বলিউডবিনোদন

‘আমি ভাগ্যবান, সবচেয়ে সুন্দরী আমার বেগম, সানার প্রেমে হাবুডুব স্বামী অনাস

Advertisement

নববর্ষ উপলক্ষ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের স্ত্রী সানা খান (sana khan)-এর প্রশংসা করলেন তাঁর স্বামী মুফতি আনাস সৈয়দ (Mufti Anas Saiyad)। সম্প্রতি ইন্সটাগ্রামে সানার সঙ্গে ‘নিকাহ’-এর ছবি পোস্ট করে ক্যাপশন দিয়ে  আনাস লিখেছেন, সানার সৌন্দর্য তাঁকে জন্নতের কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছে। খুদার এই সিদ্ধান্তের জন্য আনাস খুদাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।  কিন্তু প্রশ্ন হলো, আনাস ও সানা তো বিয়ের পর আধ্যাত্মিকতার পথে হাঁটবেন বলেছিলেন, তাহলে তাঁরা এখনও দিব্যি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছেন, হানিমুনে যাচ্ছেন, সমস্ত পার্থিব সুখ ভোগ করছেন কিভাবে!  যাই হোক, সানা ও আনাসের সিদ্ধান্ত সত্যিই খুব বিতর্কিত।  তাঁদের আধ্যাত্মিক পথে হাঁটার স্টাইল-টাও বেশ ইন্টারেস্টিং, তাই নয় কি!

গত বছর বিয়ের কিছুদিন পরেই  সানা খানের কয়েকটি অশ্লীল ছবি ভাইরাল হয়েছিল  সাইবার দুনিয়ায়। অনেকে দাবি করেছিলেন, সানার স্বামী আনাস স্ত্রীর ছবিগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। এই ধরনের ছবি ভাইরাল হলে সানা মৌলবাদীদের রোষের মুখে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন নেটিজেনদের একাংশ। আদতে অবশ্য এসব কিছুই হয়নি। সানা নিজেই ওই ছবিগুলির কোলাজ ও কাশ্মীরের গুলমার্গে তাঁদের হানিমুনের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন। সানা জানিয়েছেন, ছবিগুলি একটি তাঁর পুরনো ফটোশুটের , অপরটি সানা অভিনীত ‘ওয়াজাহ তুম হো’ ফিল্মের একটি গানের দৃশ্যের। এই দৃশ্যে সানার পরনে ছিল একটি অন্তর্বাস। ছবিদুটির সঙ্গে তাঁদের হানিমুনের একটি ছবি কোলাজ করে পোস্ট করেছেন সানা। কিন্তু সানা তো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে বিদায় জানিয়ে আনাসকে বিয়ে করেছিলেন।  তাহলে বিয়ের পর তিনি নিজের ফিল্মি কেরিয়ারের ছবি শেয়ার করতে শুরু করলেন কেন? তাহলে কি এখন সানার আফশোস হচ্ছে?  কিছুদিন আগে বিয়ের একমাস পূর্তি উপলক্ষ্যে সানা একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, তিনি গত মাসে এই দিনে তাঁর জীবনের সেরা সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন।

