পোস্ট অফিস ফ্র্যাঞ্চাইজি দিচ্ছে, অষ্টম পাস আবেদন করতে পারবেন, লাখ টাকা কমিশন
যুব প্রজন্মকে দিশা দেখাচ্ছে ভারতীয় ডাকঘর
এই মুহূর্তে সারা ভারত জুড়ে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ডাকঘর রয়েছে। এত বিপুলসংখ্যক ডাকঘর থাকতেও কিন্তু ভারতে ডাকঘরের চাহিদা কোন অংশেই কমেনি, বরং বলতে গেলে প্রতিদিন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে ডাকঘরের চাহিদা। মানি ট্রান্সফার থেকে শুরু করে চিঠি পাঠানো, বিভিন্ন ধরনের সেভিংস স্কিমে বিনিয়োগ থেকে শুরু করে, পেনশন গ্রহণ, ডাকঘর ভারতের প্রতিটি মানুষের জীবনের সাথে অত্যন্ত গভীরভাবে জড়িয়ে রয়েছে। তাই আপনিও যদি ভারতীয় ডাকঘরের সাথে যুক্ত হয়ে মোটা টাকা রোজগারের স্বপ্ন দেখে থাকেন তাহলে আপনার জন্য রয়েছে একটি সুবর্ণ সুযোগ। ডাকঘরের এই ক্রমবর্ধমান চাহিদাকে মাথায় রেখেই ভারতীয় ডাক বিভাগ ভারতের সাধারণ মানুষের জন্য নিয়ে এসেছে একটি নতুন প্রকল্প যার মাধ্যমে আপনিও ডাকঘরের ফ্রাঞ্চাইজি গ্রহণ করে নিজের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যদি আপনার পড়াশোনার দৌড় খুব একটা বেশি না থাকে, তাহলেও কিন্তু আপনি এই ফ্রাঞ্চাইজি গ্রহণের সুযোগ পাবেন। ডাক বিভাগের সাথে যুক্ত হয়ে সেখান থেকে প্রাপ্ত কমিশনের ভিত্তিতে একটা মোটা টাকা রোজগার করতে পারবেন আপনি। তাহলে চলুন এই পুরো পদ্ধতির ব্যাপারে সহজে জেনে নেওয়া যাক।
বিগত কয়েক বছর থেকেই ভারতীয় ডাক বিভাগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল পুরো ভারতে। তাই সেই সময় থেকেই ভারতীয় ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে একটি নতুন ফ্রাঞ্চাইজি মডেল নিয়ে আসা হয়। আপনাকে যদি ভারতীয় ডাক বিভাগকে ব্যবহার করে একটা মোটা টাকা রোজগার করতে হয় তাহলে আপনাকে ভারতীয় ডাক বিভাগের এই ফ্রাঞ্চাইজি মডেলকে ব্যবহার করতে হবে। ইন্ডিভিজুয়াল থেকে শুরু করে ইনস্টিটিউশন এবং অর্গানাইজেশন এই বিশেষ ফ্রাঞ্চাইজি গ্রহণ করতে পারবে। এছাড়াও, নতুন টাউনশিপ, নতুন শহর, স্পেশাল ইকোনমিক জোন, নতুন ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেন্টার, কলেজ, পলিটেকনিক কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রফেশনাল কলেজসহ সমস্ত প্রতিষ্ঠানও এই ডাকঘরের ফ্রাঞ্চাইজি গ্রহণ করতে পারেন। ডাকঘরের এই বিশেষ ফ্রাঞ্চাইজি গ্রহণ করতে হলে আপনাকে একটি বিশেষ ফরম পূরণ করতে হবে। তারপরে হবে যোগ্য ব্যক্তিদের নির্বাচন। নির্বাচনের পদ্ধতি শেষ হয়ে গেলে সেই নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের ভারতীয় ডাক বিভাগের সঙ্গে একটি মউ স্বাক্ষর করতে হবে। যে ব্যক্তি নিজের নামে এই ফ্রাঞ্চাইজি গ্রহণ করবেন, তার নূন্যতম বয়স হতে হবে ১৮ বছর এবং তার শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে নূন্যতম অষ্টম শ্রেণি পাস।
মূলত স্ট্যাম্প, স্টেশনারি দ্রব্যাদি বিক্রি, রেজিস্টার্ড আর্টিকেল, স্পিড পোস্ট আর্টিকেল, মানি অর্ডার বুকিং – এর কাজ হবে এই ডাক বিভাগের ফ্রাঞ্চাইজির মাধ্যমে। এছাড়াও পোস্টাল লাইফ ইনসিওরেন্স(PLI)-র ক্ষেত্রে এজেন্টের মত কাজ করবে এই ধরনের ডাকঘর ফ্রাঞ্চাইজি। এছাড়াও ডাক বিভাগের সঙ্গে জড়িত সমস্ত ধরনের আফটার সেল সার্ভিসের কাজ করা যাবে এই ফ্রাঞ্চাইজি ব্যবহার করে। প্রিমিয়াম কালেকশন থেকে শুরু করে PLI এর সমস্ত সমস্যার সমাধান করা যাবে এই ফ্রাঞ্চাইজি থেকে। এই ফ্রাঞ্চাইজি গ্রহণ করতে হলে আপনাকে আপনার শহরের সবথেকে বড় পোস্ট অফিসে গিয়ে সেখানে ফ্রাঞ্চাইজি কাউন্টারে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানে একটি ফরম পূরণ করে আপনি নিজের ফ্রাঞ্চাইজির জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারেন। এরপর আপনি অনলাইনের মাধ্যমে নিজের অ্যাকাউন্ট চালাতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনাকে ইন্ডিয়া পোস্ট এর হোম পেজে রেজিস্টার অপশনে গিয়ে নিজেকে রেজিস্টার করাতে হবে।
কিন্তু এবার সব থেকে বড় প্রশ্ন হলো কিভাবে এই ফ্রাঞ্চাইজি ব্যবহার করে আপনি টাকা কামাতে পারবেন? আপনাদের জানিয়ে রাখি, আপনি যখন ডাকঘরের সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করবেন, সেখানেই এই ফ্রাঞ্চাইজির সঙ্গে জড়িত সমস্ত তথ্য আপনি জানতে পারবেন পরিষ্কারভাবে। আপনার ফ্রাঞ্চাইজি থেকে ভারতীয় ডাক বিভাগের যে রকম লাভ হবে, সেই অনুপাতেই আপনাকে কমিশন দেওয়া হবে ভারতীয় ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে। যেমন ধরুন, কেউ আপনার ফ্রাঞ্চাইজি ব্যবহার করে সেখান থেকে একটি রেজিস্টার্ড আর্টিকেল বুকিং করেছেন। তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি ৩ টাকা কমিশন পাবেন। সেরকমভাবেই, স্পিড পোস্ট আর্টিকেল বুকিং এর জন্য ৫ টাকা, ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত মানি অর্ডার বুকিং এর উপর ৩.৫০ টাকা, ২০০ টাকার থেকে বেশি মূল্যের মানি অর্ডার বুকিং এর উপরে ৫ টাকা, ১ হাজারের বেশি আর্টিকেল প্রতিমাসে বুকিং হলে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ কমিশন, পোস্টেজ স্ট্যাম্প, পোস্টাল স্টেশনারি এবং মানি অর্ডার ফর্ম বিক্রির উপরে ৫ শতাংশ কমিশন, রেভিনিউ স্ট্যাম্প, সেন্ট্রাল রিক্রুটমেন্টের মত স্ট্যাম্প বিক্রির উপরে অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ কমিশন আপনারা পাবেন।