সইফ আলি খান (saif Ali khan) ও অমৃতা সিং (Amrita singh) -এর বিয়ে হয়েছিল প্রায় হঠাৎই। প্রথমে শর্মিলা ঠাকুর (sharmila tagore) মেনে নেননি এই বিয়ে। ফলে বয়সে অনেকটাই বড় অমৃতার সঙ্গে সইফের বিয়ে হয়েছিল নিতান্ত সাদামাঠা ভাবে। পতৌদি প্যালেসের ঐতিহ্য ভেঙে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ না করেই শ্বশুরবাড়িতে পা রেখেছিলেন অমৃতা। তবে মন দিয়ে সংসার করার জন্য কেরিয়ারের পিক টাইমে থাকা অমৃতা ছেড়ে দিয়েছিলেন অভিনয়। একসময় শ্বশুরবাড়ির সকলের মন জয় করে নিয়েছিলেন অমৃতা। নিজে অভিনয় ছেড়ে দিলেও সইফের কঠিন লড়াইয়ের সময় তাঁর পাশে ছিলেন অমৃতা। সেই সময় হ্যান্ডসাম সইফ আলি খান-কে বলিউডে বিদ্রুপ করে সবাই নাম দিয়েছিলেন ‘শেফালি খান’। ক্রমশ সইফের হাতে কাজের সংখ্যা কমতে থাকে। একসময় মানসিক ডিপ্রেশনের শিকার হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন সইফ। সেই সময় তাঁর পাশে ছিলেন তাঁর বাবা মনসুর আলি খান পতৌদি (Mansoor ali khan pataudi) যিনি ক্রিকেটের ময়দানে টাইগার পতৌদি (Tiger pataudi) নামেই বেশি পরিচিত। সইফের পাশে ছিলেন অমৃতাও। অমৃতা সইফকে ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করেছিলেন। স্বামীকে অভিনয়ের খুঁটিনাটি মন দিয়ে শিখিয়ে সইফকে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করেছিলেন অমৃতা।
1991 সালে অমৃতার সঙ্গে সইফের বিয়ের পাঁচ বছরের মাথায় জন্ম হয় সারা আলি খান (sara ali khan)-এর। এরপর 2001 সালে জন্ম হয় ইব্রাহিম (Ibrahim)-এর । কিন্তু ইব্রাহিমের জন্মের পর থেকেই সইফ জড়িয়ে পড়েন একাধিক বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে। ফিল্ম ম্যাগাজিনে সইফের এইসমস্ত সম্পর্কের কথা প্রকাশিত হলে অমৃতা পৌঁছে গিয়েছিলেন সেই ম্যাগাজিনের অফিসে। স্বামীর প্রতি ছিল অমৃতার অটুট বিশ্বাস। সেই অটুট বিশ্বাস থেকেই তিনি সইফের সম্পর্ক নিয়ে আর্টিকল ছাপার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন।
কিন্তু অমৃতার ভালোবাসা আটকাতে পারেনি সইফকে। ফলে বিয়ের 13 বছর পরে সইফ ও অমৃতার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। সেই সময় সারার বয়স ছিল 9। পরবর্তীকালে মা-বাবার বিচ্ছেদ সম্পর্কে বলতে গিয়ে সারা জানিয়েছেন, পতৌদি পরিবারে থাকাকালীন অমৃতাকে অনেক কিছুই সহ্য করতে হয়েছে। শর্মিলা কোনদিন মানতে পারেননি অমৃতাকে। কারণ বিয়ের অনেক আগে অমৃতা শর্মিলার বিশেষ স্নেহভাজন রবি শাস্ত্রী (Rabi shashtri)-র সঙ্গে লিভ-ইন করতেন। কিন্তু অমৃতা রবিকে বিয়ের কথা বললে রবি সম্পর্ক ভেঙে দেন। এর বহুদিন পরে সইফের সঙ্গে অমৃতার বিয়ে হলেও শর্মিলা ভুলতে পারেননি অমৃতার পূর্বের সম্পর্কের কথা। কিন্তু টাইগার পতৌদি অমৃতাকে পছন্দ করতেন। সইফ-অমৃতার বিচ্ছেদ টাইগারকে মানসিক আঘাত দিয়েছিল।
সারা দেখেছিলেন বিবাহ বিচ্ছেদের পরেও ভেঙে পড়েননি তাঁর মা অমৃতা। আজও সারা যখন কোনো কারণে হতাশ হয়ে পড়েন, তখন তিনি মায়ের কাছেই তাঁর সব কথা খুলে বলেন। সারাকে তাঁর ঠাকুমা শর্মিলার সঙ্গে দেখা যায় না কারণ অমৃতার ক্ষেত্রে রক্ষণশীল মনোভাব পোষণ করলেও যখন 2012 সালে সইফ ও করিনা (kareena Kapoor khan)-এর বিয়ের পর শর্মিলা কিন্তু করিনার স্বাধীনচেতা মনোভাব মেনে নিয়েছেন। অমৃতার সঙ্গে সইফের বয়সের অনেকটাই ফারাক ছিল। একইভাবে করিনার সঙ্গেও সইফের বয়সের ফারাক অনেকটাই। শর্মিলার এই দ্বিচারিতা কষ্ট দিয়েছে সারাকে। তবে সারা ও অমৃতার সঙ্গে করিনার সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো। এমনকি সইফের দুই বোন সোহা (Soha ali khan) ও সাবা (saba ali khan) অমৃতাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করেন। সইফ দ্বিতীয়বার বিয়ে করলেও অমৃতা আর বিয়ে করেননি। বিচ্ছেদ হয়ে গেলেও আজও সইফের জীবনে অমৃতার স্থান রয়েছে। কোনো সমস্যায় পড়লেই তাঁর প্রিয় বন্ধু ‘ডিঙ্গি’-র কাছে ছুটে যান সইফ। প্রসঙ্গত, অমৃতার ডাকনাম ‘ডিঙ্গি’। সারা চান, সারাজীবন তাঁর মায়ের সঙ্গেই থাকতে যাতে সবার একাকীত্ব দূর করা তাঁর মা অমৃতা সিং নিজে যেন আর একা না হন।