অফবিট

নির্ভয়া কান্ড: পর্দার আড়ালে এক বিশ্লেষণ

Advertisement

কুণাল রায় : বর্তমানে এক কঠিন সময়ের মুখোমুখি বিশ্ববাসী। নতুন বছরের শুরুটা মোটামুটি ভালো হলেও, যত দিন গেছে, এক গভীর সংকট গ্রাস করেছে আমাদের এই মানব অস্তিত্বকে। একই ভাবে বিভিন্ন ঘটনা পৃথিবীতে এক তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। প্রায় আট বছর ঘটে যাওয়া এক ঘটনার যবনিকা পড়েছে গত বিশে মার্চ। নির্ভয়ার দোষীরা শাস্তি পেয়েছে। যে ঘৃণ্য অপরাধ তারা সেই ‘অভিশপ্ত’ রাতে ভারতের রাজধানীতে করেছিল, তার যথাযথ প্রতিশোধ নিয়েছে এই প্রকৃতি। তবে দোষীদের পক্ষকের উকিল শ্রীমান এ পি সিংহ এক সাক্ষাৎকারে বলেন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে যে ওই চারজন সম্পূর্ণ ভাবে নির্দোষ।

অক্ষয় কুমার ১৫ই ডিসম্বরের রাতে দিল্লি থেকে মহাবোধি এক্সপ্রেস ট্রেনে নিজের বৌদি ও ভাইপো বা ভাইজির সাথে কোন এক জায়গায় যাচ্ছিল। এর প্রমাণ স্বরূপ তার কাছে রেল টিকিটও ছিল। কিন্তু তা গ্রাহ্য হয়নি। অন্যদিকে বিনয় ও পবন ক্রিসমাস উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠান যা পনেরোদিন ব্যাপী আয়োজন করা হয়েছিল তার ভিডিও কপিও আছে। উল্লেখ্য বিনয় ওই অনুষ্ঠানে একটি ইন্সট্রুমেন্ট বাজিয়ে ছিল ও পাশে পবন বসে ছিল। বিনয় একজন ভালো অঙ্কন শিল্পী। এডভোকেট এ পি সিংহের বক্তব্য অনুযায়ী মুকেশকে প্রাণের হুমকি দিয়ে মিথ্যা বয়ান দেওয়ানো হয়।

তাকে নাকি বলা হয়েছে যে রাম সিংহের মত তাকেও খুন করা হবে যদি সে সেটা না করে! আইনের বিষয়বস্তুতে নানা জটিলতা, প্যাঁচ থাকলেও শেষ পর্যন্ত ওই চার অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড হয়। ফাঁসির ঠিক আগের রাতে ওরা কেউ দুচোখের পাতা এক করতে পারেনি। মুকেশ, পবন ও অক্ষয় চাঁদের দিকে চেয়েছিল আর বিনয় দুজন হিন্দু দেবতার ছবি এঁকেছিল, যার একটি জেল কতৃপক্ষকের হাতে তুলে দেওয়া হয়, অপরটি তার পরিবারের হাতে। তবে আশ্চর্যের বিষয় একটি যে এডভোকেট এ পি সিংহ দোষীদের শাস্তি হওয়ার পর স্বীকার করেছেন যে ওরা চারজনই প্রকৃত দোষী ছিল।

তাই প্রশ্ন একটাই: “এতদিন তাহলে এই নাটক কেন?” এই প্রশ্নের উত্তর নেই। তবে সান্তনা একটাই মিথ্যের কালো মেঘ সরিয়ে সত্যের সূর্য আজ উজ্জ্বল। নির্ভয়ার মা আশা দেবীর এই লড়াই অবশেষে স্বীকৃতি পেল। এক উদাহরণ হয়ে রয়েগেলআমাদের দেশের সভ্যতা, আইন শৃঙ্খলার কাছে! আমরা সকলে হয়ত নির্ভয়ার মা আশা দেবীর মত মানসিকভাবে বলবান নই। এই লড়াই অন্য কেউ হলে হয়ত কবেই শেষ হয়ে যেত। কিন্তু তিনি এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করলেন। শুনতে আট বছর, কিন্তু এই আট বছরে, প্রতিটি দিন, প্রতিটি রাত কিভাবে আশা দেবীর কেটেছে, সেটা কেবল তিনিই জানেন। তাই আজ চাই সেই নারীর সম্মান, যে কারো মা, কারো স্ত্রী, কারো ভোগিনী!!

তথ্য সূত্র  : ABP NEWS

Related Articles

Back to top button