“যেভাবে আন্দোলন করে টাটাকে তাড়িয়েছে, তাতে বাংলায় শিল্পের রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে।” সিঙ্গুরের জনসভায় এইবার শাসক শিবিরকে বিঁধলেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় (Mukul Roy)। তার আক্ষেপ,”সিঙ্গুরে পা দলেই একটা পাপ পাপ বোধ হয়।” মুখ্যমন্ত্রীকে গেরুয়া শিবির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের (Locket Chatterjee) কটাক্ষ,”বলেছিলেন আমি কৃষি চাই, চাইনা শিল্পও। টাটাকে টাটা বাই বাই করে দিয়ে ছিলেন। কোথাও শিল্প! কোথাও কৃষি! দশ বছরে কিছুই করাই হয়নি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, স্লোগান উঠেছিল,”কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ।” কিন্তু বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও সিঙ্গুর স্থাপনে ব্যর্থ হন রাজ্যের তৎকালীন সিপিএম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। টাটাদের ন্যানো কারখানার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন সেই সময়ের বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। প্রবল আন্দোলনের মুখে এক লাখ গাড়ির কারখানা চলে গিয়েছিল গুজরাটে। রাজনৈতিক মহলে মতে, টাটারা সিঙ্গুর ছেড়েছিল, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছে গিয়েছিলেন মহাকরণে। এই সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়ে তৃণমূলের নম্বর দুই ছিলেন মুকুল রায়।
মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে ১০ টা বছর। দলবদলে এখন গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন মুকুল রায়। কয়েক দিন আগে যখন সিঙ্গুর শিল্পের ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন,”শেষে চৈতন্য হয়। কোনও চৈতন্যই সঠিক সময়ে হয়না। এতদিনে বুঝতে পারলেন, ঐ জমিতে চাষ করা হবেনা। অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি মানুষ বোঝেই না। ইন্ডাস্ট্রি শব্দটা জুড়ে দিলে মানুষকে বিভ্রান্ত করাটা সহজ হয়। নতুন সরকার ভাববে, এই জনিতে কী হবে!” বস্তুত সিঙ্গুর আন্দোলন যে তার জীবনের অন্যতম বড় ভুল ছিল সেই কথা স্বীকারও করেছেন একাধিকবার।
এইদিন বিজেপির ‘ আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে সিঙ্গুরে জনসভা করেন মুকুল রায় এবং সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে হুগলীর সাংসদ বলেন,”সিঙ্গুরকে হাতিয়ার করে সিঙ্গুরের চাষিদের হাতিয়ার করে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। আমি কৃষি চাই, শিল্প চাইনা।”