দেশনিউজ

লকডাউনে রাত দিন পরিষেবা দিচ্ছেন বিনামূল্যে, জানুন ‘অ্যাম্বুলেন্স মানি’র কাহিনি

Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – করোনা ভাইরাস এর জন্য সরকার থেকে সমগ্র ভারতবাসীকে বাড়িতে থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। এইরকম পরিস্থিতিতে ৩৪ বছরের মানিকান্দন যিনি ‘অ্যাম্বুলেন্স মানি’ নামে পরিচিত, তিনি এই লকডাউনের সময় ২৪ ঘন্টা নিজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। যেদিন থেকে গোটা দেশের লকডাউন ঘোষণা হয়েছে তবে থেকেই পন্ডিচেরির রমানাথাপুরামের এর বাসিন্দা মানি, ১৮ জন রোগীকে কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেছেন তার মধ্যে ৬ জন ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা নারী।

মানির এই জীবনে আসার আগে তার একটি ঘটনা রয়েছে, তার ভাই একটি পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন এবং অনেক ডাকাডাকির পরও অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি, সাহায্য করারও কাউকে পাওয়া যায়নি। ২০১৬ সালের মার্চ মাস থেকে তাই তিনি এই বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবাটি চালু করেন। যদি কোনো মানুষকে আর অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে হয়।

সকালবেলা তিনি একজন গাড়ি বিক্রেতা আর রাত্রিবেলা তিনি একজন অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার। তবে সকালেও যদি কারুর অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন হয়, তখন তিনি সেখানে একজন ড্রাইভারকে রেখে দেন, যে অ্যাম্বুলেন্সে করে সকালের দিকে রোগীকে নিয়ে যেতে পারেন। ৫০ মাসের তার এই উদ্যোগে সাড়ে ৬৫০ এর বেশি রোগীকে এখনো পর্যন্ত নিয়ে গেছেন। ১০৮ নম্বরে ফোন করলেই রাত-দিন ২৪ ঘন্টা সব সময় অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা পাওয়া যাবে। ১৪ এপ্রিল, তিনি মাঝরাত্রে একটি ফোন পেয়ে একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে নিয়ে হাসপাতালে যান এবং তারপরে তিনি একটি ফুটফুটে মেয়ের জন্ম দেন।

এই লকডাউনের সময় রোগীকে মাঝরাত্রে নিয়ে যেতে গিয়ে অনেক সময় তার সারা রাতটাই অ্যাম্বুলেন্স এর ভিতরে কেটেছে। কারন তার অনেকটাই ভয় থেকেছে তিনি যদি বাড়িতে আসেন এবং সাথে করে যদি জীবাণু নিয়ে আসেন, তাই জন্য তিনি অ্যাম্বুলেন্স কেই থাকার জন্য উপযুক্ত জায়গা হিসাবে বেছে নিয়েছেন। কারণ তিনি তার বাড়ির লোককে কোনোভাবেই বিপদে ফেলতে চাননি। তিনি কিছু জামা কাপড় নিয়ে আপাতত অ্যাম্বুলেন্সে থাকছেন। কাছাকাছি পুলিশ স্টেশন থেকে তাকে খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।

Related Articles

Back to top button