একে একে বন্ধ হতে চলেছে শহর কলকাতার একের পর এক সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হল। এবার বন্ধ হতে চলেছে ৮৫ বছরের চিরপুরাতন হল প্যারাডাইস। কলকাতার ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই সিনেমা হলের নাম। কলকাতার গ্লোব, লাইটহাউজ, নিউ এম্পেয়ার এই হলগুলি যদি হলিউড ছবি দেখানোর প্রসিদ্ধ ছিল তেমনই বলিউড ছবি দেখানোর জন্য বিখ্যাত ছিল প্যারাডাইস।
প্যারাডাইসের তরফে সুনীত সিং জানিয়েছেন, করোনার জন্য টানা দুই বছরের কাছে ব্যবসায়ে লোকসানে চলার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে হল মালিককে। সিনেমা হল পুরোপুরি বন্ধ হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি তবে আলোচনা চলছে। কিন্তু এখন অন্যান সিনেমা হল খুললেও এই হলে আপাতত, কোনও সিনেমাই দেখানো হবে না। তবে ভবিষ্যতে এই সিনেমা হলের জায়গায় শপিং মল হবে কিনা সে বিষয়ে স্পষ্ট করেননি প্যারাডাইস হলের কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, এই সিনেমা হল ১৯৩৬ সালে ‘অচ্যুত কন্যা’ সিনেমা দিয়ে উদ্বোধন হয়। আর সেদিন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সাদা কালো দিয়ে শুরু হয় এই সিনেমা হলের যাত্রা। সাদা কালো পেরিয়ে রঙিন যুগেও রমরমিয়ে চলে এই হল। রাজ কাপুরও পা রেখেছিলেন এই সিনেমা হলে। এখন সব ইতিহাস। সব পুরোনো স্মৃতিকে বাক্স বন্দি করে বন্ধ হল প্যারাডাইস সিনেমা হল। সত্তর দশকের শোলে থেকে এখনকার শোলে থ্রিডি দুই ছবি ছিল হাউসফুল। আর সেই যুগের অবসান ঘটতে চলেছে।
এর আগে ধর্মতলা চত্বরে একের পর এক বন্ধ হয়েছে ঐতিহ্যবাহী কিছু সিনেমা হল যেমন এলিট, রক্সি, লাইট হাউজ, গ্লোব, চ্যাপলিন। আর এবার প্যারাডাইস বন্ধ হওয়ায় ধর্মতলা চত্বরের সিঙ্গল স্ক্রিনের ইতিহাসের এক বড় অধ্যায়ের শেষ হতে চলেছে। এক সময় এই প্যারাডাইস বড় স্ক্রিন আর দারুণ সাউন্ড সিস্টেমের জন্য আলাদা করে নজর কেড়েছিল। তবে আজ সবই ইতিহাস।