“নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার কেন দিবে নাহি অধিকার”- শব্দগুলো আজও পূর্ণ করে এই আকাশ, এই বাতাস। তিনি বরাবরই ছিলেন এক স্রষ্টা, যার সৃষ্টির জাদুতে মন্ত্রমুগ্ধ ছিল এই বিশ্ববাসী। তাঁর কলমের পরশে প্রাণ সঞ্চারিত হয়েছে শিল্প সাহিত্যের এই বৃহৎ জগতে! বিতর্কের রাজমুকুটও তাঁকে ধারণ করতে হয়েছে বহুবার। কিন্তু তাঁর প্রভাব আজও স্মিত হয়নি। প্রকাশ্য দিবালোকের মতই তাঁর এক স্বচ্ছ উপস্থিতি! সেই বিরল ও অসীম প্রতিভা সম্পন্ন ব্যক্তিটির আজ শুভ জন্মদিন। রবীন্দ্র জয়ন্তী রূপে যা পরিচিত আমাদের কাছে।
ছেলেবেলায় তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা আরম্ভ হয়ে তাঁর নিজ গৃহে। মাত্র নবছর বয়সে “ম্যাকবেথ” অনুবাদ করেন। পরবর্তী সময় তাঁর সৃষ্টির আলোয়ে উদ্ভাসিত হয়েছি আমরা। পরিচিতি পেয়েছি প্রকৃত রবীন্দ্রনাথের! ‘চোখের বালি’থেকে শুরু করে “শেষের কবিতার” মত প্রেমের উপন্যাস গুলিতে বারংবার প্রণয়ের নেপথ্যের রসায়ন প্রকাশ করতে প্রচেষ্ট হয়েছেন। ত্রিকোণ প্রেম হোক বা মিলন বহির্ভূত প্রণয় কাহিনী, সবেতেই উনি সচন্দ! তাঁর কবিতা, ছোট গল্প, কাব্যনাট্যের মধ্যে আমরা পাই এক অনন্ত অনেশ্বন! মৃত্যুর মাঝেও যে জীবনের রং উপলব্ধি করা যায়, তা কেবল তিনিই শিখিয়েছেন।
উল্লেখ্য “গীতাঞ্জলির” মুখবন্ধনী আইরিশ কবি ডাবব্লু বি ইয়টস লিখেছিলেন। প্রথম বাঙালি ও এশিয়ান যিনি নোবেলজয়ী, সাল ১৯১৩। পুরস্কারের অর্থে নির্মিত হয় বিশ্বভারতী। শিক্ষাকে প্রসারিত করেছিলেন চার দেয়ালের বাইরে! উন্মোচিত হয়েছিল এক নবদিগন্ত। এরই ফাঁকে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল তাঁর গোপন প্রেমালাপ কেন্দ্রিক! নানা মহিলারদের সাথে তার নাকি নিবিড় সম্পর্ক ছিল। এই নিয়ে সাল ২০০১ এ একটি ইংরেজি ম্যাগাজিনে “সিক্রেট লাভস” অফ টেগোর বলে একটি কভার স্টোরি ও প্রকাশিত হয়। তবু তিনি রবীন্দ্রনাথ, সাধের রবি ঠাকুর। এক পরম অনুপ্রেরণা। তুমি সরস্বতীর বরপুত্ৰ। তুমি ছিলে, আছ ও থাকবে! স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে সেই অমর পংক্তিটি: “মন্দ্রিত করিয়া তোলে জীবনের মহামন্ত্রধ্বনি” (কবিতা: “ওরা কাজ করে”)।
-কুণাল রায়।