বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পরেই ঘর ওয়াপসি করেছিলেন মুকুল রায়। এবারে তারই পিছু ধরে ঘরে ফিরতে চলেছেন তৃণমূলের সাংসদ তথা বর্তমান বিজেপি নেতা সুনীল মণ্ডল। গতকাল রাত্রে অন্ধকারে নয়াদিল্লিতে মুখ ঢেকে মুকুল রায়ের বাড়িতে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই মনে করা হচ্ছিল তৃণমূল কংগ্রেসে তিনি আবারও ফিরে আসতে চলেছেন খুব শীঘ্রই। সেইসমস্ত জল্পনা সত্যি করে সোমবার বিস্ফোরক দাবি করলেন সাংসদ সুনীল মণ্ডল। সরাসরি জানিয়ে দিলেন, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের ফিরে আসতে চলেছেন এবং সর্বোপরি দাবি করলেন তিনি এখনো পর্যন্ত নাকি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে রয়েছেন।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যখন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া একটা ট্রেন্ড হয়ে গেছিল, সেই ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে ছিলেন সুনীলও। একুশের নির্বাচনের আগে নাকি তার দম বন্ধ হয়ে আসছিল, এই কারণে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে তিনি বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ করে। কিন্তু, সময়ের চাকা ঘুরতে না ঘুরতেই আবারো তার দমবন্ধ অবস্থা, তবে এবারের তৃণমূলে নয় বিজেপিতে। তাই আবারো ফিরতি টিকিট কেটে ঘরে ফিরতে চলেছেন সুনীল মণ্ডল।
ঠিক কি দাবি করলেন তিনি? সুনিল মন্ডল এদিন বলেছেন, “আমি সর্বক্ষণ তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই রয়েছি। আমি এতদিন পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ছিলাম এবং এখনো পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে থেকে কাজ করছি। আমি এখনো পর্যন্ত কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিইনি তাই সংসদের বিচারে কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমি তৃণমূলের। আমি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে থেকে কাজ করছি বর্তমানে।” অবশ্য ঘনিষ্ঠ মহলে যে শুধুমাত্র বিজেপিতে দম বন্ধ হয়ে আসার ব্যাপারটা রয়েছে সেরকম কিন্তু নয়। এছাড়াও রয়েছে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী কারণও, ঠিক যে কারনে বিজেপি ছাড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করলেন বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।
ঘনিষ্ঠ মহলে সুনিল মন্ডলের দাবি, নিশীথ প্রামানিককে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী করা হলো, কিন্তু তিনি যোগ্য হওয়া সত্বেও তাকে কোন মন্ত্রিত্ব দেওয়া হলো না, এই কারণেই তিনি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। এবং সেই কারণেই পুরনো দলে ফিরতে চাইছেন সুনীল মণ্ডল। মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করা, তারপরে সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে কাজ করছি, এই দাবি করা, সবকিছু নিয়েই বর্তমানে সরগরম হয়ে রয়েছে রাজ্য রাজনীতি। যদিও বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেছেন, কারো দলে ফেরা আর না ফেরা শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর উপর নির্ভর করছে। তাই বলে দিলাম মানেই যে ফিরে আসা যাবে, সেরকম কিন্তু নয়।