সুপারস্টার মাধুরী দীক্ষিত ক্যারিয়ারের শীর্ষে থাকা অবস্থায় হঠাৎ বিয়ে করে বলিউডকে বিদায় জানিয়ে দিয়েছিলেন। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরি করা প্রতিটি অভিনেত্রীর স্বপ্ন, তবে সবাই এই অবস্থান অর্জন করতে পারে না। মাধুরী তা অর্জন করেও মাঝ পথে বলিউডকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় সবাই অবাক হয়েছিল। আরও আশ্চর্যের বিষয় ছিল যে, তিনি একজন অভিনেতা বা ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিকে বেছে নেন নি জীবন – সাথী হিসেবে। অর্থাৎ এমন একজনকে বিয়ে করেছিলেন যাকে তার পরিবারের সদস্যরা পছন্দ করেছিলেন। 1999 সালে, ‘ধাক-ধাক গার্ল’ তার ভক্তদের হৃদয় ভেঙে দিয়ে ডাঃ শ্রীরাম মাধব নেনের সাথে সাত পাকে বাঁধা পরে চিরতরে মিস থেকে মিস হয়ে যান। এরপর ভারতে থাকার পরিবর্তে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে শুরু করেন, যেখানে তার স্বামী থাকতেন।
বিয়ের পর মাধুরী কাজ করা একেবারে নার বরাবরই করে দিয়েছিলেন। বিয়ের পরে আমেরিকায় স্থায়ী হওয়ার পরে তার জীবন পুরোপুরি বদলে গিয়েছিল। কিন্তু কিছু বছর পর তিনি আবার ফিরে আসে সন্তান ও স্বামী সহ্ ভারতে। তারপর ধীরে ধীরে আবার চলচ্চিত্রের জগতে নিজের জায়গা করতে শুরু করেন তিনি। কিছু আইটেম সংগ, কিছু ছোট খাটো অভিনয় দিয়ে নতুন যাত্রা শুরু করেন। কিছু সময় যেতে না যেতেই আবার পুরনো রূপে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেন এবং ফিল্মে অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে। আবার নিজের কাজ ও নতুন অবতারের দ্বারা জয় করে নেয় সকলের মন। নাচ তার একটি বিশেষ গুণ ও আকর্ষণ যা দর্শক খুব পছন্দ করেন। তাকে এখন বিশেষ করে দান্স শোয়ের বিচারক রূপে দেখে থাকি আমরা।
এরই মাঝে একদিন মাধুরীর মুখে দুঃখের কথা শোনা যায়, তার বিদেশে থাকা কালীন জীবন খুব সুখের ছিল না তাই জানান তিনি। তিনি এমন কিছু অনুভব করেছে যা তিনি আগে কখনও অনুভব করেনি। অন্য বিবাহিত নারীরা নিশ্চয়ই সহজে বুঝতে পারবেন এই কষ্ট দাবি করেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে, মাধুরী দীক্ষিত নেনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের আগে এবং পরে তার জীবনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তিনি জানান, বিয়ে করে অন্য দেশে স্থায়ী হওয়ার পর তার জীবন অনেক বদলে যায়। অভিনেত্রী বলেন, ”আমি খুব নিরাপদ পরিবেশে বড় হয়েছি। আমার বাবা-মা সবসময় আমার সাথে থাকতেন, এমনকি শুটিংয়ের সময়ও, আমার বেশির ভাগ ডিসিশন তারাই নিতেন, আমায় সেসব নিয়ে ভাবতে হতো না। তবে বিয়ে করার পর নিজের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হতো, কারণ সেখানে বাবা মা পাশে ছিলেন না। আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে জীবনের সাথে সম্পর্কিত অনেক কিছু শিখেছি। বিয়ের আগে ভারতে থাকতে আমার চারপাশে সবসময় 20 জন লোক থাকতো, যারা আমায় নিয়ে চিন্তা করতেন। তবে আমেরিকায় আমি সম্পূর্ণ একা হয়ে যায় ও সাবলম্বী হতে শিখেছি। ‘সন্তান লালন-পালন থেকে শুরু করে সব কিছুই আমাকে একাই করতে হয়েছে সেখানে। আমার যখন সাহায্যের প্রয়োজন হতো, আমার মা ও শাশুড়ি মা আমাকে সাহায্য করতে যেতেন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে বোঝার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায় এবং অর্জন করা অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে মানুষ। আজ, আমি আমার চরিত্রগুলির জন্যও আমার অর্জন করা অভিজ্ঞতা গুলি ব্যবহার করি।”
হঠাৎ করে নিজের চেনা জগৎকে ছেড়ে নতুন পরিবেশে নতুন দায়িত্ব সামলে নিতে অনেক কষ্ট হয়েছিল বলেন মাধুরী দীক্ষিত। কিন্তু সময় ও অভিজ্ঞতা সব শিখিয়ে দিয়েছেন তাকে এই বলেই বক্তব্য শেষ করেন তিনি।