স্কুবা ডাইভিং (Scuba Diving) বা জলের নিচে মডেলিং (Modeling) অথবা নাচ (Dance) সোশ্যাল মিডিয়ায় Social Media) এসব তো এখন দেখাই যায়, কিন্তু জলের নিচে বিয়ে! হ্যাঁ! এরকমই হঠাৎ সিদ্ধান্ত পাত্র-পাত্রীর। পাত্র ভি. চিন্নাদুরাই ও পাত্রী এস. স্বেথা, দুজনেই পেশায় ইঞ্জিনিয়ার (Engineer)। তামিলনাড়ুর (Tamilnadu) এই পাত্র-পাত্রী বিয়ে সারলেন জলের ৬০ ফুট নিচে। শাড়ি, গয়না, ধুতি, পাঞ্জাবি পরে, সাধারণ বিয়ের মতই সমস্ত রীতিনীতি নিয়ম আচার মেনে লগ্নের মধ্যেই সাতপাকে ঘুরলেন দুজন। জলের এত গভীরে যাতে বিপদ-আপদ না হয়, তার জন্য ছিল সাহায্যকারী টিমও।
ভি. চিন্নাদুরাই বরাবরই সাঁতার কাটতে ভালোবাসতেন, কিন্তু দক্ষ ছিলেন না এস. স্বেথা, ফলে বিয়ের আগে সুইমিং পুলে প্রায় বেশ কিছুদিন রীতিমতো সাঁতার শিখতে হয় তাকে। পাত্র ভি. চিন্নাদুরাই যখন জলের প্রায় ষাট ফুট গভীরে নেমে বিয়ের প্রস্তাব রাখেন দুই পরিবারের সামনে, হতভম্ব হয়ে যায় সকলেই। জলের নিচে বিয়ের প্রস্তাব! রাজবাড়ীতে বিয়ে, পাহাড়ে বিয়ে, এমনকি সমুদ্রের ধারেও বিয়ে করার ঘটনা দেখা যায় কিন্তু জলের মধ্যে বিয়ে! তাও আবার ষাট ফুট গভীরে! বিয়ে করার এরকম ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না এবং যথেষ্টই আশ্চর্যকর লাগলেও এই নতুন চিন্তাধারার সিদ্ধান্তকে দুই পরিবারই মেনে নেন এবং আশ্চর্যকর এই ঘটনার সাক্ষীও হন তারা।
ভি. চিন্নাদুরাই এর এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্দেশ্যে কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন , “বিয়ে সবার জীবনেই খুব মূল্যবান একটা স্মৃতি। আমি আমার বিয়ের মাধ্যমে সমাজকে, পরিবেশ বিশেষ করে সমুদ্রকে দূষণ মুক্ত রাখার মেসেজ দিতে চাই, প্লাস্টিক ও অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ ফেলে দূষিত করা এই সমুদ্র হতে পারে এক অবিস্মরণীয় ঘটনায় উৎস, সমুদ্রকে যাতে দূষিত না করা হয় সেই মেসেজটাই দেওয়ার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া।”
আজকালকার এই যান্ত্রিক, দূষিত পৃথিবীতে মানুষ যে এখনো পরিবেশকে ভালোবাসতে জানে, এবং এখনও নতুন কিছু করতে পিছুপা হয়না, সেটি তামিলনাড়ুর এই ঘটনা বড় উদাহরণ হিসেবে থেকে যাবে। যেখানে হাজার সম্পর্ক ভাঙার ঘটনা প্রায়শই দেখা যায়, সেখানে বিয়ের মত জীবনে মূল্যবান দিনটিকে, পরিবেশকে সাক্ষী রেখে, একে অপরকে এত সুন্দর উপহার দিয়ে আরো স্মরণীয় করার ঘটনা যেন আধারের মধ্যে দ্বীপ জ্বালার মত।