পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলায় মূলাজোড় কালীবাড়ি। এই কালী বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কলকাতার পাথুরিয়াঘাটার গোপীমোহন ঠাকুর। কথিত আছে, প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের ভাই গোপিনাথ ঠাকুর এর মেয়ে ব্রহ্মময়ীর আট বছর বয়সে বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ের দিন পালকি করে আহিরীটোলা গঙ্গার ঘাটে ব্রহ্মময়ী কে নিয়ে যাওয়া হয়, ওইখানেই ব্রহ্মময়ী জলে তলিয়ে যান। এরপরে স্বপ্নাদেশ পান গোপীমোহন। দেবী কালী তাকে স্বপ্ন দিয়ে বলেন তিনি ব্রহ্মময়ী। মূলাজোড় ঘাটে যেখানে ব্রহ্মময়ী শরীর পাওয়া যাবে সেখানেই যেন গোপীমোহন মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এরপরে গোপীমোহন আজ যেখানে মূলাজোড় কালীবাড়ি সেখানে আসেন এবং মেয়ের শরীর খুঁজে পান এবং সেখানেই তিনি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এখানেই তিনি মাটিতে গাথা অবস্থায় একটি কষ্টিপাথরের দেবীমূর্তি পান। 1805 সালে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
অনেকদিন আগে এই মূলাজোড় জায়গাটি ছিল ডাকাতদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র। অনেকেই মনে করেন ওই দেবী তাদেরই আরাধ্য ছিলেন। কোন এক অজ্ঞাত কারণে দেবীর পুজো বন্ধ হয়ে যায়। কথিত আছে, রামপ্রসাদ যখন ভাগীরথী দিয়ে গান করতে করতে যাচ্ছিলেন, তখন এখানকার দেবীর মুখ পশ্চিম দিকে ঘুরে যায়।
আরো একটা কথা শোনা যায় এই মন্দিরে তারাপীঠে সচল শিব বামাক্ষ্যাপা স্বয়ং এসে নিজে হাতে দেবীর পূজা করতেন এই জাগ্রত দেবী মন্দির আজও জমজমাট ভক্ত সমাগম এ। গোপীমোহন গানের খুব ভক্ত ছিলেন। শোনা যায় কালী মির্জা সেকালের বিখ্যাত গায়ক ছিলেন। এখানে এসে দেবীকে গান শোনাতেন। গোপীমোহন নিজেও দেবীর উদ্দেশ্যে গান রচনা করেছিলেন। এখানে মাতৃমন্দির এর পাশাপাশি রয়েছে দ্বাদশ শিব মন্দির।
Written by – শ্রেয়া চ্যাটার্জী