আবুধাবি: শনিবার সন্ধ্যায় আবুধাবির বাইশ গজে আইপিএলের যে ম্যাচ ছিল, সেটা শুধুই একটা ক্রিকেট ম্যাচ ছিল না। সেটা ছিল ক্রিকেট-বিনোদনের মিশেল। সেটা যেমন ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ম্যাচ, ঠিক তেমন সেটা ছিল বীর বনাম জারার ম্যাচ। কারণ, ব্যাটে-বলে লড়াইটা কে এল রাহুল বনাম দীনেশ কার্তিক হলেও গ্যালারিতে লড়াইটা ছিল শাহরুখ খান বনাম প্রীতি জিন্টার। কিন্তু এদিন ব্যাটে-বলে দুরন্ত পারফরম্যান্স করেও শেষ বাজিটা মারল বাজিগরের দলই।
আবুধাবিতে নাইট শিবিরের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে ছটি ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতে জয় পেয়ে আত্মবিশ্বাস কার্যত ধুলোয় মিশিয়ে খেলতে নেমেছিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। সেইমতো জয়ে ফিরতে মরিয়া ছিল দল। ব্যাট এবং বলে দু’ক্ষেত্রেই তুখোড় পারফরম্যান্স দেখিয়েছিল পাঞ্জাব, কিন্তু শেষ ওভারে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে বল করতে নেমে কেকেআরের হয়ে সুনীল নারিন যেটা করে দেখালেন, তা একেবারে অবিশ্বাস্য। শেষ ওভার অর্থাৎ ছয় বলে পাঞ্জাবের দরকার ছিল জেতার জন্য মাত্র ১৪ রান। যা তোলা স্বাভাবিকভাবে খুব একটা কষ্টসাধ্য ছিল না। কিন্তু বিপক্ষে যে বল হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন সুনীল নারিন। আর তাই সহজ ব্যাপারটা কঠিন হয়ে দাঁড়াল পাঞ্জাবের কাছে। সুনীল নারিনের বোলিং দাপটে কার্যত জেতা ম্যাচ হেরে হোটেলে ফিরতে হল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের ক্রিকেটারদের। মাত্র দুই রানে এদিন পাঞ্জাবের থেকে জয় ছিনিয়ে নিল কেকেআর।
এদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেকেআর৷ কিন্তু শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি৷ ওপেনার রাহুল ত্রিপাঠিকে মাত্র পাঁচ রানেই বোল্ড করে দেন মহম্মদ শামি৷ তবে ফর্মে থাকা শুভমান গিল এদিনও নিজের ব্যাটের ধার বজায় রাখেন৷ ইয়ন মর্গ্যানের সঙ্গে শুভমানের জুটিতে একটা লড়াই চলছিল, কিন্তু ব্যাট হাতে মর্গ্যানকে স্বচ্ছন্দ দেখাচ্ছিল না৷ ২৩ বলে ২৪ রান করে রবি বিষ্ণোইর শিকার হন তিনি৷ এরপর নামেন কেকেআর অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক৷ একাধিক সমালোচনা, অধিনায়কত্ব থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার চাপ, নিজের ফর্মহীণতা সবকিছু দূরে সরিয়ে এদিন পাওয়া গেল পুরনো দীনেশ কার্তিককে৷ নিজের ক্লাসিক শট খেললেন তিনি৷ মাত্র ২৯ বলে ৫৮ রান করেন নাইট অধিনায়ক৷ অন্যদিকে তরুণ শুভমান নিজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ৪৭ বলে ৫৭ রান করেন৷ তবে এদিনও সুপার ফ্লপ ছিলেন আন্দ্রে রাসেল। এখনও পর্যন্ত তাঁর ব্যাট থেকে ঝোড়ো ইনিংস এবারে দেখতে পায়নি নাইট ভক্তরা। তবে অবশেষে এদিন ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রান করে কলকাতা নাইট রাইডার্স৷
জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই ছন্দে দেখা যায় মায়াঙ্ক আগারওয়াল, কে এল রাহুল, নিকোলাস পুরান সহ পাঞ্জাবের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু তাতেও জয় অধরাই রয়ে গেল। শেষ হাসিটা হাসলেন কিং খানই।