প্রতিদিন সন্ধ্যে ৭টা বাজলেই এই সুদর্শন পুরুষকে আমরা টেলিভিশন পর্দাতে দেখতে পাই। এনি শ্রীময়ীর সব প্রবলেম নিমেষে সলভ করে দেন। হ্যাঁ ইনি আর কেউ নন দর্শকদের রোহিত সেন। শ্রীময়ী ধারাবাহিকে রোহিত সেন যেমন স্পষ্ট বক্তা তেমনই আসল জীবনেও বরাবরই স্পষ্ট বক্তা এই অভিনেতা। টোটা রায়চৌধুরী টলিউডে অভিনেতার সাথে সুদর্শন চেহারর জন্য বেশ খ্যাত। আর তিনি সোজা কথা সোজা ভাবে বলতে বেশি পছন্দ করেন। তবে টলিউডের শান্ত শিষ্ট আর মার্জিত অভিনেতাদের মধ্যেও একজন তিনি।
টোটা রায়চৌধুরী এখন শ্রীময়ী ধারাবাহিকের পাশাপাশি ওয়েব সিরিজে ও কাজ করছেন। সম্প্রতি সৃজিত মুখোপধ্যায়য় পরিচালিত ‘ফেলুদা’-র ভূমিকায় টোটার অভিনয় দর্শকদের কাছে বেশ প্রশংসনীয় ছিল। অন্যদিকে রোহিতের চরিত্রের জন্য শ্রীময়ী ধারাবাহিকের টিআরপি ও বেশ ভালো। তবে টোটাও একদিন নিজের কেরিয়ারের শুরুতে টলিউডে পক্ষপাতিত্ব আর স্বজনপোষণের স্বীকার হয়েছেন। এবার এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে কথা বললেন অভিনেতা।
তিনি বলেন, এই সিনে ইন্ড্রাস্টিতে বরাবর স্বমহিমায় বিচরণ করে এসেছে নেপোটিজম। প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও বহু উঠতি অভিনেতা, এমনকি প্রতিষ্ঠিত অভিনেতাদের নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে নানান কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। এই স্বজনপোষণতার স্বীকার হয়েছে টোটা নিজেও। তিনি স্বীকার করেছেন, এই ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায়শই কঠিন লড়াইয়ের সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। এমন ও অনেক সময় হয়েছে, তিনি কোনো সিনেমাতে কাজ করবেন তা পাকা কথা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু শেষমুহূর্তে কোনও ছবি থেকে তিনি বাদ পড়েছেন। তাঁর পরিবর্তে এসেছেন অন্য অভিনেতা।
এই পরিবর্তন হওয়ার কারণ ও তিনি বলেছেন। তিনি যে ছবির কাজ থেকে বাদ পড়তেন সেই ছবির নায়কের কোনো ভাবে তাঁকে পছন্দ হয়নি। এই নানান হীনমন্যতা বোধ থেকেই ছবির প্রযোজকের কাছে আবদারে তিনি বাদ পড়তেন। আবার কোনো সিনেমার নায়িকার নিজের পছন্দের অভিনেতাকে দিয়ে অভিনয় করাতেন টোটোর জায়গায়। এই নানান কারণে হওয়া কাজেও অভিনয় করতে পারেননি।
তবে এইসব নিয়ে টোটা থেমে থাকেননি। এগিয়ে গিয়েছিলেন। ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত ‘চোখের বালি’ ছবিতে তাঁর অভিনয় অনেক বড় ব্রেক আনে। টোটার অভিনয় দেখে প্রশংসা করেছিলেন বলিউডের কিংবদিন্তী অমিতাভ বচ্চন, নাসিরুদ্দিন শাহ। তবে চোখের বালি মুক্তির পর ও অভিনেতারা হাতে ছমাস কোনো কাজ ছিলনা। অথচ সেই সিনেমার সহ অভিনেতারাও অনেক সিনেমাতে কাজ করছিলেন। তবে অনেক ছবিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে কাজ করেছেন অথচ ছবির পোস্টারে ছিল না তাঁর কোনো ছবি। এরপর টোটা জানতে পারেন নায়কের নির্দেশ মেনেই তিনি বাদ পড়েছিলেন পোস্টার থেকে।
তবে তাঁর সাথে এত খারাপ কাজ হলেও ভালো কিছু ছবিতে কাজ ও করেছেন। যেমন পরিচালক সুজয় ঘোষ থেকে শুরু করে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সাথে কাজের অভিজ্ঞতা আছে। তিনি আবার দক্ষিণী আর বলিউডের ছবিতে কাজ করে প্রশংসা পেয়েছেন। তিনি মনে করেন প্রত্যেক অভিনেতারই উচিত নিজের আঞ্চলিক ভাষার ছবির গন্ডি ছাড়িয়ে আরও বড় বৃত্তে অভিনয় করা উচিত। তাহলেই আসল একজন অভিনেতা হিসেবে পরিপূর্নতা লাভ করা সম্ভব।