কয়েকদিন আগে আমরা দেখতে পেয়েছিলাম বিহারের একজন বিধায়ককে যার কাছে সম্বল বলে তেমন কিছুই ছিল না। এবারে সেরকমই একটি ঘটনা দেখা গেল পশ্চিমবঙ্গে। ভারতীয় জনতা পার্টির শালতোড়া বিধানসভা আসনের জন্য নির্বাচিত বিজেপি প্রার্থী হলেন চন্দনা বাউরী। এই চন্দনা বাউরি এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সব থেকে দরিদ্র প্রার্থী বলে জানা যাচ্ছে। তার বাড়িতে একটা শৌচালয় পর্যন্ত নেই। তার বাড়িতে নেই কোন পানীয় জলের ব্যবস্থা। তবুও মানুষের জন্য কাজ করার উদ্যোগে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির হয়ে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন বাঁকুড়া শালতোড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে।
হলফনামায় জানানো হয়েছে চন্দনা বাউরী র মোট স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ মাত্র ৩১ হাজার ৯৮৫ টাকা। তার স্বামী শ্রাবণ বাউড়ির স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৩০ হাজার ৩১১ টাকা। চন্দনার ব্যাংক একাউন্টে মাত্র রয়েছে ৬,৩৩৫ টাকা। শ্রাবণের ব্যাংক একাউন্টে আছে মাত্র ১,৫৬১ টাকা। তাদের বাড়িতে রয়েছে একটা অ্যালুমিনিয়ামের বাক্স। আছে একটা টেবিল, এছাড়া কয়েকটা খাতা পত্র রয়েছে আর আছে কিছু কাঠের তক্তা। শ্রাবণ বাউরী পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। যদি তার কাছে কাজ আসে তবে দিনে সর্বাধিক ৪০০ টাকা উপার্জন করেন তিনি। বর্ষাকাল আসলে সেটুকু টাকাও উপার্জন করা সম্ভব হয় না।
এছাড়া তার বাড়িতে আছে তিনটি ছাগল, এবং তিনটি গরু, তাদের সঙ্গেই এক ঘরে বসবাস করেন চন্দনার পরিবার। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে শালতোড়া আসনটি নির্বাচিত হয়েছে তপশিলি জাতি ও উপজাতির জন্য। চন্দনা বাউরি বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন সেই খবর শোনার পর থেকেই তিনি প্রচারে কোন খামতি রাখছেন না। জয়ের বিষয়ে অবশ্য চন্দনা অত্যন্ত আশাবাদী। তিনি বলছেন, বিধায়ক হয়ে গরিবদের পাশে দাঁড়ানোর তিনি চেষ্টা করবেন। বিজেপি মহিলা বান্ধব দল। বিজেপি ক্ষমতায় আসলে মহিলাদের জীবন আরও সুরক্ষিত হবে। তাদের উন্নয়ন করা তার লক্ষ্য থাকবে।
এছাড়াও তার আশা, যেন তার ছেলে মেয়েরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন। মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় চন্দনার বাবা মারা গিয়েছিলেন। তারপর বিয়ে হয়ে যায়। ক্লাস ইলেভেনে শ্রাবণ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারপর ক্লাস টুয়েলভে তার সন্তান আসে। তার ফলে তিনি আর ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারেননি। তার ইচ্ছা, তার সন্তানেরা যেন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন। এই অদম্য ইচ্ছাশক্তি এবং মানুষের জন্য কাজ করার অঙ্গীকার নিয়ে এবারের শালতোড়া আসনের বিজেপি প্রার্থী চন্দনা বাউরী।