অফবিট

বস্তির বাসিন্দা থেকে জয়কুমার হয়ে উঠলেন আমেরিকার জনপ্রিয় রোবট গবেষক, জেনে নিন তার জীবন কাহিনী

Advertisement

প্রতিভাশালী হওয়া সত্বেও অর্থের অভাবে অনেকেই তাদের প্রতিভার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারেনি। আবার অনেকে প্রতিভার জোড় দিয়েই সমাজের নিম্নবিত্ত থেকে পৌঁছে গেছে উচুস্তরে। এরকম অসংখ্য উদাহরণ আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। যেমন অনেকেরই পরিচিত একটি উদাহরণ জয়কুমার বৈদ্য। তিনি মুম্বাইয়ের বস্তিতে বসবাস করত এবং খুব অভাবে ছিল তাদের সংসার , দুবেলা পেট ভরে খেতেও পেতোনা। কিন্তু আর্থিক অভাব তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। তার প্রতিভাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে অনেক দূরে এবং তার পরিশ্রমও। বর্তমানে সে রিসার্চ এসিস্টেন্ট হিসেবে যোগদান করেছে ইউনিভার্সিটি অফ ভার্জিনিয়াতে। যে ছেলে দুবেলা পেট ভরে না খেয় , চরম অর্থের অভাব এর মধ্যে দিয়ে দিন কাটিয়েছিল একটা সময় সেই এখন অন্যতম জনপ্রিয় গবেষক। তাই পরিশ্রম এবং প্রতিভা কখনো বৃথা যায় না।

মুম্বাইয়ের কুরালা নামক এক বস্তির বাসিন্দা ছিল জয় কুমার এবং তার মা। তাদের দুজনেরই ছোট্ট সংসার এসেছিল অর্থের অভাব। কিন্তু এই দারিদ্রতা জয় কুমারকে অনেক বাধার সম্মুখীন করে, কিন্তু সেই সমস্ত কিছু জয় করেছে জয় কুমার। এক সময় তার স্কুলের পরীক্ষার ফলাফল পত্র তাকে দেওয়া হয়নি শুধুমাত্র স্কুলের মাইনে দেওয়া ছিল না বলে। সে অনেক অনুরোধ করেও রেজাল্ট হাতে পায়নি তখন তার সামনে বাধা হিসেবে দাঁড়িয়েছিল দারিদ্রতা। শুধুমাত্র জয়কুমার নয় তার মা অনেক করেছে জয় কুমার এর জন্য।

তাদের আর্থিক অভাব দিনে দিনে বাড়তে থাকে। তখনই জয় কুমারের মা একটি সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি লোকাল এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে এবং সেখান থেকে পড়াশোনার জন্য লোন নিয়ে জয় কুমারকে উচ্চশিক্ষায় প্রেরণ করে। এবং এই আর্থিক জোর বাড়ানোর জন্য জয়কুমার টিভি মেরামত করা শুরু করে তখন তার মাসিক মাইনে ছিল মাত্র ৪০০০ টাকা। আরো বেশি রোজগার করার জন্য জয় কুমার প্রাইভেট টিউশন পড়ায়। এরপর তিনি সোমাইয়া কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করে।

তারপরই তার প্রতিভা তাকে এগিয়ে নিয়ে যাই বহুদূর। স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হলেই রোবোটিক্স এর ওপর চারটি রাজ্য স্তরের এবং তিনটি জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে। লারসেন এন্ড টার্বো নামক নামকরা কোম্পানি থেকে তার চাকরির প্রথম প্রস্তাব এসেছিল তখন তিনি কলেজের পড়ুয়া ছিলেন। টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ কোম্পানিতে তিনি প্রথম ৩০০০০ টাকার চাকরিতে যোগদান করে। তার অধ্যাবসায় এখানেই থেমে থাকেনি। তিনি তিন বছর চাকরির পর শুরু করে পিএইচডি করা। একটি জার্নালে তাঁর গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল সম্ভবত ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে। ইউনিভার্সিটি অফ ভার্জিনিয়া গবেষণাপত্র দেখে প্রভাবিত হয়। এরপর ২৪ বছর বয়সে জয় কুমার রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ভার্জিনিয়া অফ ইউনিভার্সিটি তে যোগদান করে। বর্তমানে তার মাসিক রোজগার ভারতীয় মুদ্রায় এক লক্ষ্য তিরাশি হাজার অর্থাৎ প্রায় ২০০০ ডলার। তিনি এখন আমেরিকাতে বসবাস করে তার মা অবশ্য এখনও মুম্বাইতে রয়েছে কিন্তু খুব শীঘ্রই তার মাকেও তিনি আমেরিকাতে নিয়ে আসতে চলেছেন।

Related Articles

Back to top button