বলিউডবিনোদন

‘মহারাষ্ট্র ভূষণ’ পেতে চলেছেন আশা ভোঁসলে, ঘোষণা করল মহারাষ্ট্র সরকার

Advertisement

কিংবদন্তি আশা ভোঁসলে (Asha bhonsle) মানেই পঞ্চাশের দশক থেকে একটানা এখনও অবধি অবলীলায় সঙ্গীতমুখর এক কন্ঠ। আশার সৌন্দর্য ও কন্ঠের জাদুতে বারবার মুগ্ধ হয়েছেন আপামর ভারতবাসী। লতা মঙ্গেশকর (lata mangeshkar) ও আশা ভোঁসলের ঠান্ডা লড়াইয়ের কথা কারও অবিদিত নয়। আশার ছকভাঙা জীবন বরাবর লতার না-পসন্দ। লতা পছন্দ করতেন না বোন আশার গায়কী। সেই সময় গণপতরাও ভোঁসলে (Ganpatrao bhonsle) ছিলেন লতার ম্যানেজার। লতাকে বড় শো ও বড় সুরকারদের কাছে পৌঁছতে সাহায্য করতেন গণপতরাও। লতার প্রতিভার আলোয় ক্রমশ চাপা পড়ে যাচ্ছিলেন আশা। তাই আর উপায় না দেখে পূর্বেই বিবাহিত তাঁর দ্বিগুণ বয়সী গণপতরাওকে বিয়ে করে নেন তিনি। আশা ভেবেছিলেন, গণপতরাও হয়তো তাঁকে গানের জগতে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবেন। কিন্তু আদতে তা হয়নি। গণপতরাও-এর সন্তানের মা হয়ে আশা তলিয়ে যেতে থাকেন নৈরাশ‍্যে। কিন্তু তা বেশিদিন রইল না। সঙ্গীতের প্রতি টানে সংসার ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন আশা। লতার কাছে ফিরে যাননি তিনি। নিজেই ধীরে ধীরে নিজের পরিচয় গড়ে তুলেছিলেন আশা। ব্রেক পেয়েছিলেন ও. পি.নাইয়ার (o.p.naiyaar)-এর মতো সঙ্গীত পরিচালকদের কাছ থেকে।

একসময় বয়সে অনেকটাই ছোট রাহুল দেব বর্মন (Rahul Dev barman)-কে বিয়ে করেন আশা। তখন আশা খ্যাতির শীর্ষে। ‘জওয়ানী জানেমন’, ‘ঝুমকা গিরা রে’, ‘পর্দে মে রহনে দো’-এর জাদুতে ভেসে যাচ্ছেন ভারতবাসী। আশা ভোঁসলের অনুরাগীর সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বাপ্পী লাহিড়ি (Bappi lahiri)-এর হাত ধরে ভারতে পরিচিতি লাভ করেছে ‘ডিস্কো বিটস’। সেই সময় আশা হয়ে উঠেছিলেন সুরকারদের প্রথম পছন্দ। রাহুল দেব বর্মনের বহু সুরও আশার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। রাহুল দেব বর্মনের মৃত্যুর পরেও আশা নিজের গান চালিয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময় আশার মেয়ে বর্ষা (Barsha mangeshkar) মায়ের সঙ্গে মঞ্চে গান গাইতেন। কিন্তু মায়ের অমতে বিয়ে করে সঙ্গীতজগত থেকে সরে যান বর্ষা। সেই বিয়ে সুখের হয়নি। বিবাহ বিচ্ছেদ করে ফিরে এসেছিলেন বর্ষা। কিন্তু বর্ষা একসময় বিবাহিত ফটোগ্রাফার গৌতম রাজাধ‍্যক্ষ (Gautam Rajadhyaksha)-এর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে বর্ষা নিজের ভুল বুঝতে পেরে ডিপ্রেশনের শিকার হয়েছিলেন। আশা তাঁর মেয়ে বর্ষাকে বারবার ডিপ্রেশন থেকে বার করতে চেয়েও পারেননি। কয়েক বছর আগে নিজের রিভলবারের গুলিতে আত্মহত্যা করেন বর্ষা। বর্ষার মৃত্যু আশাকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। সঙ্গীত জগত থেকে ক্রমশ নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন আশা। কিন্তু ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর (Hridaynath mangeshkar) আশাকে আবারও গান শুরু করতে উৎসাহ দেন। তাঁর উৎসাহেই আবারও শুরু হয় আশার পথচলা।

আশা ভোঁসলে বা সবার নমস্য ‘আশা তাঈ’ এমন একজন শিল্পী যাঁর মনমাতানো সঙ্গীতের পিছনে রয়েছে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত। তাঁর ঝকঝকে সাজের আড়ালে রয়েছেন এক নিঃসঙ্গ মা, এক অবহেলিত বোন। সঙ্গীত জগতে আশা তাঈ-এর অপরিসীম অবদানের কথা মনে রেখে মহারাষ্ট্র সরকার সম্প্রতি আশাকে মহারাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘মহারাষ্ট্র ভূষণ’-এ ভূষিত করার ঘোষণা করেছেন। এর আগে এই সম্মান পেয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে (Udhdhab thakre) এই ঘোষণা করার পরেই আশা টুইট করে মহারাষ্ট্র সরকারের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

Related Articles

Back to top button