উত্তরপ্রদেশ: গত কয়েক দিন ধরে হাথরস কান্ড মনে করিয়ে দিয়েছে নির্ভয়া কাণ্ডের মর্মান্তিক স্মৃতি। যেই রাজ্যে যোগী আদিত্যনাথ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর নাম বদলের হিড়িক দেখা দিয়েছে, সেই রাজ্যে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও বদল কেন হচ্ছে না, সেই প্রশ্নও উঠেছে বিভিন্ন মহলে। কেন প্রশাসন কার্যত নিশ্চুপ? এই প্রশ্ন কিন্তু বারবার উঠে আসছে। তবে এবার হাথরস কান্ডে সরাসরি হস্তক্ষেপ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এমনকি দোষীদের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া যাতে হয়, সেই বিষয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর কার্যত নড়েচড়ে বসেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্টে এই মামলার বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এমনকি তড়িঘড়ি তিন সদস্যের সিট গঠন করা হয়েছে। তবে এখন নড়েচড়ে বসলেও কেন প্রথম থেকেই যোগী আদিত্যনাথ ও তাঁর প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা নেয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিরোধী শিবিরে।
হাথরস কাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই টুইটারে সরব হয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘ভারতে এক কন্যার গণধর্ষণ করে খুন করা হল। তথ্য ধামাচাপা দেওয়া হল। এমনকি শেষকৃত্য সম্পন্নের অধিকারও পরিবারের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হল। এটা অত্যন্ত অসম্মানজনক এবং অন্যায়ও।’
মঙ্গলবার সকালে দিল্লির সফরদজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় নির্যাতিতা তরুণীর। তারপর পরিবারকে কিছু না জানিয়েই মাঝরাতে গ্রামে নিয়ে গিয়ে দায়সারাভাবে তরুনীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। পরিবারের কাউকে এমনকি শেষকৃত্যের সময়ে প্রবেশ করতে দেওয়া পর্যন্ত হয়নি। এমনটাই অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতা তরুণী ভাই। প্রথমে পুলিশের জুলুমের অভিযোগ ছিল। এরপর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগও নির্যাতিতার পরিবার থেকে করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এমন নারকীয় ঘটনা নির্ভায়া কান্ডের স্মৃতি উস্কে দিয়েছে, তা বলাই যায়। এমনকি এক্ষেত্রে মৃত্যুর পরও প্রাপ্য সম্মানটুকু নির্যাতিতা তরুণীকে দেওয়া হল না। তাই এই ঘটনায় সোচ্চার হয়ে উঠেছে গোটা দেশ।