ব্যাংকে চেক জমা দেওয়ার সময় কি ছোটখাটো ভুল হয়? একটুখানি অসতর্কতাই বড় আর্থিক বিপদের কারণ হতে পারে। একবার চেক বাউন্স হলে শুধু আর্থিক জরিমানা নয়, হতে পারে জেলও। তাই চেক লেখার আগে ও সই করার সময় কিছু নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।
কেন এত সতর্কতা চেক লেখার সময়?
বর্তমানে চেক একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থ লেনদেনের মাধ্যম। তবে এই মাধ্যমটি সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব সম্পূর্ণ গ্রাহকের উপরই বর্তায়। সামান্য ভুল—যেমন ভুল কালি ব্যবহার, খালি ফাঁকা জায়গা রেখে দেওয়া, অথবা ব্যাঙ্কে থাকা সইয়ের সঙ্গে মেলেনি এমন সই—চেক বাতিল হওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে।
কী কী ভুল থেকে দূরে থাকবেন?
কালির রং: শুধু নীল বা কালো কালি ব্যবহার করাই সঠিক। অন্য কোনও রং ব্যবহার করলে চেক বাতিল হতে পারে।
সঠিকভাবে নাম ও পরিমাণ লেখা: যাঁকে টাকা পাঠাচ্ছেন, তাঁর নাম পুরোপুরি স্পষ্ট করে লিখুন। সংখ্যায় ও শব্দে উভয়ভাবে পরিমাণ লেখা উচিত।
খালি জায়গা ফাঁকা না রাখা: চেকের কোনও অংশ ফাঁকা রাখলে তা জালিয়াতির সুযোগ করে দিতে পারে।
A/C Payee ও Not Negotiable লেখা: এগুলি লেখার মাধ্যমে চেকটি নিরাপদ রাখা যায়, অন্য কারও হাতে গেলেও তা তোলা যাবে না।
সইয়ের মিল: ব্যাঙ্কে যে সই রেকর্ডে আছে, ঠিক সেই সই না হলে চেক ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
চেক বাউন্স হলে কী হয়?
চেক বাউন্স মানেই শুধু লেনদেন বাতিল নয়। এর জন্য লাগতে পারে ₹150 থেকে ₹750 পর্যন্ত জরিমানা। আরও ভয়াবহ ব্যাপার হল, Negotiable Instruments Act-এর ১৩৮ নম্বর ধারায় এই অপরাধে ২ বছরের কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে, এবং চেকের দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা দিতে হতে পারে।
চেকের মেয়াদ কতদিন?
চেক ইস্যু করার ৩ মাসের মধ্যে তা জমা না দিলে চেকটি স্টেল ডেটেড হয়ে যায় অর্থাৎ সেটি আর বৈধ থাকে না।
পাঠকদের জন্য প্রাসঙ্গিক ৫টি প্রশ্ন ও উত্তর:
১. চেক লেখার সময় নীল বা কালো ছাড়া অন্য কালি ব্যবহার করা যায় কি?
না, শুধুমাত্র নীল বা কালো কালি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
২. চেক বাউন্স হলে কী ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে?
দুই বছর পর্যন্ত জেল ও দ্বিগুণ টাকা জরিমানা হতে পারে।
৩. চেকের মেয়াদ কতদিন থাকে?
চেক ইস্যুর তারিখ থেকে ৩ মাস পর্যন্ত বৈধ থাকে।
৪. A/C Payee লেখার সুবিধা কী?
চেকের টাকা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তির অ্যাকাউন্টেই যাবে, নিরাপত্তা বাড়ে।
৫. ব্যাঙ্কের সঙ্গে সই না মিললে কী হবে?
সই না মিললে ব্যাঙ্ক চেক প্রত্যাখ্যান করতে পারে।














