শ্রেয়া চ্যাটার্জি : কিছুদিন আগেও চেন্নাইয়ের ভান্দলুর চিড়িয়াখানা ঠিক পাশেই উত্তেরিলেক প্রচুর যাযাবর পাখি দেশ-বিদেশ থেকে এসে ভিড় জমাত। যা আমাদের চোখের সামনে একটা বর্ণময় ছবি তৈরি করত। কিছুদিনের জন্য তারা এই লেকটিকে নিজেদের ঘর মনে করে থাকতো। কিন্তু গত কিছু শীতে আস্তে আস্তে এই পাখিদের নাম সংখ্যা ক্রমশ কমতে থাকে। ২০১৬ সালে যে সাইক্লোন ভার্দয় হল, এছাড়াও গরমের সময় প্রচন্ড খরার জন্য লেকের জল প্রায় শুকিয়ে গিয়েছিল। ২০১৮ সালে প্রচন্ড খরা লেকের জল প্রায় শুকিয়ে যায় এবং যার ফলে এখানকার চিড়িয়াখানা এবং এই লেকটি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যখন চিড়িয়াখানা তরফ থেকে তাদের প্রশাসন চেষ্টা করছিল যে কিভাবে বাইরে থেকে জল আনা যায় পশুদের জন্য, তখন দেখা গিয়েছিল পাশের উত্তেরি লেকটি পুরো শুকনো হয়ে গেছে। যার ফলে এই লেকে কোন পাখি আসে না পাখিরা অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
কিন্তু এখানকার আই. এফ. এস অফিসার সুধা রমন মনে করেন, যেখানে ইচ্ছা আছে সেখানে নিশ্চয়ই অন্যত্র একটা পথ পাওয়া যাবে। ডিরেক্টর যোগেশ সিং এর তত্ত্বাবধানে তিনি এখানে কাজ করা শুরু করেন।
ডিসেম্বর মাসে উত্তেরি লেক কে পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা করা হয়। পুনরুদ্ধার করার পরে প্রায় ৩০০ যাযাবর পাখি আবার বাসা বাঁধতে শুরু করে এই লেকে। ঋতুর প্রথমে এত পাখির আনাগোনা থাকলে সারা ঋতু ধরে আশা করা যাচ্ছে প্রচুর পাখি আসবে। সুধা রমন এবং তার সঙ্গী সাথীরা কাছাকাছি গাছেতে তৈরি করেছেন পাখিদের উপযুক্ত বাসা, যেখানে গেলেই আপনার মন ভরে উঠবে পাখির মিস্টি আওয়াজে। শুধু পাখি না প্রচুর গাছপালা থাকায় এর কাছাকাছি প্রচুর প্রজাপতি উড়ে বেড়াতে দেখা যায়, সব মিলিয়ে রঙিন হয়ে উঠেছে চেন্নাইয়ের এই লেক টি।
ভারতের এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে খরার অভাব এ লেক গুলি শুকিয়ে যাচ্ছে, সেখানে এই লেক গুলিকে পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা করতে পারলে, প্রচুর পাখির আনাগোনা হবে এবং অনেক জায়গা পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। যাতে করে ভারতের পর্যটন শিল্প উন্নতির পথ দেখবে, আর শুকনো রুক্ষ জমিতে গড়ে উঠবে সবুজায়ন, যা প্রকৃতির জন্য ভীষণ দরকার।