কিছুদিন আগে থেকেই মনে হচ্ছিল এবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় রাজনীতিতে পা রাখতে চলেছেন। আর আজকে নবান্নের সভাঘরে কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইত এর সঙ্গে বৈঠকের পরে সেই রাজনৈতিক সম্ভাবনা আরো ইন্ধন তো পেলই উপরন্তু, এতদিন যে মমতা না হ্যাঁ এর মধ্যে আটকে ছিলেন, তার থেকে বেরিয়ে এসে নিজের মতামত মোটামুটি পরিষ্কারও করে দিলেন।
বিগত নভেম্বর থেকে দিল্লির সিংঘূ সীমান্তে লাগাতার কৃষক আন্দোলন চলছে। আর সেই আন্দোলনের পুরোধা নেতার সঙ্গেই আজকে বৈঠকে বসলেন বাংলার অগ্নিকন্যা। একুশ বিধানসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরকে একেবারে ধূলিসাৎ করে দিয়ে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় মমতা। চেয়ারে আসা মাত্রই বিজেপির বিরুদ্ধে একেরপর এক হুংকার দিয়েই চলেছেন। তারপর থেকেই মাইক্রব্লগিং প্ল্যাটফর্ম টুইটারে ট্রেন্ড করতে শুরু করে দেয় বাঙালি প্রধানমন্ত্রীর একটি হ্যাশট্যাগ। যা দেখে একটু হলেও চাপে পড়েছে বিজেপি।
আজকের বৈঠকটি তাই শুধু কৃষক আন্দোলনের দিক থেকে না মমতার জাতীয় রাজনীতির ময়দানে প্রথম মাইলফলক হিসাবেও বিবেচনা করছেন অনেকে। কৃষক নেতার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বললেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মোদিকে গদি থেকে সরানো তার প্রধান লক্ষ্য। এছাড়াও সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রামের কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে মমতার কথায়, “আমরা কৃষকের আন্দোলনকে সমর্থন জানাই। আমরা সবসময় কৃষকদের পাশে আছি। কৃষক আন্দোলন আরো জোরালো করা দরকার। অন্য রাজ্যের নেতাদের সঙ্গেও আমি কথা বলেছি। কেন্দ্র যতদিন না কৃষকদের সমস্ত দাবি মেনে নিচ্ছে ততদিন পর্যন্ত আমরা কৃষকদের সঙ্গে আছি।”
তবে কি আপনি এবারের লোকসভা নির্বাচনে ইউপিএ কে নেতৃত্ব দিচ্ছেন? এই প্রশ্নের জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরাসরি উত্তর দিলেন, “আমি শুধুমাত্র মোদিকে সরাতে চাই।” সূত্রের খবর ইতিমধ্যেই ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের জন্য জোর কদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই কারণেই সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার সঙ্গেই ইউপিএ জোটের অনেক শরিক এবারের নির্বাচনে মমতায় বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করছেন। কংগ্রেসের অভ্যন্তরেও অনেকে নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেছেন যেন তিনি এবারের নির্বাচনে ইউপিএর নেতৃত্বে থাকেন। পরিস্থিতি ভালো না বুঝে, বিজেপি নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই সারাদেশে মমতা বিরোধী বার্তা প্রচার করা শুরু করে দিয়েছে। সকলের আচরণে কার্যত স্পষ্ট, এবারের নির্বাচনে মোদি বিরোধী শক্তিতে বেশ বড় জায়গায় থাকতে চলেছেন মমতা।