ট্যাব কেনার জন্য দশের বদলে কুড়ি হাজার টাকা ঢুকল পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে। টাকার অঙ্ক দেখে এক প্রকার চমকে উঠেছেন কেশপুরের ধলহারা পাগলীমাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ২৪ জন পড়ুয়া। এখন অতিরিক্ত টাকা ফেরত নিয়ে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। স্কুলের তরফ থেকে বাড়তি টাকা ফেরতের কথা বললে সেই নিয়ে পড়ুয়াদের পরিবার নারাজ স্কুলকে টাকা ফেরত দিতে। কোন দুর্নীতি যাতে না হয় তার জন্য সরাসরি সরকারের ঘরে টাকা ফেরত দিতে চাইছেন তারা। স্কুল পরিদর্শক অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে যে স্কুলের মাধ্যমেই ফেরত দিতে হবে অতিরিক্ত টাকা।
করোনা আটকাতে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই বন্ধ স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়। বাড়িতে বসে অনলাইনে পড়তে বাধ্য হচ্ছেন পড়ুয়ারা। তেমন সমস্যা না হলেও পড়াশোনার জন্য ফোন বা ট্যাব পেতে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল গ্রামাঞ্চলের দুঃস্থ পড়ূয়াদের। সেই কারণে তাদের সাহায্য করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) ঘোষণা করেছিলেন ট্যাব তথা ১০ হাজার টাকা প্রদানের কথা। কিন্তু কেশপুরের বেশ কিছু পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে দুই বার ঢুকল মোট ২০ হাজার টাকা। আর সেই বিষয় নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
সম্প্রতি জানা গিয়েছে যে, ২১ জানুয়ারি বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ভোকেশন্যাল বিভাগের ২৪ জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার করে দুই বারে মোট ২০ হাজার টাকা জমা পড়ে। এই অতিরিক্ত দশ হাজার টাকা ফেরতের জন্য এখন স্কুলের তরফে তাদের উপর চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পড়ুয়ারা। ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা জানিয়ে দিয়েছেন, স্কুল কর্তৃপক্ষকে কোনওমতেই অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেবেন না। টাকা ফেরত দিতে হলে তা দেবেন সরাসরি শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের হাতেই। এই নিয়েই শুরু হয়েছে টানাপড়েন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামলকুমার ঘটকের বক্তব্য, “স্কুলের ইমেল আইডিতে ভুল বানান টাইপ করা হয়েছিল। কিন্তু সফটওয়্যার সেটিংয়ে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চলে যায়। পরে ভুল বানান সংশোধন করার পর তা আপলোড করা হলে দ্বিতীয়বারের জন্য তা আবার কর্তৃপক্ষের কাছে চলে যায়। হার্ড কপি সামনে আসতে এই বিষয়টা ধরা পড়ে। ততক্ষণে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে দুই বার টাকা ঢুকে যায়।” টাকা ফেরতের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ চাপ দিচ্ছে বলে পড়ুয়ারা যে অভিযোগ করেছেন তা মানতে চাননি প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, “অতিরিক্ত টাকা ফেরতের জন্য পড়ুয়াদের অনুরোধ করা হয়েছে, কোনও চাপাচাপি করা হয়নি।”
স্কুল শিক্ষা পরিদর্শক চপেশ্বর সরদার জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে টাকা ফেরত দিতে হবে স্কুলে। অন্যথা নির্দেষ্ট ফর্ম ভরে এর মাধ্যমে তারা ট্রেজারিতে টাকা জমা দিয়ে দিতে পারেন।”