মায়ের পায়ে জবা হয়ে
ওঠ না ফুটে মন…
শ্যামা বা কালীঠাকুরকে নিয়ে এরকম অনেক গান প্রচলিত রয়েছে। তিনি বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির আদি কারন, তিনি আদ্যাশক্তি। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কোলকাতা অনেক কালী মন্দির আছে যেগুলি বছর বছর ধরে পুজো হয়ে আসছে।যে কালীদেবীর মাহাত্ম্য কথা লোকমুখে প্রচলিত হয়ে আছে আজও।সেইরকম কয়েকটি কালী মন্দির হল-
1) কালীঘাটের দেবীকালিকা- সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ দিকে কালীঘাট মন্দিরের গুরুত্ব বাড়ে। কালীঘাটে দেবীর চারটি আঙ্গুল পড়েছিল ।বলা হয় কিংবদন্তি কাশীর মতো পুন্যক্ষেত্র হলো কালীঘাট। এই মন্দির গড়ে ওঠার পেছনে অনেক ইতিহাস রয়েছে বলা হয়ে থাকে যশোহরের রাজা প্রতাপাদিত্যের খুল্লতাত শ্রী বসন্ত রায় একটি ছোট মন্দির নির্মাণ করেছিলেন সেই সময় দেবীর সেবায়েত ছিলেন ভুবনেশ্বর ব্রহ্মচারী তিনি ছিলেন অপুত্রক তার দৌহিত্র হালদাররাই বর্তমানে কালীঘাটের বিখ্যাত বংশ। এই কালীঘাটের মূল পুজো আটটি। এখানের অভিনবত্ব এটাই যে কালীপুজোর রাতে দেবীকে লক্ষ্মী রূপে এখানে পুজো করা হয়
2) দক্ষিণেশ্বরের মা ভবতারিণী- এই মন্দির সম্পর্কে কথিত আছে একবার কাশী যাত্রার আগেরদিন ভোররাতে জানবাজারের রানী মা স্বপ্নে দেখা পেয়েছিলেন মা জগদম্বার- “কাশী যাওয়ার দরকার নেই। গঙ্গাতীরে একটি নয়নাভিরাম মন্দিরে আমার মূর্তি প্রতিষ্ঠা কর…” আর এই স্বপ্নাদেশ পেয়ে গঙ্গার পূর্ববর্তী তীরে মন্দির স্থাপন করা হয় । 1855 খ্রিস্টাব্দে 31মে স্নানযাত্রার দিন কলকাতা থেকে 6 কিলোমিটার দূরে ভাগীরথীর তীরে গড়ে তুলেছিলেন এই মন্দির।
3) ঠনঠনিয়ার সিদ্ধেশ্বরী কালী – বহু যুগ আগে এই মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল । উদনারায়ন ব্রহ্মচারী নামে এক তান্ত্রিক আনুমানিক 1703 খ্রিস্টাব্দে মাটি দিয়ে সিদ্ধেশ্বরী রূপের কালীমূর্তি গড়েন। 1806 খ্রিস্টাব্দে সেই জঙ্গলাকীর্ণ জায়গায় শংকর ঘোষ নামে এক ধনী ব্যক্তি কালীমন্দিরে আটচালা মন্দির নির্মাণ করে এবং পুজোর ভাড়ও নিজের কাঁধে নিয়ে নেন। এখানে আদি কালী ছাড়াও জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিনী ও মাঘ মাসে রটন্তী কালী পূজা হয়।
4) সিদ্ধেশ্বরী বামা কালী- আজকের বেহালা অতীতে সুন্দরবনের অংশ ছিল কথিত আছে লক্ষিন্দরের স্ত্রী বেহুলার বা দেবী বহুলার নাম থেকে জায়গার নাম হয় বেহালা। বহুলা দেবী কালীর আরেক রূপ। এই জায়গার জাগ্রত কালিবাড়ি হলো সিদ্ধেশ্বরী মন্দির আড়াইশো বছর আগে বরিশায় স্থাপিত হয় এই মন্দির।
5) কাশিপুর আদি চিত্তেশ্বরী দুর্গা – এই চিত্রেশ্বর রায় ছিলেন একজন ডাকাত ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে তিনি ষোড়শোপচারে দেবীর পুজো করতেন কথিত রয়েছে প্রায় 500 বছর আগে এই দেবীর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আমার দেবীর নাম এই জায়গাটির নাম হয়ে উঠেছে চিতপুর।এই দেবী নিমকাঠ দিয়ে তৈরি। জমিদার গোবিন্দরাম মিত্র মন্দিরটি পুনঃনির্মান করেছিলেন।
Written by – দেবস্মিতা ধর