শ্রেয়া চ্যাটার্জি – উত্তর প্রদেশের সিতাপুর জেলার একটি গ্রামের নাম ‘করৌনা’। আর পাঁচটা গ্রামের মতো ওই গ্রামটিও একটি সুন্দর গ্রাম। কিন্তু এখন করোনা নামটি শুনলেই মানুষের গায়ে রীতিমতো জ্বর আসার জোগাড়। তাই গ্রাম থেকে যে কেউ ফোন করলেই কেউ ফোন ধরছেননা। কারণটা হচ্ছে ওই করোনা আতঙ্ক। এই সুযোগে ওই গন্ডগ্রামটি বেশ বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। তবে ফোন করে যদি গ্রামবাসীরা বলেন যে, ‘করৌনা’ গ্রাম থেকে সে বলছে প্রথম কথা কেউ বিশ্বাস করছে না, বা আতঙ্কে ফোনটা রেখে দিচ্ছে।
গোটা বিশ্ব যখন প্রায় লকডাউন, মানুষ যখন প্রায় গৃহবন্দী, ভারতবর্ষ তাতে যোগ দিয়েছে তার অনেক আগে থেকেই এই গ্রামের মানুষরা কার্যত গৃহবন্দি। কারণ ওই নাম, ওই নামেই সকলে ভয় পাচ্ছে। কিন্তু গ্রামবাসীদের তো সত্যিই এখানে কিছু করার নেই, কারণ গ্রামটির বহু আগে তার নামকরণ হয়েছিল। এখন ভাইরাসটির সঙ্গে যদি তার নামের মিল থাকে সত্যি গ্রামবাসীরা নিরুপায়।
গোটা বিশ্ব জুড়ে করোনা নামটি মানুষের মধ্যে এতটাই আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে যে এই ঘটনাটি তার একমাত্র প্রমাণ। কোন দুর্ভিক্ষ নয়, ছোঁয়াচে কোনো রোগ নয়, যুদ্ধ নয়, রক্তপাত নয় তবু একটি ভাইরাস কেমন একটার পর একটা জীবন মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়ছে। মানুষ শুধু নিরুপায় হয়ে তাকিয়ে দেখছে। ইতালি, আমেরিকার মতো উন্নত দেশ কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। ভারতীয় আক্রান্তের সংখ্যা ও নেহাতই কম নয়। আর এই দিকে ভারতে এই গ্রামের মানুষ গুলি পড়েছেন মহা বিপদে, তাদের সঙ্গে অন্য জায়গার মানুষ খারাপ ব্যবহার করছেন। কিন্তু কেন করছেন তা কারোরই জানা নেই।
করোনা ভাইরাস এর সঙ্গে এই গ্রামের কোন সম্পর্কই নেই। এমনটা করা বোধহয় উচিত না, কারণ সেই মানুষগুলোর হয়তো কোন দরকার থাকতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা যদি তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়েনি শুধুমাত্র সন্দেহের বশে তাহলেই বা কি করে চলে? আমাদের প্রত্যেকের সত্যিটা জানা উচিত। এই গ্রামের অনেকদিন আগেই এমনটা নামকরণ হয়েছে। করোনা ভাইরাস সঙ্গে এর কোনো সম্পর্কই নেই। তাই চলুন সকলে মিলে আমরা হাত বাড়িয়েদি গ্রামের দিকে।