যারা দূরপাল্লায় রেল যাত্রা করেন তাদের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক একটু খবর নিয়ে এসেছে ভারতীয় রেলওয়ে। ভারতীয় রেলওয়ে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, এবার থেকে তারা দূরপাল্লার রেলযাত্রীদের জন্য একটি বিশেষ সুবিধা একেবারে বন্ধ করে দিতে চলেছে। এতদিন পর্যন্ত দূরপাল্লা যাত্রীদের জন্য এই পরিষেবা বিনামূল্যে পাওয়া যাবে বলা হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় রেলের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিকভাবে ওই প্রজেক্ট লাভজনক না হওয়ার কারণে সম্পূর্ণরূপে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে এই প্রজেক্ট।
এই প্রজেক্টটি হলো ভারতীয় রেলওয়ে ওয়াইফাই প্রজেক্ট। ২০১৯ সালে এ প্রজেক্ট লঞ্চ করার মাধ্যমে তৎকালীন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, কেন্দ্র সাড়ে চার বছরের মধ্যে ট্রেনের ভিতর এই ওয়াইফাই সরবরাহ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। যাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে এর আগেও ভারতীয় রেলওয়ে প্রত্যেকটি স্টেশনে বিনামূল্যে গুগলের ওয়াইফাই চালু করা শুরু করেছিল। নতুন প্রজেক্টে স্টেশনের পাশাপাশি সমস্ত দূরপাল্লার ট্রেনে ওয়াইফাই কানেকশন চালু করা হবে বলে জানানো হয়েছিল। পাশাপাশি তৎকালীন রেল মন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, এই প্রজেক্ট সম্পূর্ণরূপে বিনামূল্যে দেওয়া হবে।
কিন্তু বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের কারণে এই প্রকল্পকে সম্পূর্ণরূপে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে ভারতীয় রেলওয়ে তরফ থেকে। একটি সর্ব ভারতীয় সংবাদ সংস্থা একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলন্ত ট্রেনে ইন্টারনেট সংযোগের প্রকল্প সম্পূর্ণরূপে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে। এই প্রকল্পটির ভারতীয় রেলের ক্ষেত্রে একেবারে লাভজনক নয়। চলতি সংসদের সরকার বিষয়টি কথা বলেছে বলে জানিয়েছে ওই প্রতিবেদনে। লোকসভায় একটি প্রশ্নের উত্তরে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, পাইলট প্রজেক্ট এর আওতায় হাওড়া নয়া দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস এর স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মাধ্যমে ওয়াইফাই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু এই পাইলট প্রজেক্ট চালানোর জন্য যে টাকার প্রয়োজন আছে এবং যে রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন আছে সেরকম টাকা কিন্তু আসছে না। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তেমন কোনো লোক পাওয়া যাচ্ছে না, পাশাপাশি ব্যান্ডউইথ চার্জ এবং আরো অনেক কিছু বিষয় নিয়েই বেশ কিছুটা সমস্যার মধ্যে রয়েছে ভারতীয় রেলওয়ে। ট্রেনে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন তাদের ক্ষেত্রে একটি আলাদা ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করতে হবে। এই ব্যান্ডউইথ প্রথমে যতটা দেওয়া হয়েছিল ততটা পর্যাপ্ত নয়। পাশাপাশি, ভারতের ক্ষেত্রে এখনো ট্রেনের মধ্যে পর্যাপ্ত ইন্টারনেট পরিষেবা দেবার মত সাশ্রয়ী প্রযুক্তি আসেনি। এই কারণেই মূলত এই বিনামূল্যে চালানোর পরিষেবা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় রেলওয়ে।