সমস্ত প্রস্তুতি শেষ, চলতি মাসে লোকাল ট্রেন চালু করতে চাইছে পূর্ব রেল
রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি নিয়ে পৌঁছেছে পূর্ব রেলওয়ে
আগামী ১৫ জুন বিধি-নিষেধের সমস্ত পর্ব শেষ করে আবারো নিজের জায়গায় ফিরতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। আর এবারে লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানাতে চলেছে পূর্ব রেলওয়ে। যখন পশ্চিমবঙ্গে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে এসেছিল এবং প্রত্যেক দিন প্রচুর মানুষ করোনা ভাইরাসের জন্য আক্রান্ত হয়েছিলেন সেই সময় পূর্ব রেলওয়ে এবং দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে রাজ্য সরকারের সাথে পরামর্শ করে বেশ কিছু ট্রেন বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
তারপরে শুরু হয়ে যায় কার্যত লকডাউন এবং সেই সময় শুধুমাত্র কয়েকটি স্পেশাল ট্রেন ছাড়া বাকি কোন ট্রেন চলার অনুমতি ছিল না। এছাড়াও, তারপর শুধুমাত্র স্টাফ স্পেশাল ট্রেনগুলি চালানোর অনুমতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই ট্রেনগুলোতে শুধুমাত্র অত্যন্ত জরুরি বিভাগের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের ওঠার অনুমতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তারপরে ধীরে ধীরে লোকের চাপ বাড়তে শুরু করে। স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য বিভিন্ন দফতরের কর্মীরা এই সমস্ত ট্রেনে উঠতে শুরু করেন। এছাড়া অনেক সময় বহু মানুষ রুজি রোজগারের তাগিদে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর জন্য এই সমস্যার ট্রেনে উঠে দাঁড়িয়ে পড়তেন।
এর ফলে ভিড় বাড়তে শুরু করেছিল। যেখানে রাজ্য সরকার এবং পূর্ব রেলওয়ে মনে করেছিল ট্রেনের সংখ্যা কম হলে ভিড় নিয়ন্ত্রণে থাকবে কিন্তু সেরকমটা হলো না, বরং ট্রেন কম থাকার কারণে গাদাগাদি পরিমাণ আরো বেড়ে গেল। এই কারণে এবারে সম্পূর্ণ পরিষেবা স্বাভাবিক করার আর্জি নিয়ে রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হয়েছে পূর্ব রেলওয়ে। তারা জানিয়েছে যেনো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রেল পরিষেবা স্বাভাবিক করার অনুমতি দেয় রাজ্য সরকার। এছাড়াও এইবারের কার্যত লকডাউন এর কারণে পূর্ব রেলওয়ে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সাধারণত এপ্রিল মাসে প্রতিদিন ৫৬ লক্ষ টাকা আয় হয় পূর্ব রেলওয়ে শুধুমাত্র হাওড়া ডিভিশনে। কিন্তু এই মুহূর্তে পূর্ব রেলওয়ে দৈনিক ক্ষতির পরিমাণটা বোঝা প্রায় অসম্ভব।
এই মুহূর্তে, পূর্ব রেলের হাওড়া শিয়ালদা সব কয়টি শাখা মিলিয়ে ৩৪২টি স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চলছে। এই সমস্ত ট্রেনে ভিড়ের পরিমাণ প্রত্যেক দিন বেড়েই চলেছে। এই সমস্ত ট্রেনের শুধুমাত্র রেল কর্মীদের ওঠার অনুমতি রয়েছে, এবং আরো কয়েকটি জরুরি বিভাগের কর্মীরা উঠতে পারেন। কিন্তু প্রত্যেকদিন নিত্যযাত্রীরা ঐ সমস্ত ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করছেন যার ফলে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।পূর্ব রেলওয়ে জানাচ্ছে যদি ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি হয় তাহলে এই সমস্যাটা হবে না। তাই, রাজ্যের কাছে এই আবেদন। তবে, পুরোটাই বর্তমানে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছে পূর্ব রেলওয়ে।