অফবিটরাজ্য

হোলির রঙে সেজে উঠবে গোটা দেশ, দেখেনিন কোথায় কি নামে পালিত হয় হোলি

Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি : বসন্ত কালে পালন করা হয় এই হোলি বা দোল। আবিরের রং নিয়ে মেতে ওঠে গোটা ভারতবাসী। এমনকি ভারতের বাইরেও ভারতীয় সংস্কৃতি বজায় রাখতে দোল খেলা হয়। তবে ভারতের মধ্যে এক একটি জায়গায় একে একেক নামে ডাকা হয় এবং তাদের পালন করার পদ্ধতি একেক রকম।

১) লাঠমার হোলি (উত্তর প্রদেশ) : লাঠ মার কথাটির সঙ্গে লাঠি কথাটি জড়িয়ে আছে অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশের এই হোলি উৎসব রঙের এর সাথে ব্যবহৃত হয় লাঠি ও। কিন্তু আপনার মনে একটি প্রশ্ন জাগবে এই দোল খেলতে আবার লাঠি কেন ব্যবহৃত হয়? এমনটাই ওখানকার নিয়ম। প্রথা অনুযায়ী, মহিলারা লাঠি নিয়ে পুরুষদের তাড়া করবে। মহিলারা পৌরাণিক কাহিনীর মতো শ্রীকৃষ্ণের গোপিনী সাজেন, আর পুরুষরাও তেমন বেশভূষা করেন। এখানকার রাধারানী মন্দির থেকে খেলা শুরু হয়, উত্তর প্রদেশের বৃন্দাবনে, মথুরা, নন্দগ্রাম এ হোলি খেলা হয়ে আসছে।

২) ইয়াওসং (মনিপুর) : মনিপুরের হোলির নাম ইয়াওসং। এই উপলক্ষে বাঁশের ছোট কুড়ে ঘর বানানো হয়। তাতে শ্রীচৈতন্যদেবের জন্মদিন পালন করা হয়। শুধু জন্মদিন পালন নয়, তাকে পূজো করা হয়। তার পরে তার সামনে আঞ্চলিক নাচ বা থাবাল চংবা করা হয়। দোল পূর্ণিমার দিন থেকে পরবর্তী ছয় দিন ধরে এই উৎসব পালিত হয়। ‘দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন’ এর প্রতীক হিসেবে এখানে হোলি খেলা হয়।

৩) ফাগুয়া (বিহার) : ফাগুন মাসে এই উৎসব পালন করা হয় বলে ভোজপুরি ভাষা অনুসারে বিহারে হোলি উৎসব কে ফাগুয়া বলা হয়। এখানে ব্রজধামে রাধা-কৃষ্ণের প্রেম ভালোবাসার কথা মনে করেই হোলি রং খেলা হয়। রং খেলার পরে গাওয়া হয় আঞ্চলিক গান।

৪) বসন্ত উৎসব (পশ্চিমবঙ্গ) : এখানে সাধারণত এই হোলি বা দোল ‘বসন্ত উৎসব’ নামে পরিচিত। শান্তিনিকেতনে এই দোল উৎসব খুব ঘটা করে পালন করা হয়। শুধুমাত্র বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীরা ও নয় দেশ-বিদেশ থেকে জনসমাগম হয় রং খেলার জন্য। আবির এখানকার মুখ্য উপাদান। আবিরের রঙে রাঙিয়ে দেওয়া হয় সকলকে। এবং সাথে চলে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

৫) রং পঞ্চমী (মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ) : মহারাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রদেশের এই দোল উৎসব ‘রং পঞ্চমী’ নামে পরিচিত। এখানকার বিশেষত্ব হল এখানে মানুষের পিরামিড তৈরি করা হয়। একজন মানুষের কাঁধের উপরে আরেকজন মানুষ উঠে খুব সুন্দর ব্যালেন্স এর মাধ্যমে তারা তাদের এই দোল উৎসব পালন করেন। সর্বোচ্চ উপরে বাধা থাকে একটি দইয়ের হাঁড়ি যা ভাঙতে হয়। এখানে প্রায় পাঁচ দিন ধরে এই উৎসব চলতে থাকে।

‘বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য’ এই কথাটি বোধহয় ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে সাজে। একই উৎসব একেক জায়গায় একেক রকম ভাবে পালিত হয়। তবে প্রত্যেকের উদ্দেশ্য কিন্তু একই। একে অপরকে আবির এর রঙে রাঙিয়ে দেওয়া। কবিগুরুর ভাষায় বলতেই হয় ‘খোল দ্বার খোল লাগলো যে দোল’।

Related Articles

Back to top button