হিন্দু ধর্ম হোক, কিংবা মুসলিম ধর্ম, মানবতাই কিন্তু শেষ কথা। মানবতার উর্ধ্বে কোন দিন কোন ধর্মের স্থান হতে পারে না। এবার সেই মানবতার টানে করোনাভাইরাস আক্রান্ত মুসলিম রোগীর কানে ইসলামের পবিত্র বাণী শোনালেন একজন হিন্দু ডাক্তার। ওই মহিলা ডাক্তার তিনি এটাকে শুধুমাত্র একটি হিউম্যান অ্যাক্ট হিসেবে চিহ্নিত করলেন। কেরলের পালাকারের সীমানা হাসপাতালের ডাক্তারের মানবিকতা ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতে জনপ্রিয় হয়ে পড়েছে।
নেটিজেনদের আকর্ষনের বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছেন ডাক্তার রেখা কৃষ্ণা। তিনি জানালেন, ২ সপ্তাহ আগে তাদের হাসপাতালে একজন রোগী ভর্তি হয়েছিলেন করোনাভাইরাস নিয়ে। তিনি ভেন্টিলেটরে ছিলেন। দীর্ঘদিন হয়ে গিয়েছিল তিনি পরিবারের মানুষের সঙ্গে দেখা করতে পারছিলেন না কারণ আইসিইউতে এই মুহূর্তে পরিবারের লোকেদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। রোগীর অবস্থা দিনে দিনে ক্রমেই খারাপ হতে শুরু করেছিল।
ডাক্তার দাও যখন নিজেদের হাল ছেড়ে দেন তখন বাড়ির লোকেদের কাছে এই বিষয়টি জানানো হলো। রেখা কৃষ্ণা সেই মুহূর্তেই বুঝতে পারেন ওই রোগীর হার্টবিট এবং নাড়ির স্পন্দন একেবারে ক্ষীণ হয়ে গেছে। তারপরেই রেখা অকপটে জানালেন, তিনি সমস্ত বিষয়টি বুঝে তার কানের সামনে কলমা পড়তে শুরু করলেন।
রেখা বললেন, “আমি দেখলাম কিছুক্ষণ হলো তিনি গভীর শ্বাস নিলেন। তারপর নিজের মাথাটা এলিয়ে দিলেন।” ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়াতে একেবারে আগুনের মত ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু হিন্দু ডাক্তার হিসেবে তিনি কিভাবে কলমা শিখলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে রেখা জানালেন,” আমি এটা পরিকল্পনা করে আসিনি। আমার দুবাইয়ের জন্ম আর বড় হওয়া। আমি জানি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের এই সমস্ত রীতি। তবে আমি নিজের এই আচরণকে কোনভাবেই ধার্মিক আচরণ হিসেবে মনে করছি না। এটা সম্পূর্ণ মানবিকতার প্রয়াস। এই মারণ রোগের কবলে পড়ে কেউ তার বাড়ির লোকেদের সঙ্গে দেখা করতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাড়ানো আমাদের কর্তব্য।”