কলকাতা: ‘মা’ কিচেনে (Maa-Kichen) বিপুল সাড়া, ৫ টাকাতেই ডিম-ভাত! মানুষের জন্য ভাবার দায়িত্ব নিয়েই সরকার আসে রাজ্যে। নিজেদের শাসনকালে কাজ করে যায় মানুষের জন্য। কোথাও ওঠে বিতর্ক, কোথাও হাততালি। কোনো কোনো শাসকদল চিহ্ন রেখে যায়, পরের দল অনুসরণ করে, কোনো কোনো দল হেরে গিয়েও মন্ত্র দেয় বেঁচে থাকার। এসব প্রায় সব রাজ্যেরই গল্প, এসব গল্প বাংলারও (Westbengal)। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজের রাজ্যের মানুষের পেট পুরে ডিম-ভাতের ব্যবস্থা করেছেন মাত্র ৫ টাকায়।
নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের মাস্টারস্ট্রোক ভাবা যেতেই পারে। কিন্তু মানুষের জন্য বাংলা যে ভাবে, বাংলার দল যে ভাবে তার উদাহরণ তো আগেও দিয়েছে রাজ্য। দিয়েছে গত এবং চলতি বছরেই। সারাটা জীবন বামেরা বলে এসেছে মেহনতি মানুষদের স্বার্থে এবং পাশে আছে বামেরা। কথা রেখেছে ক্ষমতায় না থেকেও। কোরোনা কালের হাহাকারের বাজারে গোটা রাজ্য জুড়ে শ্রমজীবী ক্যান্টিন চালিয়েছেন তাঁরা। কোভিড ব্যারিয়ার মেনে মানুষের মুখের আগে পৌঁছে দিয়েছিলেন খাবার।
এদিকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে নিজের রাজ্যের মানুষের জন্য ” মায়ের রান্নাঘর” চালু করলেন তিনি। ৫ টাকায় ডিম ভাত। পেট পুরে। রাজ্যের মানুষের কথা ভেবে এবারের অর্থ বাজেট পেশ করার সময় নিজমুখে ঘোষণা করেছিলেন। আর বাজেট পেশের মাত্র ১০ দিনের মধ্যে নিজের দেওয়া কথা রেখেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকলেও পড়ুয়াদের জন্য চাল ডাল আলু সরবরাহ করে রাজ্য সরকার। আর এবার আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পরা মানুষদের জন্য এই প্রকল্প চালু করল সরকার। প্রথমে এই প্রকল্প কলকাতায় চালু হলেও তা আজ ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্য জুড়ে।
‘মা’ কিচেনে বিপুল সাড়া, সোমবার বিকেলে মেদিনীপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় এই প্রকল্পের আয়োজন করে পুরসভা। মেদিনীপুর শহরের দু’টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী রান্নার দায়িত্ব পায়। রান্না হয়, ভাত ডাল বাঁধাকপির তরকারি এবং ডিমের ঝোল। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর খাবার পরিবেশনের সূচনা করেন অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং মহকুমাশাসক। শহরের বিভিন্ন প্রান্তের ১০০ জন মাথা পিছু মাত্র ৫ টাকা দিয়ে সেই খাবার খান। ১ কাপ চায়ের দাম যেখানে ৫ টাকা, সেখানে এই দামে ডাল, তরকারি, ডিমের ঝোল ভাতে খুশি সকলেই। তাঁদের এক জনের কথায়, ‘‘মা প্রকল্প চালু থাকলে আমাদের আর খাওয়ার সমস্যায় পড়তে হবে না।’’
সর্বভারতীয় স্তরে এধরণের প্রকল্পের রূপক ছিলেন জয়ললিতা। বছর ৮ আগে তামিলনাড়ু তে শুরু করেছিলেন এই প্রকল্প। নাম ছিল আম্মা ক্যান্টিন। তার পর সেই প্রকল্প ছড়িয়েছে গোটা রাজ্যে। নিজদের মত করে উদ্যোগ নিয়েছেন সকল রাজ্যের মানুষ। এবার বাংলা নিল সেই উদ্যোগ। যদিও ইতিমধ্যেই বিরোধী দল “গিমিক” বলে মার্ক করেছেন, কেউ বা বলছেন শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ডুব্লিকেট। কেউ বলছে ভোটের আগের নতুন খেলা। তবে ওয়াকিবহাল মহল বলছে, যদি অনুসরণ হয়ই বা, বা ভোটের আগের মাস্টারস্ট্রোক, সাধারণ মানুষের স্বার্থে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কর্তব্যের সমীকরণের ওপর কিছুই যেতে পারেনা।