পুজোর মুখে নিম্নচাপ? নবমী থেকেই কি পাল্টাবে আবহাওয়া? কী জানালো আবহাওয়া দপ্তর
অষ্টমীর পর থেকে কিন্তু আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গে
মহালয়া হয়ে গেছে মানেই বলতে গেলে পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। সূচনা হয়ে গিয়েছে দেবী পক্ষের। বলতে গেলে বাংলায় শুরু হয়ে গেছে পুজো। মহালয়ার আগেই ইতিমধ্যেই উদ্বোধন হয়ে গেছে শহরের বেশ কিছু বড় পুজোর। সপ্তমী অষ্টমীর ভিড় এড়াতে এখন মহালয়া থেকেই অনেকে ঠাকুর দেখতে শুরু করেছেন। উত্তরে শ্রীভূমি থেকে শুরু করে দক্ষিণে চেতলা, কলকাতার বিভিন্ন বড় বড় পুজো গুলোতে দেখা যাচ্ছে ভিড়-চিত্র। তবে কাজের ছুটি না পাওয়ায় এখনো অনেকে ঠাকুর দেখা হয়তো শুরু করেননি। ষষ্ঠী থেকে অনেকে হয়তো ঠাকুর দেখা শুরু করবেন। কিন্তু, এই প্যান্ডেল হপিং এর সাথেই আরও একটা বিষয় জড়িত রয়েছে এবং সেটা হলো আবহাওয়া। দুর্গাপুজোর প্রধান ৬টা দিন অর্থাৎ পঞ্চমী থেকে দশমী, আকাশের অবস্থা কেমন থাকবে, সেটা আগে থেকে জেনে নেওয়া দরকার। যদি আবহাওয়ার আপডেট আগে থেকে জানা থাকে তাহলে আর রাস্তায় বেরিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে হবে না বাঙালিকে।
তবে আপনাদের জানিয়ে রাখি, এই পুজোর সময় এর আবহাওয়া নিয়ে কিন্তু খুব একটা আশার খবর শোনায়নি আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। গত বছর পুজোর সময় বৃষ্টি না হওয়ার কারণে পুজোটা অনেকেরই বেশ ভালো কেটেছিল। কিন্তু এবছর পূজোতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পুজোর মুখে ঘনাচ্ছে নিম্নচাপের আশঙ্কা। ফলে পুজোর মাঝখানে হঠাৎ করে এই ভোল বদলে যেতে পারে আবহাওয়ার। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, পঞ্চমী থেকে অষ্টমী পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করতে কোন অসুবিধা নেই কারণ এই সময়ে আবহাওয়া বেশ ভালো থাকবে। পশ্চিমের জেলাগুলিতে সকাল সন্ধ্যার দিকে থাকবে হালকা শীতের অনুভূতি। উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় ভালো আবহাওয়া থাকবে। কিন্তু, যারা নবমি এবং দশমিতে প্যান্ডেল হপিং করার পরিকল্পনা করেছেন, তাদের কিন্তু প্ল্যান পরিবর্তন করতে হবে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, নবমী এবং দশমীতে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হবার সম্ভাবনা প্রবল। বিশেষত কলকাতায় বৃষ্টি হবে। কোথাও কোথাও আংশিক মেঘলা আকাশ এবং হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও কলকাতায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা সম্পূর্ণভাবে রয়েছে। তার সাথেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলাতেও ভালো বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং কালিম্পং আলিপুরদুয়ার কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এখন উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি হলেও পুজোর সময়ে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। ধীরে ধীরে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমবে এবং উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া শুষ্ক হবে। সোম এবং মঙ্গলবার শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করবে উত্তরবঙ্গে এবং তারপর আর আবহাওয়ার পরিবর্তন হওয়ার তেমন কোনো বিশেষ সম্ভাবনা নেই। উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকা ছাড়া আবহাওয়া পরিবর্তনের বিশেষ কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে দক্ষিণবঙ্গের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কিন্তু আলাদা। দক্ষিণবঙ্গে আপাতত মেঘমুক্ত পরিষ্কার আকাশ থাকলেও দু এক জায়গায় আংশিক মেঘলা আকাশ থাকতে পারে। তবে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কিছুটা কম থাকার কারণে আদ্রতা জনিত অস্বস্তি কিছুটা কম থাকবে। জলীয়বাষ্পের পরিমাণ ক্রমশ কমতে থাকবে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায়। এর ফলে আগামী কয়েক দিনে দক্ষিণবঙ্গের শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করবে।
কলকাতায় মেঘমুক্ত পরিষ্কার আকাশের সম্ভাবনা রয়েছে পুজোর প্রথম কয়েকটা দিন। আদ্রতা জনিত অস্বস্তি খুব একটা বেশি থাকবে না। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ক্রমশ কমবে এবং আগামী কয়েক দিন থাকবে শুষ্ক আবহাওয়া। আগামী দু’দিন আদ্রতা জড়িত অস্বস্তি থাকলেও সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে সেটা কমে যাওয়ায় পুজোর সময় খুব একটা বেশি আদ্র আবহাওয়া থাকবে না। আজ সকালে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.৫° সেলসিয়াস যা স্বাভাবিকের তুলনায় এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। অন্যদিকে গতকাল বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ ৫৭ থেকে ৯২ শতাংশ এবং আগামী ২৪ ঘন্টায় কলকাতা শহরে তাপমাত্রা মোটামুটি একই রকম থাকবে।