দেশনিউজ

ত্রিপুরা একটা জল্লাদদের উল্লাসমঞ্চে পরিণত হয়েছে, ত্রিপুরার মাটিতে দাঁড়িয়ে হুংকার অভিষেকের

বিজেপি নেতৃত্ব কে চরম কটাক্ষ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের

Advertisement

এবারের পাখির চোখ ত্রিপুরা। ত্রিপুরায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সে রাজ্যে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কনভয় নিয়ে ত্রিপুরায় প্রবেশ করার সময় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বিরোধের সম্মুখীন হলেও ত্রিপুরায় প্রথম সাংবাদিক বৈঠকটা সেরে ফেললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নেত্রীর নির্দেশ বিপ্লব দেব সরকারকে হটানোর হুমকি দিলেন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অভিষেক বন্দোপাধ্যায় চ্যালেঞ্জ রাখলেন, “লড়াই আজ থেকে শুরু হল। ত্রিপুরার মাটিতে তৃণমূল পা রেখেছে। আজকের তারিখটা লিখে রাখুন। আগামী দেড় বছরের মধ্যে উন্নয়নের সরকার প্রতিষ্ঠা করব ত্রিপুরায়। উন্নয়নের কর্মসূচি ত্রিপুরার দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দেবে মা মাটি মানুষের সরকার। ত্রিপুরা এখন জল্লাদের উল্লাস মঞ্চে পরিণত হয়েছে। এটাকে সর্বশক্তি দিয়ে আটকাতে হবে।”

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই তার কথায় বিপ্লব দেবকে সরাসরি আক্রমণ করেছেন। তিনি বার বার উল্লেখ করেছেন, তার গাড়িতে হামলার ঘটনার সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে জড়িত ভারতীয় জনতা পার্টি আশ্রিত গুন্ডারা। তিনি বললেন, “অতিথি দেব ভব বলা হচ্ছিল। কিন্তু আজকে যা নমুনা দেখালো বিজেপি তা আশা করছি আপনারা সবাই দেখেছেন। ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজো করে কর্মসূচি শুরু করতে চেয়েছিলাম। সারা ভারতে প্রসিদ্ধ তীর্থ ক্ষেত্র হিসেবে ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি যেতে মন্দিরে না যেতে পারি তার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা করে রেখেছিল ভারতীয় জনতা পার্টির গুন্ডারা। এরা নাকি আবার হিন্দুত্বের বাহক এবং ধারক। আমার গাড়িতে লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। কলকাতা থেকে আগত তিনজন নিরাপত্তা আধিকারিক অত্যন্ত গুরুতর ভাবে আহত। ১০০ মিটার পরে পরেই রাস্তা অবরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু তাও সমস্ত বাধা বিপত্তি কাটিয়ে মায়ের দর্শন করেছি। আমাদের এভাবে আটকানো যাবেনা। আমাদের যত তাতাবেন আমরা আরো শক্তিশালী হব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল একটা লোহার মত। আমরা ত্রিপুরায় তমসাচ্ছন্ন অবস্থা কাটিয়ে উন্নয়নের সরকার গড়বো।”

পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন যদি সাংসদের উপরে এভাবে হামলা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ কিভাবে আছেন ত্রিপুরায়? তার কথায়, ” সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রথম অন্য কোন রাজ্যে পা রাখলাম। সাংগঠনিক কাজ শুরু করেছি মাত্র কয়েক দিন হয়েছে। তার আগে যারা বড় বড় ভাষণ দিয়ে গণতন্ত্র বাঁচানোর কথা বলছিলেন আজকে তারা কোথায় রয়েছেন? ত্রিপুরার পুলিশ কেন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে? একজন সাংসদ এর উপরে হামলা হয়েছে, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় থাকবে? মায়েদের নিরাপত্তা কোথায়? পুলিশ বলছে আমরা কিছু করতে পারবোনা। তাদের দোষারোপ করব না। স্বৈরাচারী শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে। ”

আগামী ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ইতিমধ্যেই কাজ করতে শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় গিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে শুরু করেছেন প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের বেশ কয়েকজন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল, কিন্তু একাধিক তৃণমূল সাংসদ এবং বিধায়ক সেখানে পৌঁছে লাগাতার বৈঠক করার পরিস্থিতি আরও উত্তাল হয়ে ওঠে। আর এবারে ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার গঠনের লক্ষ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বারবার বলছেন, “সারা ভারতে যদি কেউ বিজেপিকে লেজেগোবরে করে হারাতে পারে সেই দলের নাম শুধুমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস। পুরো বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করে গেলাম, পায়ের তলার ভূমি বাঁচিয়ে নিন। আজ থেকে বিজেপির বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে। সমাজবিরোধীদের সমস্ত খেলা শেষ।এবার শুধু মা-মাটি-মানুষের খেলা হবে।”

Related Articles

Back to top button