেজিতে অতটা স্বচ্ছন্দ ছিলেন না বলে, তিনি বেশ হীনমন্যতায় ভুগতেন। তবে হেরে যাওয়ার পাত্র তিনি ছিলেন না। এছাড়াও অভাবের সংসারে তিনি যখন ইউপিসির কোচিং ক্লাস নিতে চেয়েছিলেন তখন সেখানকার ফি ছিল ৭০ হাজার টাকা। তিনি ভেবে পাচ্ছিলেন না কীভাবে তিনি এটি দেবেন। তারপরে তিনি কথা বলেন, তার যাদব স্যারের সঙ্গে। সেই যাদব স্যার তার এই ফি প্রায় অর্ধেক করে দেন। তিনি যখন এই কোচিং করতে ঢোকেন দেখেন বেশিরভাগ ছাত্র ছাত্রী ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং যারা প্রায় দু-তিন বার চেষ্টা করেছেন পরীক্ষায়। কিন্তু তার বয়স মাত্র ১৯ বছর। সচরাচর তিনি সেখানে খুব একটা স্বচ্ছন্দ হতে পারেনি। তাই তিনি পিছনের সিটে বসছেন। কিন্তু যখনই কোর্স টা শুরু হলো আনসার আস্তে আস্তে প্রত্যেকের সঙ্গে মিশে গেল।
এই গল্পটি দেখে একটি সত্য কথা উঠে আসছে দারিদ্রতা আর সাফল্যের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। প্রত্যেকের দরকার কঠোর পরিশ্রম এবং ইচ্ছাশক্তি। এই দুই মিলে মিশে গেলে তবেই সাফল্য আসা সম্ভব। আপনি কোন পরিবার থেকে উঠে আসছেন সেটা এখানে মোটেই গুরুত্বপূর্ণ নয়। আর পরীক্ষায় কত নম্বর পেয়েছেন সেটা কখনোই আপনার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে পারেনা। শুধুমাত্র দরকার দারিদ্রতার ভেতর থেকে এই সমস্ত মানুষগুলোকে টেনে বের করে আনা, যদিও এই বিষয়টি যদিও অতটা সহজ নয়।
Chloe Bailey delivered one of the standout style moments of the week after posting images…
Chase Infiniti delivered one of the standout moments of the 2025 ELLE Women in Hollywood…
Rebecca Gayheart has publicly addressed her family’s latest challenge as her estranged husband, actor Eric…
Samuel L. Jackson has officially joined the cast of Tulsa King, marking one of the…
Apple fans are buzzing after a jaw-dropping leak revealed major upgrades coming to the next…
The Mexican film community is mourning the shocking loss of acclaimed filmmaker Pancho Rodríguez, who…