‘আমি তো ক্যান্সার পেশেন্ট, অপারেশনের রুগী’ সব্যসাচীকে বারবার শোনান অভিনেত্রী! কিন্তু কেন?
নতুন বছরের শুরুর দিকেই বিরাট ঝড় বয়ে গিয়েছে দুজনের জীবনে। দুজনে লড়ছে কঠিন লড়াই। একজন শারীরিক তো অন্যজন মানসিক ভাবে। হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন ঐন্দ্রিলা আর সব্যসাচীর কথা বলছি। কঠিন সময়ে প্রেমিকাকে ছেড়ে নয় বরং আগলে রেখেছেন সকলের প্রিয় বামাক্ষ্যাপা ওরফে সব্যসাচী। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বিতীয়বার ক্যান্সারে অসুস্থ হয়ে পড়েন ঐন্দ্রিলা। প্রথমে জানা গিয়েছিল অভিনেত্রীর ফুসফুসে টিউমার ধরা পড়ে, পরে জানা যায়, তাঁর শরীরে ফিরে এসেছে ক্যানসার। ঐন্দ্রিলার এই লড়াইতে ছায়া সঙ্গী আছেন সব্যসাচী। ভালবাসা মানে পিছু হটা নয়, মুখ ফিরিয়ে নেওয়া নয়, বরং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জীবনের যুদ্ধে পাশে চলার উদাহরণ হলেন সব্যসাচী।
দ্বিতীয় বার ক্যান্সারের খবর পেতেই হাসপাতালের মধ্যে কেঁদে ফেলেছিলেন অভিনেত্রী। সেই সময় সব্যসাচী অভিনয়ের কাজ ভুলে সব কিছু ছেড়ে প্রেমিকার কাছে ছুটে যান দিল্লি। এর পর পরিবার আর সব্যসাচীকে পেয়ে নতুন করে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেন ঐন্দ্রিলা। গত পাঁচ মাস ধরে সেই লড়াই চলছে। আর এই লড়াতে রয়েছে অভিনেত্রীর কাছের মানুষেরা। মে মাসে ঐন্দ্রিলার ফুসফুসে বাসা বাঁধা ক্যানসারাস টিউমারটিকে নিখুঁত দক্ষতায় অস্ত্রপ্রচার করেন চিকিৎসকরা।
ঐন্দ্রিলার শারীরিক নানান আপডেট ফেসবুকের সকল অনুরাগীদের বসঙ্গে ভাগ করে নেন সব্যসাচী। শুক্রবার রাতে প্রেমিকার আবার নতুন শারীরিক আপডেটই দিলেন শুধু তাই না বরং এক লড়াকুমেয়ের জীবনের একটা টুকরো ঝলকও তুলে ধরলেন। সব্যসাচী প্রথমেই জানান, চলতি মাসে ঐন্দ্রিলার ২৫ টা রেডিয়েশন চলেছে। গত শুক্রবার সেই রেডিয়েশন থেরাপি-র পর্ব শেষ হয়েছে। রেডিরেশনের পাশাপাশি এখনো কেমোথেরাপিও চলছে, সেটা জারি থাকবে আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত। এর মাঝে চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু ওষুধপত্রের অদলবদল ঘটে। এবং চিকিৎসার জন্য মাঝে কিছুদিন প্রচন্ড দুর্বল হয়ে পড়েন তিনি৷ এমনকি ওবিসি কাউন্ট অনেক কম থাকার ফলে শরীর অসার হয়ে গিয়েছিল।
বিছানা থেকে নেমে বাথরুম যাওয়ার মতন ক্ষমতা ছিল না অভিনেত্রীর। মায়ের সাহায্য ছাড়া কোনো কাজই করতে পারতেননা তিনি। তবে তাঁর বাবা এবং দিদি পেশায় ডাক্তার এবং মা পেশায় নার্সিং স্টাফ। এটাই অভিনেত্রীর জন্য এক বড় আশীর্বাদ, তা অভিনেতা আজ বোঝেন।
এদিন এই পোস্টে প্রেমিকা ঐন্দ্রিলার এক আবদারের কথাও ভালোবেসে লেখেন তিনি। জানান, কেমনভাবে ঐন্দ্রিলা এই শরীর নিয়ে ‘২ ঘন্টা ধরে ঘেমেনেয়ে বিরিয়ানি রান্না করে, দুই লেজওয়ালা সন্তানদের পিছনে দৌড়ানো বা ধরো ঘরের সব জিনিসপত্র মেঝেতে নামিয়ে আবার সেগুলো গুছিয়ে তুলে রাখা’ অবলীলায় করে বেড়াচ্ছেন ঐন্দ্রিলা। কিন্তু, ‘পৃথিবীর সব থেকে দুরহ, দুঃসাধ্য কাজগুলি, এই যেমন লাইটের সুইচটা বন্ধ করা, বা জানলা বন্ধ করা অথবা ধরো এক কাপ বোর্নভিটা খাওয়া। উরেব্বাবা, চোখে জল এসে যায় কষ্টে। যদি কিছু সব্যসাচী বলতে যান তো তিনবার তাঁকে শুনতে হয়। তখনই তিনি বলে ওঠেন, আমি তো একটা ক্যান্সার পেশেন্ট, অপারেশনের রুগী। একবার ইউটিউবে দেখো গো, আমার জীবনে কত কষ্ট’।
জীবনে অনেক কষ্ট আছে তবে দুজনে নিজেদের
সম্পর্কের রসায়ন এখনো টক-মিষ্টি স্বাদে ভরা। এত শারীরিক কষ্টের মধ্যেও রসবোধটুকু হারিয়ে যেতে দেননি ঐন্দ্রিলা । সারাদিন শুয়ে শুয়ে মোবাইল ঘাঁটেন আর নিজের প্রেমিককে নানা মজার মজার খবর দেন । কোন পোর্টালে তাঁকে নিয়ে কী ভুল ভাল সংবাদ প্রকাশিত হল, তা নিয়ে তিনি মশকরাও করেন। কোনও ইউটিউব চ্যানেলে তাঁর শারীরিক সমস্যা নিয়ে অনেক ভুয়ো সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তা নিয়েও হাসি-ঠাট্টা কমে না নায়িকার । বরং দিন যত যাচ্ছে প্রেমিকার সঙ্গে এমনই খুনসুটি, প্রেম, রাগ-অভিমানে দিন কাটছে সব্যসাচীর । সে কথাই ফেসবুকের ওয়ালে শেয়ার করলেন ‘বামাক্ষ্যাপা’ । এরপর অনুরাগীরাও সব্যসাচীর প্রশংসা করলেন।