চারিদিকে খুঁজলে সিনেমাপ্রেমী মানুষের অভাব হবে না। তবে সিনেমা দেখে কেউ ভালোটা গ্রহণ করেন, কেউবা খারাপটা। সিনেমা দেখে কজন অনুপ্রাণিত হন? একথা জিজ্ঞাসা করলে বেশিরভাগের উত্তর না-ই হবে। তবে রাজস্থানের এক যুবকের খোঁজ মিলেছে যিনি বলিউড সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে পুলিশ কনস্টেবল থেকে আইপিএস অফিসার হয়েছেন। সানি দেওল অভিনীত ‘ইন্ডিয়ান’ ছবি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের স্বপ্নপূরণ করেছেন এক যুবক। সেই যুবকের নাম মনোজ রাওয়াত। আজ তার কথাই জানাবো আপনাদের।
যে কোন ক্ষেত্রে সাফল্য পেতে গেলে প্রয়োজন অদম্য মনের জোর ও ইচ্ছাশক্তি। পাশাপাশি প্রয়োজন দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে যাওয়ার ক্ষমতা। রাজস্থানের জয়পুরের একটি গ্রাম শ্যামপুরার বাসিন্দা তিনি। ছোট থেকেই সিনেমা দেখার প্রতি অদম্য ঝোঁক ছিল তার। বিশেষ করে পুলিশের চরিত্রের উপর কেন্দ্র করে যে সমস্ত ছবিগুলি হত, সেগুলি দেখতে বেশি পছন্দ করতেন মনোজ রাওয়াত। একেবারে এক নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে ছিলেন তিনি। সংসারের হাল ধরতেই সমস্ত দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন নিজের কাঁধে। এরপর মাত্র ১৯ বছর বয়সেই সংসারের দায়িত্ব নেওয়ার খাতিরে রাজস্থান পুলিশের কনস্টেবলের চাকরিতে যোগদান করেন মনোজ রাওয়াত।
তবে চাকরিতে যোগদান করার পরেও তিনি চালিয়ে গিয়েছেন তার পড়াশোনা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাস করেন তিনি। এমএ পাশ করার পর তিনি কনস্টেবলের চাকরি ছেড়ে দিয়ে আদালতে ক্লার্ক হিসেবে যোগদান করেন। এমএ পড়ার সময় এবং রাজস্থানের পুলিশ কনস্টেবলের পদে চাকরি করার সময়ই বলিউডের অঅভিনেতা সানি দেওল অভিনীত ইন্ডিয়ান ছবিটি দেখেন। আর সেই ছবি দেখার পরেই তিনি ঠিক করে নিয়েছিলেন তিনি আইপিএস অফিসার হবেন। ইন্ডিয়ান ছবি যে তার উপর এক বিশাল প্রভাব ফেলেছিল, তা বলাই বাহুল্য।
যেমন ভাবা তেমন কাজ। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিয়েছিলেন সেইসময়। পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় আদালতে ক্লার্কের চাকরিটিও ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। অদম্য মনের জোর ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন মনোজ রাওয়াত। তার এই কঠোর পরিশ্রম তাকে সাফল্য এনে দিয়েছিল। ২০১৭’তে ইউপিএসসি পরীক্ষায় পাশ করেন তিনি। সারা দেশের মধ্যে ৮২৪’তম স্থান দখল করেছিলেন। রাজস্থানের এই যুবক আবারও প্রমাণ করে দিয়েছেন ইচ্ছাশক্তি থাকলে সব সম্ভব। পুলিশ কনস্টেবল থেকে আইপিএস অফিসার হয়ে অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন রাজস্থানের এই যুবক, মনোজ রাওয়াত।