হলিউড বলিউড থেকে টলিউড সবাই একটি গান নিয়েই বর্তমানে চর্চা করে চলেছে, এবং সেই গানটি হল বীরভূমের সামান্য বাদাম বিক্রেতা ভুবন বাদ্যকর এর গাওয়া কাচা বাদাম। বর্তমানে ভুবন বাদাম কাকু হিসেবে বেশি পরিচিত। তবে, তার পুরনো পেশার থেকে বর্তমানে শিল্পী হিসেবে পরিচিতি বেশি। এই কারণেই তিনি এবারে পেশা ছেড়ে দিয়ে বাদাম না বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিলেন। সম্পূর্ণভাবে সঙ্গীত সাধনাতেই মনোনিবেশ করতে চান তিনি।
বর্তমানে কাচা বাদাম গান ছড়িয়ে পড়েছে দেশ থেকে শুরু করে বিদেশেও। বিদেশের বহু মানুষ এই গানের সঙ্গে রিল ভিডিও তৈরি করছেন। হয়তো অনেকেই জানেন না এই রিল ভিডিও কিরকম কি ভাষার গান দিয়ে তৈরি হচ্ছে, কিন্তু এই গানের বর্তমানে ক্রেজ এতটাই বেশি যে, সকলেই এই গান শুনে রীতিমত মুগ্ধ। প্রত্যেকেই নিজের মত করে তার গানের আলাদা আলাদা সংস্করণ তৈরি করছেন। ডাবস্ম্যাশ থেকে শুরু করে নাচের রিলস সবকিছুতেই স্থান পাচ্ছেন ভুবন ব্যাদ্যকর। তাতেই এবারে শিল্প ভুবনের ব্যবসায়ী স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে তার সঙ্গে একটি আর্থিক চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গোধুলিবেলা মিউজিক কোম্পানি।
বীরভূমের ইলামবাজারের একটি সংস্থা গোধুলিবেলা মিউজিক কোম্পানিটি প্রথমবার ভুবনের এই গানটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছিল। এবারে বৃহস্পতিবার ভুবনের সঙ্গে খাতায়-কলমে কপিরাইট চুক্তি স্বাক্ষর করে ফেলেছে এই মিউজিক কোম্পানি। এর ফলে এবার থেকে ওই গান ব্যবহার করার আগে তাদের অনুমতি নিতে হবে প্রত্যেককে। বিনিময়ে পারিশ্রমিক পাবেন ভুবন। জানা যাচ্ছে, ভুবন বাদ্যকর প্রায় ৩ লক্ষ টাকার বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন, যার মধ্যে ইতিমধ্যেই তিনি দেড় লক্ষ টাকা পেয়ে গিয়েছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া দেড় লক্ষ টাকা তার হাতে পাওয়ার কথা। ভুবন বাদ্যকর জানিয়েছেন, এই টাকা পেয়ে গেলে তিনি আর বাদাম বিক্রি করবেন না, বরং সঙ্গীত সাধনায় সময় অতিবাহিত করবেন।
তবে একটি গান যে তাকে রাতারাতি তারকা বানিয়ে দিয়েছে, সে ব্যাপারে ভুবন অত্যন্ত ওয়াকিবহাল। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “আমার গাওয়া গান নানা জায়গায় বাজতে শুরু করেছে। নাইজেরিয়া থেকে শুরু করে বোম্বে সব জায়গাতেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আমার গান। আমার খুব ভালো লাগছে। বলিউড থেকে ডাক পাচ্ছি। দিল্লি এবং অসম থেকে অনেকজন আমাকে বলছে গান গাওয়ার জন্য। বাংলাদেশেও অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আমার গান। আমি অত্যন্ত খুশি। আমার বাংলাদেশ যাবার ইচ্ছা পর্যন্ত ছিল। কিন্তু আমার বউ যেতে দিচ্ছে না।”
অন্যদিকে গোধুলিবেলা মিউজিক কোম্পানির আধিকারিক গোপাল ঘোষ জানিয়েছেন, ভুবনের গান প্রথমে প্রকাশ করলেও কপিরাইট এর ব্যাপারে তারা তেমন ওয়াকিবহাল ছিলেন না। তাই যে যেমন পেরেছেন ভুবনের গান ব্যবহার করে ফেলেছেন। বিভিন্ন জায়গায় ভাইরাল পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে এই গান। তবে এখন তারা বিষয়টি বুঝতে শুরু করেছেন এবং ভবিষ্যতে গান চুরি রুখতে আগামী দিনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছেন তারা। এমনটাই তারা জানালেন একটি সাংবাদিক সাক্ষাৎকারে।