টলিউডবলিউডবিনোদন

কার দৌড় কতদূর! তৈমুর না ইউভান? কার দিকে পাল্লা ভারী? জানুন

Advertisement

12 ডিসেম্বর 2016, নবাব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিল ছোট্ট তৈমুর। এদিকে 12 সেপ্টেম্বর 2020, চক্রবর্তী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছে ছোট্ট য়ুভান। কিন্তু জন্মগ্রহণ করার ক্ষেত্রে তিন বছরের ব্যবধান হলেও দুজনেই সমানভাবে দৌড়চ্ছে। তবে সেটা বাস্তবে নয়, ভার্চুয়াল জগতে পাল্লা দিয়ে দৌড়াচ্ছে তিন বছরের তৈমুর ও 17 দিনের য়ুভান। তবে ভবিষ্যতে যে যার ব্যক্তিগত জীবনে এভাবেই দৌড়াতে পারবে তো?

সাধারণ ঘরের ছেলে-মেয়েদের ক্ষেত্রে বলা হয় ছোট থেকে এত মোবাইল ফ্রেন্ডলি বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আনাগোনা করা ঠিক নয়। কিন্তু সেলিব্রেটি সন্তান হলেই সেটা বদলে যায় কেন? তবে সব সেলিব্রেটি সন্তানের ক্ষেত্রে অবশ্য এমনটা হয় না। বিশেষ করে নবাব পরিবারের জন্মগ্রহণ করা ছোট্ট তৈমুর ও চক্রবর্তী পরিবারে জন্মগ্রহণ করা ছোট্টু য়ুভানের ক্ষেত্রেই বিষয়টা একেবারে আলাদা। তৈমুরের সময় দেখা গিয়েছিল প্রায় একই সঙ্গে জন্মগ্রহণ করেছিল পরিচালক আদিত্য চোপড়া ও রানি মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে আদিরা। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় আদিরাকে নিয়ে এত মাতামাতি হয়নি। এমনকি আজ পর্যন্ত আদিরা কেমন দেখতে, তার একটা ছবিও আদিত্য চোপড়া কিংবা রানি মুখোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেননি। উল্টোদিকে য়ুভানের কয়েক মাস আগে টলিউড পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছে প্রযোজক নিসপাল সিং রানে ও অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিকের ছেলেও। তাকে নিয়েও কিন্তু এত সোশ্যাল মিডিয়ায় মাতামাতি হয়নি। এমনকি সদ্যোজাতর একটা ছবি ছাড়া তেমন কোনও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরেও বেড়ায়নি। তাহলে তৈমুর ও য়ুভানের ক্ষেত্রে পুরো বিষয়টা আলাদা কেন? এক্ষেত্রে কি ওদের মা-বাবার একটা বিশেষ ভূমিকা রয়েছে? কারণ, তৈমুর খান বা য়ুভান চক্রবর্তী এদের কেউই সোশ্যাল মিডিয়া কী জিনিস, তা বোঝার মতো বয়সে পৌঁছায়নি। তাহলে লাইমলাইটে যে ফুটেজ এই দু’জন শিশু খাচ্ছে, তার পেছনে কি দুজনের মা-বাবার একটা বড় ভূমিকা রয়েছে?

হ্যাঁ অবশ্যই রয়েছে। তৈমুরের ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি বলিউড অভিনেত্রী করিনা কাপুর খান যখনই কোথাও গিয়েছেন, তা সে ঘুরতে যাওয়াই হোক বা শুটিং ফ্লোরে আসা, সবেতেই তৈমুরকে সঙ্গে নিয়ে তিনি এসেছেন। এমনকি সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা দেখলে তৈমুরকে তিনি ক্যামেরা ফেস করতেও কার্যত শিখিয়েছেন। উল্টোদিকে জন্মাবার আগে থেকেই শুভশ্রী যেভাবে একের পর এক তার বেবি বাম্পের ছবি দিয়ে যাচ্ছিলেন, তাতে তাঁর সন্তান জন্মানোর পর সেই ছবি দিয়ে মাতামাতি যে তিনি করবেন, এমনটা আগে থেকেই নির্ধারণ ছিল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যেখানে নিজেরাই গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের যথেষ্ট প্রতিষ্ঠিত এবং প্রভাবশালী, সেখানে নিজেদের সদ্যোজাত দিয়ে এত ফুটেজ নেওয়ার কি খুব প্রয়োজন আছে?

বলা হয় শিশুরা ভগবানের দান। প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওরা বেড়ে ওঠে। তাহলে তৈমুর ও য়ুভানের ক্ষেত্রে প্রকৃতির থেকেও কৃত্রিম জগতের প্রভাবটা এত বেশি কেন? ভবিষ্যতে বড় হওয়ার ক্ষেত্রে এটার একটা কুপ্রভাব পড়তে পারে, সেটা কি ওদের মা-বাবারা বুঝতে পারছেন না? নাকি বুঝেও সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চিত হওয়ার জন্য নিজেদের সন্তানদের কাজে লাগাচ্ছেন? কার্যত ভার্চুয়াল জগতে দৌড়ের প্রতিযোগিতা শুরু করেছে তৈমুর ও য়ুভান।

তিন বছরের তৈমুরকে জন্মেই কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে য়ুভান। কিন্তু আদৌ এসব কি বোঝার মতন পরিস্থিতি হয়েছে ওর? যে শিশুর চোখ ঠিকমতো ফুটেছে কিনা, তা নিয়ে একটা সন্দেহ রয়েছে, সেই শিশুর প্রত্যেকটা মুহূর্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রেমবন্দি করার কী মানে তা আমার বোধগম্য হল না। তবে এটুকুই বলতে পারি এই যে ‘কার দৌড় কতদূর’ খেলায় মাতিয়ে দেওয়া হয়েছে এই দুই ছোট্ট প্রাণকে, সেটা বোধ হয় একেবারেই অভিপ্রেত নয়। এর থেকে প্রকৃতির মধ্যে ওদের বাড়তে দেওয়াটাই ওদের আগামী জীবনের পক্ষে শ্রেয় হবে বলে আমার একান্ত ব্যক্তিগত মত।

Related Articles

Back to top button