আম্বানি পরিবারের ব্যাপারে আজকের দিনে জানেন না এমন একটা মানুষকেও খুঁজে পাওয়া যাবেনা ভারতে। গোটা বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় এখন মুকেশ আম্বানির নাম একেবারে জ্বলজ্বল করছে রীতিমতো। ধীরুভাই আম্বানির সময় থেকে এই আম্বানি পরিবারের ব্যবসায়ী পরিবার হিসাবে নাম শুরু হলেও এই পরিবারের প্রকৃত নাম যশ খ্যাতি হয়েছে কিন্তু মুকেশ আম্বানির হাত ধরেই। গৌতম আদানির আদানি গ্রুপ অফ কোম্পানিজকে যদি সরিয়ে রাখা যায় তাহলে, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এখন ভারতের সবথেকে বড় কংগ্লোমারেট সংস্থা। রিলায়েন্স জিও থেকে শুরু করে রিলায়েন্স ট্রেন্ডস, ভিয়াকম ১৮, রিলায়েন্স ডিজিটাল, মুকেশ আম্বানির ব্যবসা এবং তার প্রতিপত্তির সীমা পরিসীমা নির্ধারণ মুখের কথা না।
তবে এই আম্বানি পরিবারে আরো একজন রয়েছেন যার কথা না বললেই না। তিনি হলেন মুকেশ আম্বানির ভ্রাতা অনিল আম্বানি। মুকেশ আম্বানি যতই সম্পত্তির অধিকারী হন না কেন, তার ভাই তার ছিটেফোঁটাও না। এর কারণ অবশ্য তার ব্যবসায়িক ক্ষতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে। একটা সময় তিনি মুকেশ আম্বানির থেকেও অনেক বেশি সম্পত্তির মালিক ছিলেন। যে সময়ে মুম্বাইয়ে এবং বৃহনমুম্বাই মিউনিসিপ্যাল এলাকায় রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের বিদ্যুতের রমরমা বাজার, সেই সময় অনিল আম্বানির পকেট রীতিমতো ফুল ফেপে উঠছে। তবে, তারপর তার জীবনে এমন একটা সময় আসে যাতে তিনি নিজের সমস্ত সম্পত্তি সমস্ত যশ খ্যাতি হারিয়ে বসেন। ‘ আজ যে রাজা কাল সে ফকির ‘ এটাই যেনো সত্যি হয়ে যায় অনিল আম্বানির জন্য।
তবে, স্বামীর কঠিন পরিস্থিতিতেও অনিল আম্বানির স্ত্রী কিন্তু তাকে কোনোভাবেই ছেড়ে যেতে রাজি নন। বরং, তার পাশে দাড়িয়ে সমস্ত সমস্যা মোকাবিলা করার চেষ্টাই করেন তার স্ত্রী টিনা আম্বানি। সম্প্রতি তাকে নিয়েই একটি খবর সামনে এসেছে, যা সকলকেই দিয়েছে চমকে। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন অনিল আম্বানির সঙ্গে বিয়ে হওয়ার আগে টিনা আম্বানি বলিউডের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন। সত্তরের দশকের শেষের দিকে একজন যুবতী এবং লাস্যময়ী অভিনেত্রী হিসেবে টিনা আম্বানি ওরফে টিনা মুনিমের বেশ খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল। অন্যদিকে, সেই সময় অনিল আম্বানিরও জনপ্রিয়তা এবং খ্যাতি যশ ছিল চরমে। তাই সেই সময়ে অনিলের প্রেমে পড়ে তাকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন টিনা। তবে, আপনারা কি জানেন, বিয়ের আগে বলিউডের অন্যান্য তারকা সুপারস্টারদের সঙ্গে ছিল বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। আজকে টিনা মুনীমের সেই সমস্ত সম্পর্ক নিয়েই হবে আলোচনা যে তালিকায় রয়েছেন রাজেশ খান্না থেকে শুরু করে সঞ্জয় দত্ত অনেকেই।
সত্তরের দশকের শেষের দিকে যখন বলিউড একেবারে নিজের শিখরে সেই সময়ে সুনীল দত্তের ছেলে সঞ্জয় দত্ত এন্ট্রি নিলেন ফিল্মি দুনিয়ায়। রকি ছবিতে তার স্টাইল স্টেটমেন্ট দেখে সেই সময়ে ভারতের নারীমন ফিদা। আর সেই সময়ই সঞ্জয় দত্তের স্টাইল এবং তার পার্সোনালিটি দেখে তার প্রেমে পড়েন টিনা মুনিম। যদিও এই রকি ছবিতে তিনিই ছিলেন সঞ্জয়ের সহ অভিনেত্রী, তাই তাদের সম্পর্ক তৈরি হতে বেশি সময় লাগেনি। কিন্তু ড্রাগ এবং গাঁজার নেশায় সারাদিন চুর হয়ে থাকা সঞ্জয়ের সঙ্গে খুব একটা বেশিদিন প্রেম চালাতে পারলেন না টিনা। বাড়ির চাপেই হোক কিংবা সঞ্জয়ের অভ্যাস, তাকে খুব কম দিনের মধ্যেই ছেড়ে দিতে বাধ্য হলেন টিনা মুনিম।
এর কিছু বছর পরই টিনার জীবনে আসেন আরো এক পুরুষ, এবং তিনি হলেন বলিউডের প্রথম সুপারস্টার রাজেশ খান্না। স্ত্রী ডিম্পল কাপাদিয়ার সঙ্গে রাজেশ খান্নার সম্পর্ক কোনোদিনই তেমন একটা ভালো ছিলনা। আর সেই সময় থেকেই সেই সম্পর্কে তিক্ততা আসতে শুরু করে। আর সেই সময়েই রাজেশের পরিচয় হয় অভিনেত্রী টিনার সাথে। তারপর বন্ধুত্ব এবং বন্ধুত্ব থেকে প্রেমের পর্যায়ে আসতে খুব একটা সময় লাগেনি তাদের দুজনের। তবে হ্যাঁ, এই সম্পর্কটাও খুব একটা বেশিদিন টেকেনি। টিনা মুনিমের সঙ্গে সম্পর্কে থাকা সত্বেও তিনি অন্যান্য অভিনেত্রীদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যান। তাই খুব কম দিনের মধ্যেই এই সম্পর্ক ভেঙে যায়। আর এরপরই টিনার সঙ্গে সম্পর্ক হয় অনিল আম্বানির, যে সম্পর্ক পরবর্তীতে বিয়ের রূপ নেয়।