শ্রেয়া চ্যাটার্জি – গোটা বিশ্ব কার্যত গৃহবন্দি। করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে স্কুল-কলেজ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে একটু মিড-ডে-মিল পায়, তারাই ২১ দিনের ছুটির জন্য স্কুলে যেতে পারছে না, তা বলে কি তাদের খাওয়া বন্ধ থাকবে? না, এমনটা ঘোষণা করেছেন আসাম সরকার। প্রায় 40 লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীকে মিড-ডে-মিল দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে অসম সরকার। ১৪ বছরের নিচে ছাত্রছাত্রীরা এই সুবিধা পাবেন। আসামের চিপ সেক্রেটারি সঞ্জয় কুমার জানান কোনো ছাত্রছাত্রীকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমোতে যেতে হবে না। তাদের মিড-ডে-মিল তাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে।
সেক্রেটারি জানান এটি চালু করা হয়েছে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। তবে লকডাউন এর সময়সীমা বাড়ানোর ফলে এর সময়সীমা আরও বাড়ানো হবে, এমনটাই তিনি জানান। চিফ মিনিস্টার সর্বনন্দা সনোয়াল জানান, সরকারের তরফ থেকে অসাধারণ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পূর্বে কেরালা সরকার এই পদ্ধতিটি চালু করেছিলেন। বাচ্চাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল মিড ডে মিলের খাবার। চাল, ডাল, সবজি, ডিম এবং সপ্তাহে একবার ১৫০ লিটার করে দুধ পৌঁছে দেওয়া হয় ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে।
আসাম সরকারের এমন উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানাতে হয়। এমন এমন জায়গা আছে যেখানে একটু মিড ডে মিলের খাবার পাবে বলে বাচ্চারা স্কুলে পড়ে। এমন অনেক প্রত্যন্ত গ্রাম আছে যেখানে হয়তো এই বাচ্চাটি প্রথম তাদের জেনারেশনে স্কুলে যাচ্ছে। এতটাই দরিদ্র তারা। তাদের জন্য এটি সত্যিই খুব সুখবর। বাড়িতে থেকে যাতে কোনভাবেই খিদের জ্বালা সহ্য করতে না হয়, তাই আসাম সরকার এমন ব্যবস্থা করছে। অসাধারণ এই উদ্যোগ।
করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে যখন গোটা বিশ্ব কার্যত গৃহবন্দি, স্কুল কলেজ বন্ধ সেই মুহূর্তে বাচ্চারা কি করে স্কুল থেকে খাবার পাবে, এটি নিয়ে সত্যিই একটি চিন্তার বিস্ময় তৈরি হয়। কার্যত গৃহবন্দি যখন সমাজ, তাই বাড়িতে মা-বাবা ও যেতে পারছেন না কাজে। দিন আনা দিন খাওয়া এই মানুষগুলোর সন্তান হওয়ার জন্য এরা ছোটবেলা থেকেই অভাব কি জিনিস তারা জানে। বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরে সরকারি উদ্যোগে তারা হয়তো ওই এক বেলায় স্কুলে গিয়ে দুমুঠো ভাত পায়। কিন্তু কার্যত গোটা বিশ্ব যখন লকডাউন, তখন স্কুল বন্ধ হওয়ার ফলে তাদের খাওয়াটা কি বন্ধ হয়ে যাবে? এদিকে বন্ধ চারিদিক হওয়ায় বাবা-মা কাজে যেতে না পারায় ঘরের মজুত শস্য শেষের দিকে । তাই অসম সরকারের এমন উদ্যোগকে বাহবা বানা জানিয়ে পারা যায় না।