কলকাতা শহরে বর্তমানে সবথেকে বড় সমস্যার মধ্যে একটি হয়ে দাঁড়িয়েছে পেট্রোলপাম্পের সমস্যা। বর্তমানে ট্যাংকারের মালিকদের অবরোধের কারণে শহরের কোন পেট্রোল পাম্পে তেল সরবরাহ হচ্ছে না। ইন্ডিয়ান অয়েল পেট্রোল পাম্প শহরের সব থেকে বেশি থাকে এবং এই কারণেই পেট্রোলের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত পেট্রোলের দাম নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল, এবারে সমস্যা হচ্ছে সরাসরি পেট্রোল পাওয়া নিয়ে।
যদি পেট্রোল ডিজেল ট্যাঙ্কারের মালিকদের সমস্যা তাড়াতাড়ি না মেটানো হয় তাহলে কিন্তু বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে পারে ইন্ডিয়ান অয়েল এর সঙ্গে জড়িত ট্যাংকার মালিকেরা। তাদের দাবি, ইন্ডিয়ান অয়েল এর পক্ষ থেকে তাদের নতুন টেন্ডারে পরিবহন খরচ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই কারণেই মূলত তারা অবস্থান বিক্ষোভ করতে শুরু করেছেন। বুধবার বিকেল থেকেই শুরু হয়ে গেছে এই সমস্যা।
হাওড়ার মৌরিগ্রাম ডিপো থেকে ইন্ডিয়ান অয়েল পেট্রোল আর কেউ তুলছেন না। এর ফলে রাজ্যে শহরের কোথাও পেট্রোল পাম্পে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। ইন্ডিয়ান অয়েল পেট্রোল পাম্প কার্যত বন্ধ। করে বড় বড় পেট্রল পাম্পগুলি কিছুটা পরিমান পেট্রোল জোগাড় করে রেখেছে কিন্তু তাও খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে।
এ প্রসঙ্গে ধর্মতলার একটি পেট্রোল পাম্পের কর্মীরা বললেন, তারা বুধবার শেষ পেট্রোল জোগাড় করতে পেরেছিলেন। তারপর থেকে শুরু হয়ে গেছে বিক্ষোভ এবং তার ফলে তারা আর পেট্রোল জোগাড় করতে পারেননি। বড় পেট্রোল পাম্প হওয়ার কারণে এই পেট্রোলপাম্পে এখনো পর্যন্ত তেলের যোগান রয়েছে। কিন্তু খুব কম সময় পর্যন্ত এই পেট্রোল পাম্পে তেল থাকবে বলেও জানানো হয়েছে কর্মীদের পক্ষ থেকে। যদি এরকম অবস্থায় ধর্মতলার পেট্রোলপাম্পে হয় তাহলে ছোটখাটো জায়গা পেট্রোলপাম্পে ইতিমধ্যেই তালা ঝুলতে শুরু করে দিয়েছে।
যেহেতু ইন্ডিয়ান অয়েল পেট্রোল পাম্প সম্পূর্ণরূপে বন্ধ, তাই এবারে হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম এবং ভারত পেট্রোলিয়াম এর সমস্ত পেট্রোল পাম্প গুলিতে লম্বা লাইন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর ফলে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন হিন্দুস্তান ভারত পেট্রোলিয়াম এর পাম্পের কর্মীরা। তারাও জানাচ্ছেন তারা আর পেট্রোল তুলতে পারছেন না এইভাবে, তাদের ক্ষমতার থেকে বেশি লোক চলে আসছে পেট্রোল নিতে। ফলে কতক্ষণ পর্যন্ত যে হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম এবং ভারত পেট্রোলিয়ামের পেট্রোলপাম্পগুলি তেল দিতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পেট্রল পাম্পগুলি বর্তমানে দুর্গাপুরের দিক থেকে নিয়ে আসার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কিন্তু তাতেও খরচ বেশি। ফলে কবে পর্যন্ত যে পেট্রোল থাকবে সেটা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে সমস্যা।
অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি এই পেট্রোল ট্যাংকারদের মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন। সকলের আশা যেন এই বৈঠকে কিছু রফাসূত্র বেরোয় এবং কলকাতায় পেট্রোলের পরিষেবা আবারো ঠিকঠাক ভাবে চলতে শুরু করে। অন্যদিকে, সূত্রের খবর অনুযায়ী ইতিমধ্যেই ৫ জেলার প্রায় ৩০০ এর পেট্রলপাম্প ড্রাই হয়ে গেছে। পেট্রোল এবং ডিজেল না পেলে গণপরিবহন পর্যন্ত চলবে না। ফলে রীতিমতো সমস্যার মধ্যে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।