লকডাউনে কাজ হারিয়ে স্কুটি হাঁকিয়ে নবদম্পতি বিক্রি করছেন ১০টাকায় মাংসের ঝালমুড়ি!
চিকেন দিয়ে তো ফুচকা খেয়েছেন। অনেকে বাসি মাংস দিয়ে ঘরে মুড়ি মাখা খেয়েছেন কিন্তু কখনো ঝাল ঝাল মাংস দিয়ে ঝাল মুড়ি খেয়েছেন তাও আবার ১০ টাকাতে। হ্যাঁ অবাক লাগলেও সত্যি। এরকম অভিনব ঝালমুড়ি পাবেন নদীয়ার রানাঘাটে। না কোনো স্থায়ো দোকান নেই, স্কুটি চালিয়ে রানাঘাটের অলি গলি এই ঝালমুড়ি বিক্রি করেন এক নবদম্পতি।
নদিয়ার রানাঘাট আইশতলা গড়ের বাগান এলাকায় এক দম্পতি। নীহাররঞ্জন মজুমদার এবং তাঁর স্ত্রী রূপা মজুমদার। বিয়ে হয়েছে কয়েক মাস। এই লকডাউনের মাঝে অনেকেই পেশা পরিবর্তন করেছে। এই সময় অনেকে নানান খাবারের ব্যবসা করে পেট চালাচ্ছেন। তেমনই নদিয়ার রানাঘাটের নবদম্পতির স্কুটি চালিয়ে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন।
না কোনো সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্ম নয় স্বামী স্ত্রী সমস্ত সরঞ্জাম বেঁধে স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন রানাঘাটের অলি গলি। করোনার জন্য কাজ ছিলনা দুজনের। সেই বেরোজগার পরিস্থিতি সামাল দিতে আর সংসার সামলাতে মোটর গ্যারেজে কাজ করার সময় ধার করে কেনা স্কুটি এবং রূপা দেবীর রান্নার প্রতি ভালোবাসাকে কাজে লাগিয়ে নব উদ্যোগ নেন তাঁরা।
প্রথমে অল্প করে বানিয়ে দু-একদিন বিকেলে ওই দম্পতি ঘুরতে যান নানান পার্ক আর খেলার মাঠে,পাড়ার মোড়ে। অল্প অল্প বিক্রি হতে শুরু হয় এরপর এর ব্যপ্তি গিয়ে গোটা রানাঘাট শহরে। এখন তো অর্ডার করে মানুষ এই মুড়ির অর্ডার ও দেয়। আগে বিকেল পাঁচ টা নাগাদ বেরোতেন এই দম্পতি কিন্তু এখন মানুষের চাহিদা দুপুর তিনটে নাগাদ বেরিয়ে পড়েন। এখন স্কুটির আওয়াজ শুনে কুচো থেকে বড়ো সকলের পছন্দের মুড়ি।
এই মুড়ির এক বিশেষত্ব আছে। মুরগির মাংস ছোট ছোট করে কেটে কিমা করে সেটি রুপা দেবীর শাশুড়ি রান্না করেন। এরপর রুপা নিজের হাতে বিভিন্ন নিজস্ব মশলা দিয়ে তৈরি করেন। এরপর রাস্তায় রাস্তায় সকলের হাতে মাত্র ১০ টাকায় সুস্বাদু মাংসের ঝাল মুড়ি বানিয়ে দেন। আর তা দিয়ে বৌমা রূপা মুড়ি মশলা তৈরি করে, যা কিনা খুবই সুস্বাদু৷ বিভিন্ন জায়গাতেই ভাইরাল হতে শুরু করেছে রূপা ও নিহারের স্কুটি চিকেন ঝাল মুড়ি। রানাঘাট ছেড়ে এখন নানান এলাকাতে এই সুস্বাদু মুড়ির চাহিদা বেড়ে গিয়েছে।