গত বছর  বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন অভিনেত্রী সানা খান। বিয়ের পরেই নিজের নামের পরিবর্তন করেছেন সানা। তাঁর ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলেও রাতারাতি বদলে গিয়েছে নাম। বিয়ের পর সানার নতুন নাম হয়েছে সৈয়দ সানা খান। গুজরাটের ব্যবসায়ী মুফতি আনাস সৈয়দকে বিয়ে করেছেন সানা। মুসলমান রীতিনীতি মেনে ‘নিকাহ’ হয়েছে আনাস ও সানার। সানার পরনে ছিল সাদা রঙের ওয়েডিং গাউন। তাঁর মাথা ঢাকা ছিল হিজাবে। সানার স্বামী আনাস পরেছিলেন সাদা কুর্তা-পাজামা। দুই পরিবার ও ঘনিষ্ঠ কিছু আত্মীয়দের উপস্থিতিতে ঘরোয়া অনুষ্ঠান করে বিয়ে হয়েছে আনাস ও সানার। মুসলমান রীতি মেনে বিয়ের অনুষ্ঠান হলেও ‘ওয়েডিং কেক’ কেটেছেন সানা ও আনাস। সোশ্যাল মিডিয়ায় সানার বিয়ের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে অনেক আগেই। এমনকি সানা নিজে তাঁর রিসেপশনের ফটো শেয়ার করেছেন ইন্সটাগ্রামে। রিসেপশনে সানা পরেছিলেন লাল রঙের ডিজাইনার লেহেঙ্গা-চোলি এবং তার সঙ্গে মানানসই করে জড়োয়া গয়না ও মুক্তোর অলঙ্কার। সানার গোটা লেহেঙ্গা চোলি-তে ছিল সোনালি জরি ও চুমকির কারুকার্য। এছাড়া সানা নিজের বিয়ের ছবি শেয়ার করে লিখেছেন ভগবানকে সন্তুষ্ট করার জন্য তিনি ও আনাস পরস্পরকে ভালোবেসেছেন। জন্নতেও তাঁরা মিলিত হবেন। নেটিজেনরা সানা ও আনাসকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে সানা শেষ পর্যন্ত বিয়েও করলেন রক্ষণশীল পরিবারেই। শ্বশুরবাড়ির শর্ত অনুযায়ী সানা নিজের অভিনয় জীবনে টেনে দিলেন ইতি। কিন্তু অনায়াসেই প্রশ্ন উঠেছে সানার মনোভাব নিয়ে। বর্তমান সমাজের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে একটি পরিবারে মেয়েদের উপার্জনশালী হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া বর্তমান সমাজে একটি মেয়ের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিয়ে আসে তার সুন্দর ভবিষ্যত। একটি মেয়ের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থাকলে সে পারিবারিক অসুবিধায় পড়লেও তা সমাধান করার রাস্তা খুঁজে পায়। সেখানে ভালো বউ হওয়ার জন্য নিজের কেরিয়ারকে বিসর্জন দিয়ে অভিনেত্রী সানা খান সমাজের প্রতি ভুল বার্তা দিয়েছেন। তবে সানার বক্তব্য হলো, তিনি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে খ্যাতি, ভালোবাসা, সম্পদ সব পেলেও মৃত্যুর পরের জীবন তাঁকে খুব ভাবায়। অনেক মনোবিদের মতে, সানার মধ্যে কোনো কারণে হতাশা কাজ করছে। এই কারণে তিনি মৃত্যুর পরের জীবন নিয়ে ভাবছেন। আধ্যাত্মিক মনোভাব হওয়া সত্ত্বেও বিয়ের সময় দামী লেহেঙ্গা চোলি ও অলঙ্কারের ব্যবহার সানার দু’মুখো মনোভাবের পরিচয় দেয়। সানার আচরণ ব্যাখ্যা করলে বোঝাই যাচ্ছে মুখে অনেক কিছু কথা বললেও মনে মনে নিজের জীবন নিয়ে নিজেই দোটানায় ভুগছেন সানা যা তিনি সর্বদা হাসি দিয়ে ঢেকে রাখছেন।

দীর্ঘ দিন ধরে বয়ফ্রেন্ড মেলভিন লুইস(Melvin louise)-এর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন সানা। কিন্তু হঠাৎ এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। একইসঙ্গে নিজের অভিনয় জীবনের ইতি ঘোষণা করে বলেন, তিনি এবার নিজের মতো করে বাঁচতে চান। এর আগে কালার্স চ্যানেলের জনপ্রিয় শো ‘বিগ বস’-এ প্রতিযোগী হিসাবে এসে সানা বলেছিলেন রক্ষণশীল মুসলমান পরিবার থেকে তাঁর লড়াই করে অভিনয় জীবন শুরু করার ঘটনা। তাহলে সেই সানাই আবার কি করে ফিরে গেলেন রক্ষণশীল জীবনে। তিনি কি করে অবলীলায় ছেড়ে দিলেন তাঁর পেশা! সানার হঠাৎ করে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় নেটিজেনদের মনে প্রশ্ন জাগতে শুরু করেছে, তাহলে কি সানা পারিবারিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করলেন!

Related Articles

Back to top button