নতুন রূপে আবার ফিরলেন ভুবন বাদ্যকর, এখন কেমন কাটছে এই ভাইরাল কাঁচা বাদাম কাকুর জীবন?
আবারো কি জীবনটা সঠিক পথে ফিরে এসেছে তার
গত দেড় বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এক বাদাম বিক্রেতা, নাম ভুবন বাদ্যকর। বীরভূমের প্রত্যন্ত গ্রামে কাঁচা বাদাম বিক্রেতা ভুবনবাবু স্বরচিত গান গেয়ে বাদাম ফেরি করতেন রাস্তায় ঘুরে। কিন্তু ইউটিউবারদের দৌলতে তাঁর কন্ঠে ‘কাঁচা বাদাম’ গানটি বিখ্যাত হয়ে উঠে। এই গানটিতে ভুবনবাবুর স্বকণ্ঠের পাশাপাশি অঞ্জলি অরোরার নাচের ভিডিওও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
ভুবনবাবু হঠাৎ করেই সারা দেশের মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন। তাঁকে নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা। কেউ তাঁকে ‘কাঁচা বাদাম গায়ক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন, কেউ তাঁকে ‘সোশ্যাল মিডিয়া সেনসেশন’ বলে ডাকেন। ভুবনবাবু নিজেও এই সাফল্যের সাথে মানিয়ে নিতে পারেননি। তিনি নতুন বাড়ি বানান, গাড়ি কেনেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হন। কিন্তু শোনা যায় কিছুই ঠিক কাজ করেনা। বরং জনপ্রিয়তার পরেই শত্রুর পরিমাণ বেড়ে যায় তার।
তার এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে এক বেদনা। ভুবনবাবু জানিয়েছিলেন, তাঁর গান নিয়ে অনেকেই ব্যবসা করেছেন। কিন্তু ইউটিউবের কপিরাইট নিয়মের অধীনে তিনি কিন্তু টাকা দাবি করতে পারছেন না। এই ধরনের সংগীত শিল্পীদের ইউটিউব সাধারণত কপিরাইট নিয়মের অধীনে বাঁধে না। এর ফলে সবাই তার গান নিয়ে ব্যবসা করে গেলেও, তার নিজের আয় হয়ে পড়েছে অনেকটা সীমিত। ফলে কিছুটা আক্ষেপ নিয়ে এই জীবন কাটছে তার।
অন্যদিকে আবার শোনা যাচ্ছে, তিনি একেবারে খারাপ অবস্থায় নেই। সম্প্রতি একটি নতুন গানের ভিডিওর মাধ্যমে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করেছেন তিনি। ডিসেম্বর মাসে একাধিক শোতে গান গাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছেন তিনি। যেখানে যদিও তিনি ভক্তিমূলক গান গাইবেন। শোনা যাচ্ছে, তার ছেলে নাকি সম্প্রতি পুলিশে চাকরি পেয়েছে। আর এখন ছেলেকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন ভুবন বাধ্যকর। চাকরির সুবিধার জন্য দুজনে এখন পুলিশ স্টেশনের সামনে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। যদি খবর গুলো সত্যি হয়, তাহলে বলা যেতে পারে ভুবনবাবুর জীবন কিছুটা হলেও উন্নতি করেছে।
তিনি ব্যক্তিগত জীবনে স্বপ্ন দেখতে ভালবাসেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া তাকে তার স্বপ্ন থেকে বঞ্চিত করেছে। তিনি এখন শুধুমাত্র ইউটিউবারের কাছে কন্টেন্ট। ভুবনবাবু শুধু একা নন। রাণু মন্ডল, বাপ্পি লাহিড়ি প্রমুখ তারকারাও এখন সোশ্যাল মিডিয়ার কাছে শুধুমাত্র একটা কনটেন্ট। সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবনকে অনেকভাবেই প্রভাবিত করেছে। কিন্তু এর নেতিবাচক দিকও রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া অনেক মানুষকে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু সেই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে অনেক বঞ্চনা। আমাদের উচিত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা। আমরা যেন কারো স্বপ্নকে নষ্ট না করি।