2015 সালে পরিচালক অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায় (Agnidev chatterjee ) ও সুদীপা(sudipa)-র বিয়ে হয়। সুদীপা জনপ্রিয় টেলিভিশন অ্যাঙ্কর ও অভিনেত্রী। এছাড়াও ‘সুদীপার রান্নাঘর’ নামে তাঁর একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। 2018 সালের 12 ই নভেম্বর সুদীপা ও অগ্নিদেবের পুত্রসন্তান আদিদেব (Adidev)-এর জন্ম হয়। সুদীপার আদরের ‘আদি’ বেশ দুষ্টু। একরত্তি আদির পছন্দ কার্টুন চরিত্র ‘ছোটা ভীম’। তাই গত বছর নভেম্বর মাসে নিজের বাড়িতেই ছোটা ভীমের কাটআউট দিয়ে সাজিয়ে আদির ঘরোয়া জন্মদিন পালন করেছিলেন সুদীপা।
তবে আদি দুষ্টুমিতে সেরা। এমনিতেও তার ছবি তুলতে গেলে তার পিছনে দৌড়ে তাকে ধরতে পারলে তবেই তাকে ক্যামেরাবন্দী করা যায়। তা, এহেন আদিদেব সম্প্রতি ছোট্ট ধুতি-পাঞ্জাবি পরে মায়ের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিল। সেখানে এসেছিলেন মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty) ও শুভশ্রী গাঙ্গুলী (subhasree ganguly)। মিষ্টি আদিদেবের পিছনে অনেকক্ষণ ধরে ছুটে তাকে বাজেয়াপ্ত করেন মিমি। কিন্তু আদি মিমির সঙ্গে ছবি তুলতে গিয়ে বিরক্তিসূচক মুখভঙ্গি করলে মিমি ও উপস্থিত সবাই হেসে ফেলেন। অপরদিকে শুভশ্রীর সঙ্গে ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ গোছের মুখ করে ছবি তুলেছে আদি।
আদির ছবিগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে সুদীপা লিখেছেন, নিজের ওল্ড ক্রাশ শুভশ্রীর প্রতি আদি খুব ‘লয়্যাল’ হয়ে ছবি তুলেছে। তবে মিমির সঙ্গে ছবি না তোলার জন্য একদিন ও আফশোস করবেই। নেটিজেনদের পছন্দ হয়েছে আদিদেবের ছবিগুলি। ওদিকে হয়তো আবার ইউভান চক্রবর্তী (yuvan Chakraborty) রেগে গেল তার মা শুভশ্রীর সঙ্গে কাউকে আদর ভাগ করে নিতে দেখে।
কিন্তু এত সব কিছুর পরেও সুদীপার মন খারাপ। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মন খারাপের কথা শেয়ার করে সুদীপা লিখেছেন, কোনো কিছু ছেড়ে দেওয়ার সময় তিনি ভাবেন, কেন তিনি এই কাজটি শুরু করেছিলেন। সুদীপা মনে করেন, খারাপ সময় প্রকৃতপক্ষে ভালো সময়ের বার্তাবাহক। সুদীপার এই পোস্ট শেয়ার করার পর থেকেই নেটিজেনদের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে, তাহলে কি সুদীপা এবার বিনোদন জগৎ থেকে সরে যেতে চলেছেন! লকডাউনের পর থেকে বিনোদন জগতে পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হয়ে গেছে। অধিকাংশ শিল্পী ও কলাকূশলীদের হাতে কাজ নেই। যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের পারিশ্রমিক যথেষ্ট কম দেওয়া হচ্ছে। অপরদিকে রাজনীতিকে কেরিয়ার অপশন হিসাবে বেছে নিচ্ছেন অধিকাংশ টলি-শিল্পী। ফলে সুদীপাও এই মুহূর্তে কেরিয়ার পরিবর্তন করার কথা ভাবছেন কিনা তা নিয়ে চলছে জোর তরজা। তবে সুদীপা এখনও এই বিষয়ে কিছু স্পষ্ট করেননি।
কিন্তু যে রাঁধে, সে সূচে সুতোও পরায়, তা সে তার যতই মন খারাপ হোক না কেন। তাই এবার সুদীপার তৈরী পোশাক পরে পুরস্কারের মঞ্চে উঠলেন প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি(prasenjit chatterjee)। ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই জানেন না, সুদীপা ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। অ্যাঙ্করিং তাঁর পেশা, রান্না তাঁর নেশা, পোশাক তৈরী তাঁর শখ। কাছের মানুষদের নিজের ডিজাইন করা পোশাকে সাজাতে ভালোবাসেন সুদীপা। এর আগে অগ্নিদেব ও নিজের দাদাদের সাজিয়েছেন নিজের ডিজাইন করা পোশাকে। প্রসেনজিৎ-কেও নিজের দাদা বলেই মানেন সুদীপা। ফলে এবার তিনি প্রসেনজিৎ-এর জন্য তৈরী করেছেন হলুদ রঙের পাঞ্জাবী ও সোনালি ধাক্কাপাড়ের কালো মটকা ধুতি। পাঞ্জাবীর বুকে বিভিন্ন গ্রামীণ চিত্র কালো সুতোর মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন সুদীপা। তবে এই পোশাকের সঙ্গে মানানসই জুতো না দেওয়ার জন্য আফশোস করেছেন সুদীপা। তিনি বলেছেন, পরের বার পোশাকের সঙ্গে মানানসই জুতো ডিজাইন করবেন প্রসেনজিৎ-এর জন্য।
তবে প্রসেনজিৎ এতেই খুশি। তিনি নিজেই পোশাকের সঙ্গে মানানসই করে একটি কালো নাগরাই পরেছেন। সুদীপার দেওয়া পোশাক পরে ইন্সটাগ্রামে ছবিও শেয়ার করেছেন প্রসেনজিৎ। ছবি শেয়ার করে ক্যাপশন দিয়ে সুদীপাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। চলতি বছরের ‘স্টার জলসা পরিবার অ্যাওয়ার্ড’-এর মঞ্চে সুদীপার দেওয়া এই পোশাক পরেই উপস্থিত হয়েছিলেন প্রসেনজিৎ।
এত গুণী হওয়া সত্ত্বেও সুদীপাকেও ট্রোলড হতে হল। সম্প্রতি সাদা রঙের জামদানি ও সোনার গয়না পরে ছবি শেয়ার করেছিলেন সুদীপা। সেই ছবিতে কমেন্ট করে একজন মহিলা লিখেছেন, অগ্নিদেবের সঙ্গে সুদীপার বিয়ে হয়েছে বলেই সুদীপা সোনার গয়নায় নিজেকে মুড়িয়ে রাখতে পারেন। সুদীপা বলেছেন, মেয়েরাই মেয়েদের ছোট করেন। একটি সোনার গয়না কেনার ক্ষমতা তাঁর নিজের রয়েছে। অপর একজন মহিলা বলেছেন, সুদীপার মতো রঙিন জীবন সবার নয়। লকডাউনে কাজ হারিয়ে পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য যে কষ্ট করতে হয়, তা বোঝার ক্ষমতা সুদীপার নেই। সুদীপা পাল্টা জবাব দিয়ে বলেছেন, অপরের কষ্ট বুঝতে মানসিকতার প্রয়োজন হয়।