কৃষকের সন্তানের হাত ধরেই আগস্ট মাসে ভারতের বাজারে আসতে চলেছে করোনার টিকা

Advertisement

Advertisement

করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সহ ভারতও এই মারণ ভাইরাসকে দমন করার প্রতিষেধক আবিস্কারের কাজ শুরু করে। বিভিন্ন দেশের গবেষকগণ মানব শরীরের উপযোগী প্রতিষেধক তৈরির যে গবেষণা শুরু করেন তার মধ্যে ভারতও অন্যতম। এবার ভারতই অনেকটা এগিয়ে গেল করোনার প্রতিষেধক আবিস্কারে। যার ফলে বিশ্ব দরবারে ভারতের মুকুটে যুক্ত হতে চলেছে আরও একটি নতুন পালক। আগামী ১৫ই আগস্ট করোনার প্রতিষেধক সর্বসাধারণের জন্য এবার বাজারে আসতে চলেছে।

Advertisement

চলতি মাসের জুলাইতে করোনার প্রতিষেধক ‘ভারত বায়োটেকের’ তৈরি ‘কোভ্যাক্সিন’ মানবদেহে ট্রায়াল শুরু হচ্ছে। এই ট্রায়াল চলবে মোট দুই দফায়। DCGI এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফ থেকে এই টিকার ট্রায়ালের সবুজ সংকেত মিলেছে। ‘ভারত বায়োটেক’ হায়দরাবাদের ওষুধ প্রস্তুকারক সংস্থাকে যৌথভাবে এই কাজে সাহায্য করে ICMR। এরপর করোনার টিকা আবিস্কার হওয়ার কথা ঘোষণা করে হায়দরাবাদের ওষুধ প্রস্তুকারক সংস্থা ‘ভারত বায়োটেক’-এর চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডঃ কৃষ্ণ ইল্লা।

Advertisement

যার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল হিসেবে গোটা দেশ এবার মারণ করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক পেতে চলেছে, এছাড়া বিশ্ব দরবারে ভারতের মুকুটে জুড়তে চলেছে একটি পালক তিনি হলেন সে ডঃ কৃষ্ণ ইল্লা। কিন্তু তার পরিচয় কী? তামিলনাড়ুর তিরুথানির বাসিন্দা এক মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারের সন্তান ডঃ কৃষ্ণ ইল্লা। আর পাঁচ জন ছেলেমেয়ের মতোই তিনিও ভেবেছিলেন পড়াশোনা শেষ করে বাবার কাজে সহযোগীতা করবেন। হবেন কৃষিবিদ। কিন্তু ভাগ্যের চাকা অন্যদিকে ঘুরল।

Advertisement

কৃষক বাবার অনটনের সংসারেও নিজের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়ে আজ তিনি পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতে পেরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সংসারের অভাবের চাপে কলেজ শেষ করে তিনি একটি ওষুধ তৈরির সংস্থায় যোগ দেন। সেখানে তিনি কৃষিবিষয়ক জিনিস দেখভাল করতেন। এরপর সেই সংস্থায় কাজ করতে করতে তিনি স্কলারশিপ পান। এরপর উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য বিদেশ যান। আমেরিকায় হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি প্রথমে মাস্টার্স করেন। এরপর ইউনিভার্সিটি অফ উইসকন-ম্যাডিসন থেকে পিএচইডি পড়া শেষ করেন।

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষায় ডিগ্রি অর্জন করার পর ১৯৯৫ সালে নিজের দেশে তিনি ফিরে আসেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, নিজের দেশে ফিরে আসার ইচ্ছে তাঁর ছিল না। তিনি তাঁর মায়ের ইচ্ছেতে দেশে ফিরে নতুন কিছু আবিস্কারে মত্ত হয়ে পড়েন। এরপর হেপাটাইটিস ভাইরাসের টিকার তৈরির কাজ শুরু করতে হায়দ্রাবাদে একটি গবেষণাগার তৈরি করেন। সেখান থেকেই শুরু হয় ভারত বায়োটেকের পথ চলা। হেপাটাইটিস ভাইরাসের টিকা আবিস্কারের পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি স্যার এপিজে আবদুল কালামের হাত ধরে ১৯৯৯ সালে ভারতের বাজারে তা আত্মপ্রকাশ করে। এই রোগের টিকা বিশ্বের আরও ৬৫ টি দেশে পাঠানো হয়।

এরপর ভারত বায়োটেক একে একে পোলিও, র্যাবিস,জিকা,এইচ১এন১,রোটা, চিকুনগুনিয়ার মতো ভাইরাস ঘটিত রোগের টিকা আবিস্কারে সাফল্য অর্জন করে। এরপর সার্স-কোভ-২ স্ট্রেইন পুনের এনআইভি থেকে পাঠানো হয় ভারত বায়োটেকে। মানুষের দেহে প্রয়োগ করার আগে তার একটি পরীক্ষা হয়। এরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রকের DCGI-এর কাছে পাঠানো হলে সবুজ সংকেত মেলে। এভাবেই একের পর এক বাজিমাতের পর ফের ভারতের কাছে আরও এক গর্বের বিষয়ের পাতায় জায়গা করে নিতে চলেছে ভারত বায়োটেক।

Recent Posts